পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাদের ছেড়ে আসা ক্যাম্পে পুলিশ মোতায়েন হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর ছেড়ে আসা ক্যাম্পগুলোতে পুলিশ মোতায়েন করা হবে।
তিনি বলেন, ‘ওই অঞ্চলে শান্তি ফিরিয়ে আনতে শান্তিচুক্তির আওতায় সরকার এ ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে।’
গতকাল রোববার পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমার সঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে...। এ কারণে আমরা সেখানকার ক্যাম্পগুলোতে পুলিশ মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
দুই দশকের বিদ্রোহ ও অশান্তির অবসান ঘটাতে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মধ্যে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গতকাল বলেন, ‘তিন পার্বত্য জেলায় মাঝে মধ্যে রক্তক্ষরণ হচ্ছে, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেই চলেছে। এজন্য প্রধানমন্ত্রী আমাদের নির্দেশনা দিয়েছিলেন, এ জায়গাটায় লক্ষ্য রাখতে।’
তিনি বলেন, ‘একজন অতিরিক্ত সচিবের মাধ্যমে তিনটি জেলায় কোথায় কী হচ্ছে তার একটি প্রতিবেদন করা হয়েছে। প্রতিবেদনে কিছু সুপারিশও ছিল।’
‘আমাদের যত স্টেকহোল্ডার ছিল তাদের সবার সঙ্গে আলাপ করেছি। একইসঙ্গে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার্থে যারা বসেছিলেন, সবার সঙ্গে আমরা বসেছি। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে মন্ত্রী, এমপি সবার সঙ্গে আলোচনা করেছি’, যোগ করেন তিনি।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘এরপর আমরা সিদ্ধান্তে এসেছি, সেখানে একটি শান্তিচুক্তি হয়েছিল। সে চুক্তি অনুযায়ী কিছু কিছু প্রস্তাব বাস্তবায়ন হয়েছে। আবার কিছু কিছু বাস্তবায়ন হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘সে বিষয়ে সন্তু লারমা আমাদের বলেছেন- তিনি আমাদের সব ধরনের সহযোগিতা করবেন।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যে জিনিসটা চাচ্ছি, পার্বত্য জেলার শান্তিচুক্তি রক্ষার্থে সেনাবাহিনী যে ক্যাম্প স্থাপন করেছিল সেগুলো তারা ছেড়ে আসছে। ক্যাম্প ছেড়ে এলেও আমাদের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা করতে হবে। সেজন্যই সে ক্যাম্পে আর্মির বদলে পুলিশ মোতায়েন করার জন্য একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সে বিষয় সন্তু লারমাকে আমরা জানিয়েছি। আমরা এ বিষয় নিয়ে রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে বহু মিটিং করেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই প্রধানমন্ত্রীর দিক-নির্দেশনায় অন্য যে কয়টি জেলা যেভাবে চলছে পার্বত্য চট্টগ্রামের এই তিনটি জেলা যেন একই পদ্ধতিতে চলে। শুধু শান্তি-শৃঙ্খলা নয়, উন্নয়নসহ সব কিছু। এজন্যই সন্তু লারমাকে আমি বিশেষভাবে দাওয়াত দিয়েছিলাম, তিনি এসেছিলেন। তার সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। তিনি সব ধরনের সহযোগিতা করবেন। তিনিও অনেক বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন, সেগুলো নিয়ে আমরা আবারও বসব।’
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘আমরা এ তিন জেলায় আধুনিক পুলিশ মোতায়েন করব, যাতে সেখানে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় থাকে।’
তিনি আরও বলেন, ‘চাঁদাবাজির বিষয়ে আমরা সন্তু লারমার সঙ্গে আলোচনা করেছি। সেখানে বলেছি পাহাড়ে খুন-খারাপি শুধু নয়, চাঁদাবাজিও হচ্ছে। সব বিষয়ে সহযোগিতার ঐক্যমত্য প্রকাশ করেছেন সন্তু লারমা।’
Comments