‘মোদি-দিদি আসলে এক’ কলকাতা বিগ্রেড সমাবেশে কংগ্রেস-বামফ্রন্ট

বিধানসভা নির্বাচন ঘিরে পশ্চিমবঙ্গে জমজমাট হয়ে উঠেছে রাজনীতির মাঠ। জল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে কংগ্রেস-বামফ্রন্ট জোটে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের ফুরফুরা শরীফের আব্বাস সিদ্দিকীর নবগঠিত রাজনৈতিক দল ‘ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট’।
Congress and Left.jpg
বিধানসভা নির্বাচন ঘিরে কলকাতায় সংযুক্ত মোর্চার প্রথম বিগ্রেড সমাবেশ হয়েছে। ছবি: দ্য স্টেটসম্যান

বিধানসভা নির্বাচন ঘিরে পশ্চিমবঙ্গে জমজমাট হয়ে উঠেছে রাজনীতির মাঠ। জল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে কংগ্রেস-বামফ্রন্ট জোটে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের ফুরফুরা শরীফের আব্বাস সিদ্দিকীর নবগঠিত রাজনৈতিক দল ‘ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট’।

আজ রোববার কলকাতায় সংযুক্ত মোর্চার প্রথম বিগ্রেড সমাবেশ হয়েছে। ওই সমাবেশে কংগ্রেস, সিপিআইএমসহ অন্যান্য বাম সংগঠন এবং আব্বাস সিদ্দিকীর ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের কয়েক হাজার কর্মী যোগ দেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য স্টেটসম্যান জানায়, পশ্চিমবঙ্গের স্থানীয় গণমাধ্যমের খবর থেকে জানা গেছে, আজকের সমাবেশে সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি ‘মোদি-দিদি আসলে এক’ স্লোগান দিয়েছেন।

সীতারাম বলেন, ‘তৃণমূল-বিজেপি দুপক্ষই সমান। আমাদের লুটপাটের সরকার চাই না, জাত-পাতের সরকার চাই না। আড়াইশোর বেশি কৃষক মারা গেছেন, কিন্তু তাতেও মোদি সরকারের টনক নড়েনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘হ’ মানে হিন্দু, ‘ম’ মানে মুসলমান মিলে যখন ‘হাম’ হয় তখনই ভারত তৈরি হয়।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবরে বলা হয়েছে, আজকের সমাবেশে সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে সমাবেশের প্রচারণা নষ্টের অভিযোগ করেছেন।

তিনি বলেন, ‘বিজেপি-তৃণমূল মিলে ব্রিগেডের প্রচারণা নষ্ট করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু এই সমাবেশ ঐতিহাসিক। কোনো উস্কানিতে কান দিয়ে লাভ নেই। তারা পশ্চিমবঙ্গে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করছে।’

সমাবেশে পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, ‘ওরা চাইছে বাংলায় তৃণমূল-বিজেপি ছাড়া আর কিছু থাকবে না। আমরা বলছি আগামীতে তৃণমূল-বিজেপি নয়, শুধু সংযুক্ত মোর্চাই থাকবে।’

তৃণমূল নেত্রী মমতাকে হুঁশিয়ারি দিয়ে ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের নেতা ‘ভাইজান’ আব্বাস সিদ্দিকি বলেন, ‘বাংলার স্বাধীনতা কেড়েছেন মমতা, আমরা তাকে উৎখাত করবই।’

আজকের সমাবেশে পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি যোগ দিতে পারেননি। এক বিবৃতিতে তিনি সমাবেশে যোগ দিতে না পারায় দুঃখপ্রকাশ করেন। তবে, সহযোদ্ধাদের প্রতি সংহতি জানান তিনি।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানায়, বামফ্রন্ট-কংগ্রেস জোটের ব্রিগেড সমাবেশে যোগ দিতে আজ সকাল থেকেই পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নেতা-কর্মীরা কলকাতার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন।

এ বছর ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হতে যাচ্ছে আগামী ২৭ মার্চ থেকে। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে এবার আট দফায় ভোটগ্রহণ চলবে। আগামী ২৯ এপ্রিল ভোটগ্রহণ শেষ হবে এবং ফল প্রকাশ হবে ২ মে।

ব্যতিক্রমী প্রচারণায় বামজোট

গত এক সপ্তাহ ধরে বিগ্রেড সমাবেশের প্রচারণার জন্য তৈরি করা বামজোটের প্যারোডি গান ‘টুম্পা সোনা’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। গানটিতে মোদি সরকার ও পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূলের দুর্নীতি ও অনিয়মের সমালোচনা করা হয়েছে।

এর আগে, ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ কিংবা ‘ফেরাতে হাল ফিরুক লাল’ স্লোগানে নির্বাচনী প্রচারণা চালালেও বিগ্রেড সমাবেশের জন্য নতুন এই প্যারোডি গানই বেছে নিয়েছে বামফ্রন্ট।

রোববার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিগ্রেড সমাবেশের বেশ কয়েকটি ভিডিওতে দেখা গেছে, ওই প্যারোডি গান গাইতে গাইতেই সমর্থকরা বিগ্রেডে যাচ্ছেন। তাদের গলায় ছিল ‘এসে গেছি টুম্পা’ লেখা প্ল্যাকার্ড।

এবার পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে ‘খেলা হবে’, ‘পিসি যাও’র পাশাপাশি অন্যতম জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে সিপিএমের প্যারোডি ‘টুম্পা সোনা’।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

7h ago