আগাম তরমুজে কৃষকের হাসি
পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় সাগরপাড়ে আগাম জাতের তরমুজ চাষ করছেন মৌডুবি ইউনিয়নের জাহাজামারা গ্রামের কৃষকরা। আবহওয়া অনুকূলে থাকায় এবার তরমুজের উৎপাদন ভালো হয়েছে, বিক্রিও হচ্ছে প্রত্যাশিত দামে।
ওই গ্রামের বাসিন্দা ফেরদৌস প্যাদা (৪৫) ও তার স্ত্রী জুলেখা বেগম (৪০) দুই একর জমিতে তরমুজ চাষ করছেন। তারা প্রত্যাশা করছেন, প্রায় পাঁচ লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করতে পারবেন।
জুলেখা বেগম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, এনজিও এবং প্রতিবেশীদের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছি। শ্রমিক রাখার সামর্থ না থাকায় নিজেরাই দিন-রাত পরিচর্যা করছি। মিষ্টিপানি সংরক্ষণের জন্য বালু-মাটি কেটে গভীর কুয়া তৈরি করেছি।
তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে তরমুজ বিক্রি শুরু হয়েছে। প্রতি পিস তরমুজ ২৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আশা করি পাঁচ লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করতে পারবো।
জাহাজামারা গ্রামের ২০ জন কৃষক বঙ্গোপসাগরেরপাড়ে আগাম তরমুজ চাষ করছেন। রাঙ্গাবালী উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, এ বছর প্রায় ২০০ হেক্টর জমিতে আগাম তরমুজ চাষ হয়েছে।
উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, পটুয়াখালীর কৃষকরা আমন চাষের ওপর বেশি নির্ভরশীল। সাধারণত আমন ধান ঘরে তোলার পরে জানুয়ারি মাসে তরমুজ চাষ শুরু হয়। এপ্রিল মাসে তরমুজ বিক্রি শুরু হয়। জাহাজমারা গ্রামের কৃষকরা ডিসেম্বরেই আগাম তরমুজ চাষ শুরু করেছে। ফলন ভালো হওয়ায় দামও ভালো পাচ্ছেন কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন, রাঙ্গাবালী উপজেলায় এ বছর সাত হাজার ৬৩০ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হচ্ছে। তিন লাখ মেট্রিক টন তরমুজ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কৃষকরা তরমুজ থেকে ৩০ কোটি টাকা টাকা আয় করতে পারবেন।
জাহাজমারা গ্রামের কৃষক ফারুক হোসেন বলেন, ‘আমি পাঁচ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। এতে দুই লাখ টাকা খরচ হয়েছে। ইতোমধ্যে ৮৪ হাজার টাকায় তিন শ পিস তরমুজ বিক্রি হয়েছে। আরও প্রায় চার লাখ টাকার তরমুজ জমিতে আছে।
আরেক কৃষক সোহাগ প্যাদা বলেন, ‘আগাম তরমুজ চাষে সেচ দিতে সমস্যা হচ্ছে। কিছু গাছ মরে গেছে। তবে চাহিদা বেশি থাকায় লাভ হচ্ছে।’
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘কূপ খনন করেও পানি সমস্যার সমাধান করা কঠিন হচ্ছে। দিনে প্রখর রোদ থাকে বলে এ অঞ্চলের তরমুজ খুবই সুস্বাদু হয়।’
Comments