নাইজেরিয়ার আবাসিক স্কুল থেকে ৩ শতাধিক মেয়েকে অপহরণ

উত্তর-পশ্চিম নাইজেরিয়ার একটি স্কুল থেকে ৩০০ জনেরও বেশি মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে। জানা গেছে, অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা রাতের বেলা আবাসিক স্কুলের ভেতর প্রবেশ করে। পরে তারা মেয়েদের কাছের একটি জঙ্গলে নিয়ে যায় বলে ধারণা করছে পুলিশ।
Nigeria Final.jpg
সহপাঠীদের অপহরণের খবরে বাকি শিক্ষার্থীরা শোকাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে। ছবি: এপি

উত্তর-পশ্চিম নাইজেরিয়ার একটি স্কুল থেকে ৩০০ জনেরও বেশি মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে। জানা গেছে, অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা রাতের বেলা আবাসিক স্কুলের ভেতর প্রবেশ করে। পরে তারা মেয়েদের কাছের একটি জঙ্গলে নিয়ে যায় বলে ধারণা করছে পুলিশ।

আজ শনিবার বিবিসি জানায়, জামফারা রাজ্যের জাঙ্গাবে শহরে শুক্রবার গভীর রাতে এই অপহরণের ঘটনা ঘটেছে।

সেখানকার এক শিক্ষক স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, রাত ১টার দিকে এক দল বন্দুকধারী পিক-আপ ও মোটরসাইকেল নিয়ে শহরের আবাসিক সরকারি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আসে। বন্দুকধারীদের মধ্যে কয়েকজন সরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর পোশাক পরে এসেছিল।

তবে কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী বিবিসিকে জানিয়েছেন, বন্দুকধারীরা পায়ে হেঁটে স্কুলে এসেছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ‘শতাধিক অজ্ঞাত বন্দুকধারী স্কুলে ঢুকেছিল। তারা স্কুলের গেট ভেঙে নিরাপত্তাকর্মীকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়ে। এরপর হোস্টেলের ভেতর যায়। তারা মেয়েদের ঘুম থেকে জাগিয়ে বলে যে, নামাজের সময় হয়েছে। এরপর সবাইকে জড়ো করার পর তাদের জঙ্গলের দিকে নিয়ে যায়। রাতে অনেক দূর থেকে মেয়েদের কান্নার স্বর ও বাতাসে গুলির শব্দ ভেসে আসছিল।’

এ খবর ছড়িয়ে পড়তেই শিক্ষার্থীদের বাবা-মা স্কুলের বাইরে জড়ো হন। অনেকেই মেয়ের সন্ধানে জঙ্গলের দিকে রওনা হয়েছেন।

একজন শিক্ষক বিবিসিকে জানিয়েছেন, স্কুলের ৪২১ জন মেয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে এখন কেবল ৫৫ জনের খোঁজ আমরা জানি।

বিবিসি জানায়, দেশটিতে গত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এটাই সবচেয়ে বড় গণ-অপহরণের ঘটনা। সশস্ত্র গ্রুপগুলো প্রায়ই সেখানে চাঁদা আদায়ের জন্য স্কুল শিক্ষার্থীদের অপহরণ করে থাকে।

নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুহাম্মাদু বুহারি এ অপহরণকে ‘অমানবিক এবং সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য’ বলে নিন্দা জানিয়েছেন।

তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এই প্রশাসন বিপুল পরিমাণ চাঁদার দাবিতে নিরীহ স্কুল শিক্ষার্থীদের টার্গেট করে এ ধরনের ব্ল্যাক মেইলের সঙ্গে কোনো আপোষ করবে না। আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য জিম্মিদের নিরাপদ, জীবিত ও অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা।’

বুহারি আরও জানান, এ ঘটনায় অভিযান চালাতে বিশাল বাহিনী মোতায়েন করা যেতে পারে। কিন্তু আশঙ্কা হলো, এখানে স্কুল শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে।

এর আগে, গত সপ্তাহে পার্শ্ববর্তী নাইজার প্রদেশ থেকে ২৭ শিক্ষার্থীসহ ৪২ জনকে অপহরণ করা হয়। তাদেরকে এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

২০১৪ সালে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় চিবুক শহর থেকে ২৭৬ মেয়ে স্কুল শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে জঙ্গি গোষ্ঠী বোকো হারাম। ওই ঘটনা বিশ্বের মনোযোগ আকর্ষণ করে। তবে সাম্প্রতিক সময়ের অপহরণগুলো মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশে করা হচ্ছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

শুক্রবারের অপহরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো গ্রুপ দায় স্বীকার করেনি।

Comments

The Daily Star  | English

Displaced bearing pad disrupted metro rail service: DMTCL official

Both local and Japanese workers and engineers were seen working to lift the pad back onto the pier

1h ago