‘কোথায় টেস্টে উঠেপড়ে লাগবে, সেখানে অন্য লিগে খেলতে চাইছে’

দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটে চরম এই বিধ্বস্ত অবস্থায় ক্রিকেটারদের কাছ থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর মরিয়া ভাব আশা করছিলেন বোর্ড প্রধান নাজমুল হাসান।
Nazmul Hasan & Shakib Al Hasan

টেস্টে একের পর এক বিপর্যয়। সাকিব আল হাসানের ব্যর্থতা এবং ভুল পরিকল্পনাতেই নবীন আফগানিস্তানের সঙ্গে ঘরের মাঠে হার। এরপর ভারত-পাকিস্তানে বাজেভাবে হেরে আসার হতাশার সঙ্গে খর্ব শক্তির ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছেও হোয়াইটওয়াশড হওয়া! দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটে চরম এই বিধ্বস্ত অবস্থায় ক্রিকেটারদের কাছ থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর মরিয়া ভাব আশা করছিলেন বোর্ড প্রধান নাজমুল হাসান। সেখানে সিনিয়র ক্রিকেটার সাকিব দেশের খেলা বাদ দিয়ে খেলতে চাইছেন আইপিএলে। তা মানতে বেশ কষ্ট হচ্ছে বিসিবি সভাপতির। তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন একটা খেলোয়াড়ের পেছনে বোর্ড ও দেশের বিনিয়োগের কথাও।

আগামী এপ্রিলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজ বাদ দিয়ে  ওই সময় আইপিএলে খেলতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সাকিব। ভারতে খেলতে যাওয়ার ব্যাপারে তার তীব্র অবস্থান দেখে বিসিবি আর জোরাজুরির দিকে যায়নি।

তবে সাকিবকে জোরাজুরি না করলেও বোর্ড প্রধান জানিয়েছেন, দেশের সফলতম ক্রিকেটারের এই সিদ্ধান্ত তার তাকে করেছে আহত। সোমবার বিসিবি কার্যালয়ে একটা খেলোয়াড়ের পেছনে বোর্ডের দীর্ঘমেয়াদী এবং বিশাল বিনিয়োগের কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি, ‘বিব্রত  ঠিক না মন খারাপ (সাকিবের সিদ্ধান্তে)। আমাকে যদি বলেন মন খারাপ। মনটা খারাপ কেন? দেখেন, একটা খেলোয়াড়ের পেছনে কম বিনিয়োগ করি না। বোর্ড ১০-১৫ বছরে ধরে যে বিনিয়োগ করে, এটা আপনাদের সবকিছু জানা আছে কিনা তাও জানি না। একটা তো হচ্ছে খেলাধুলা সংশ্লিষ্ট চুক্তি, আবার চুক্তির বাইরে ইনজুরি বা সবকিছু নিয়ে আমরা ওদের যে সুযোগ-সুবিধাট এখন দেই, সেটা আগে কখনও চিন্তাই করা যেত না।’

‘এই জায়গায় দল এরকম দুইটা টেস্ট ম্যাচ হারার পরে... এই দুইটা টেস্ট ম্যাচই না। আমরা টেস্ট ম্যাচ হেরেছি আফগানিস্তানের সঙ্গে, পাকিস্তানের সঙ্গে, ভারতের সঙ্গে। আমরা ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে নিজেদের মাটিতে পর পর দুই টেস্টে হারলাম । এরপরে কেউ যদি বলে আমি পরবর্তী টেস্টটা খেলব না... আমার ধারণা ছিল, সবাই উঠেপড়ে লাগবে, পরের টেস্টটা আমাদের জিততেই হবে।  সেই জায়গায় কেউ যদি মনে করে, এটা খেলবে না, অন্য একটা ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলবে, এরপর আর কিছু বলার থাকে না। কাজেই কাউকে আমরা আর জোর করে রাখব না।’

সিনিয়র কয়েকজন ক্রিকেটার ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই এতটা সাফল্য পাননি। ধারাবাহিক সফলতা পেতে তাদের শুরুতে লেগেছে বেশ কিছুটা সময়। বোর্ড সভাপতি মনে করিয়ে দিয়েছেন, তখন এই খেলোয়াড়দের সমর্থন দিয়ে গেছে বাংলাদেশ, ‘প্রথম ৬ বছর ওদের গড় ছিল ১২ থেকে ১৫। আমরা কি তাদের বাদ দিয়ে দিয়েছি? এরপর আরও সময় দিয়েছি, সুযোগ দিয়েছি। তারপর তারা এই জায়গায় এসেছে। যখন দেশের জন্য সেরাটা দেওয়ার সময়, সেই সময়টায় যদি… (সেটা তাদের ইচ্ছা)। এটা তাদের ইচ্ছা, আমরা একটা জিনিস দেখেছি, জোর করে খেলিয়ে লাভ নেই। খেলতে হবে দেখে খেলা, এটা হবে না।’

‘এরকম এতগুলো ম্যাচ হারার পরে, সামনে তো খেলোয়াড়দের, বিশেষ করে, সিনিয়রদের লক্ষ্য হওয়া উচিত, আমরা পরের ম্যাচটা জিতব। এটা না বলে যদি বলে, আমি খেলব না, তাও ব্যক্তিগত কারণে না... তাহলে একটা জিনিস পরিষ্কার। এদের দিয়ে খুব একটা বেশি কিছু করা যাবে বলে আমার মনে হয় না।’

সাকিবের এই সিদ্ধান্তের পর কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে বোর্ডও। এই সিরিজ খেলব, ওই সিরিজ খেলব না, এরকম করার আর জায়গা রাখতে চাইছেন না তারা। চুক্তি হবে এখন লম্বা সময়ের। কেউ জাতীয় দলে খেলতে না চাইলে চুক্তিতে সই করার আগেই জানাতে হবে। সেরকম হলে আর রাখা হবে না চুক্তিতে। দেশের হয়ে খেলতে অনিচ্ছুকদের ছাড়াই বাকিদের নিয়ে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।

Comments

The Daily Star  | English
interim government struggles with decision-making

Interim govt struggling on many fronts

The government on around a dozen occasions has backtracked on its decisions during its two months in office, casting doubts about its resolve.

13h ago