মশায় অতিষ্ঠ চট্টগ্রামবাসী, শুরু হলো ক্রাশ প্রোগ্রাম
চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা গত কয়েকমাস ধরে মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ। নগরবাসী বলছেন, মশার অত্যাচারে অবস্থা হয়ে উঠেছে অসহনীয়।
এই অবস্থায় নগরীর মশা নিধনে আজ শনিবার থেকে শুরু হয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ২০ দিনের ক্রাশ প্রোগ্রাম। দুপুর ৩টার দিকে মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী চান্দগাঁও থানা এলাকায় ক্রাশ প্রোগ্রামের উদ্বোধন করেন।
এর আগে মেয়র জানিয়েছেন, দায়িত্ব গ্রহণের পর হাতে নেওয়া ১০০ দিনের অগ্রাধিকার কার্যক্রমে তিনি মশক নিধনকে প্রাধান্য দিচ্ছেন।
‘আশা করি অচিরেই নগরবাসী মশার অত্যাচার থেকে পরিত্রাণ পাবে,’ বলেন মেয়র।
ক্রাশ প্রোগ্রাম ছাড়াও সারাবছর ধরেই নিয়মিত মশকনিধন কার্যক্রম চলবে বলেও জানান তিনি।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা বিভাগের উপপ্রধান মোরশেদুল আলম বলেন, মশার আবাসস্থল ধ্বংসে আজ থেকে ২০ দিনব্যপী ক্রাশ প্রোগ্রাম শুরু হয়েছে নগরীতে।
মেয়রের ১০০ দিনের অগ্রাধিকারমূলক কর্মসূচির অংশ হিসেবে ক্রাশ প্রোগ্রাম শুরু হয়েছে। করপোরেশন ২৩৩ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও ৫০ জন স্প্রে কর্মী চারটি দলে ভাগ হয়ে পর্যায়ক্রমে নগরের ৪১টি ওয়ার্ডে এ কার্যক্রম চালাবে বলে জানান তিনি।
মশায় অতিষ্ঠ নগরজীবন
শহরবাসী বলছেন, সন্ধ্যার পরপরই মশারীর ব্যবহার প্রায় বাধ্যতামূলক হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও দিনের বেলাতেও শান্তিমতো বাসায় থাকা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে।
‘রাতের বেলায় পড়াশোনা করা একরকম অসম্ভব হয়ে উঠেছে। সারাক্ষণ মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ আমরা,’ বলছিলেন চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা সম্মান তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী দীপা চৌধুরী।
চট্টগ্রাম শহরের রাহাত্তারপুল উজির আলী শাহ লেইনের বাসিন্দা দীপা আরও বলেন, ‘সূর্য ডোবার পরপরই মশারির মধ্যে ঢুকে যেতে হয়। বাসার কোথাও মশার যন্ত্রণায় বসা যায় না। মশার কয়েল, স্প্রে কিংবা মশা মারার ব্যাট অনেক কিছুই ব্যবহার করা হয়েছে কিন্তু কিছুতেই কিছু কাজ হচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের বাসার সামনের নর্দমাটি মাসের পর মাস পরিস্কার করা হয় না। ফলে পলিথিনসহ গৃহস্থালী বর্জ্য সেখানে জমে নর্দমার পানি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এখানে মশারা ডিম পারছে নিয়মিত।’
শহরের পশ্চিম বাকলিয়া ডি সি রোডের বাসিন্দা কামাল উদ্দিন বলেন, ‘নালা নর্দমাসহ আশেপাশের ঝোপঝাড় অপরিচ্ছন্ন অবস্থায় পরে আছে দীর্ঘদিন। আমি জানি না, সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা বিভাগ কী করে? গত ছয় মাস এলাকায় মশার ওষুধ স্প্রে করতে দেখা যায়নি তাদের।’
নগরীর শুলক বহর এলাকার বাসিন্দা তাপস বড়ুয়া বলেন, ‘মশার অত্যাচার একদিন দুইদিন হলে সহ্য করা যেত। গত কয়েকমাস ধরেই আমরা এই যন্ত্রণায় ভুগছি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক যাদব কুমার বিশ্বাস দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘মশা সাধারণত বদ্ধ জলাশয়ে ডিম পাড়ে। বাড়ির আশপাশে বিভিন্ন ঝোপঝাড়ে এরা দিনের বেলায় লুকিয়ে থাকে। তাই নিয়মিত নালা নর্দমাসহ আশপাশের ঝোপঝাড় পরিস্কার করতে হবে।’
Comments