অস্ট্রেলিয়ায় ১৭ হাজার ৩০০ বছরের পুরোনো গুহাচিত্র আবিষ্কার
অস্ট্রেলিয়ায় ১৭ হাজার ৩০০ বছর আগের গুহাচিত্র আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। আজ মঙ্গলবার বিবিসি জানায়, দুই মিটার (৬ দশমিক ৫ ফুট) দীর্ঘ ক্যাঙ্গারুর চিত্রকর্মটি এখন পর্যন্ত দেশটিতে আবিষ্কার হওয়া সবচেয়ে পুরোনো গুহাচিত্র।
পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার কিম্বার্লি অঞ্চলে একটি গুহার উপরিভাগে (সিলিং) লাল রঙের গিরিমাটির উপরে আঁকা হয়েছিল গুহাচিত্রটি। ওই অঞ্চলটি আদিম গুহাচিত্রের জন্য পরিচিত।
রেডিওকার্বন-ডেটিং প্রযুক্তির সাহায্যে সেখানকার ভ্রমর জাতীয় পোকার বাসার বয়স নির্ধারণ করে গুহাচিত্রটির এ বয়স অনুমান করা হয়েছে। মঙ্গলবার নেচার হিউম্যান বিহেভিয়ার জার্নালে এই তথ্য জানানো হয়।
এ প্রযুক্তির পথিকৃৎ গবেষক ড্যামিয়েন ফিঞ্চ জানান, একটা গুহাচিত্রের উপরে ও নিচে পোকার বাসা পাওয়া বিরল ঘটনা। কিন্তু গবেষকদল দুই জায়গাতেই তা খুঁজে পায় এবং এতে চিত্রটির সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন বয়স নির্ধারণ করা সম্ভব হয়েছে।
মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ববিদ ড. ফিঞ্চ জানান, এগুলো সর্বোচ্চ ১৭ হাজার ৫০০ বছর থেকে ১৭ হাজার ১০০ বছর আগে তৈরি হয়েছিল বলে পরীক্ষার ফলাফলে পাওয়া গেছে। এতে, গুহাচিত্রটি আনুমানিক ১৭ হাজার ৩০০ বছর পুরোনো বলেই ধরে নেওয়া যেতে পারে।
বিজ্ঞানীরা জানান, এই ধারণা থেকেই এটিকে অস্ট্রেলিয়ার প্রাচীনতম গুহাচিত্র বলা হচ্ছে।
গবেষণার সহ-লেখক ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. সোভেন ওউজম্যান জানান, ক্যাঙ্গারুর ছবিগুলোর সঙ্গে অন্যান্য অঞ্চলের প্রাচীন শিল্পকর্মের মধ্যে যোগসূত্র থাকতে পারে।
তিনি বলেন, ‘এই প্রতীকী ক্যাঙ্গারুর ছবিটির সঙ্গে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দ্বীপপুঞ্জের প্রায় ৪০ হাজার বছরেরও বেশি সময় আগের গুহাচিত্রগুলোর মিল আছে। এটি একটি সাংস্কৃতিক যোগসূত্রের ইঙ্গিত দেয় এবং অস্ট্রেলিয়ায় যে এখনও অনেক পুরানো গুহাচিত্র অনাবিষ্কৃত থেকে গেছে সেটিরও জানান দেয়।’
এ বছরের শুরুর দিকে গবেষকরা ইন্দোনেশিয়ার সুলাওসি দ্বীপে বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন প্রাণির গুহা চিত্রকর্মটি পেয়েছিলেন। এটি ছিল ৪৫ হাজার বছরের পুরোনো।
এছাড়াও দক্ষিণ আফ্রিকাতে পাওয়া ৭৩ হাজার বছরের পুরোনো হ্যাশট্যাগের মতো একটি ডুডলকে প্রাচীনতম ছবি বলে মনে করা হয়।
বালংগরা আদিবাসী কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান মিসেস সিসি গোর-বার্চ জানান, আদিবাসী এবং অস্ট্রেলিয়ানদের জন্য ক্যাঙ্গারু গুহাচিত্র আবিষ্কার একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।
তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ যে দেশীয় জ্ঞান ও গল্পগুলো যেন হারিয়ে না যায় ও পরবর্তী প্রজন্মকে যেন এগুলো সম্পর্কে জানানো যায়।
Comments