৬ বলে ৬ ছক্কা মেরে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে জেতালেন পোলার্ড

Kieron Pollard
ছবি: ক্রিকেট উইন্ডিজ টুইটার

আকিলা ধনঞ্জয়া নিজেকে কি বলে সান্ত্বনা দেবেন বোঝা মুশকিল। ইনিংসের চতুর্থ আর নিজের দ্বিতীয় ওভারে এভিন লুইস, ক্রিস গেইল আর নিকোলাস পুরানকে পর পর আউট হ্যাটট্রিক করে ফেলেছিলেন। সেই আনন্দ যে তছনছ খানিক পরই। এরপরের ওভারে কাইরন পোলার্ড তাকে মেরে দেন ৬ ছক্কা। যুবরাজ সিংয়ের পর আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে যা মাত্র দ্বিতীয় নজির। এরপর আর ম্যাচে থাকেনি শ্রীলঙ্কা।

বৃহস্পতিবার অ্যান্টিগায় ঘটনাবহুল প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৪৪ বল হাতে রেখে শ্রীলঙ্কাকে ৪ উইকেট হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তিন ম্যাচ সিরিজে এগিয়ে গেছে ১-০ ব্যবধানে।

পুরো ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসটাই উত্তাল-পাতা,  ঘটনায় জম্পেশ। টস জিতে শ্রীলঙ্কাকে আগে ব্যাট করতে দিয়েছিল তারা। নিরোশান ডিলভেলা আর পাথুম নিশাকার ব্যাটে কেবল ১৩১ রান করতে পারে সফরকারীরা।

১৩২ রানের সহজ লক্ষ্য ব্যাট করার জন্য দারুণ উইকেটে অনায়াসেই তুলে নেওয়ার কথা স্বাগতিকদের। সেই পথে লেন্ডল সিমন্স আর এভিন লুইস মিলে শুরু করেন বিস্ফোরণ। চার-ছয়ের বৃষ্টিতে লঙ্কানদের করে দেন এলোমেলো। ওপেনিং জুটিতেই ম্যাচ অনেকটা একপেশে হয়ে যাওয়ার অবস্থা তৈরি হয়।

মাত্র ৩ ওভারেই ৫০ পেরিয়ে যায় দলের রান। এরপরই আকিলার ওই ওভার। চতুর্থ ওভারের। দ্বিতীয় বলে লুইস ক্যাচ দেন গুনাথিলেকাকে। আইপিএলের পর জাতীয় দলের হয়েও তিনে খেলতে নামা গেইল প্রথম বলেই হয়ে যান এলবিডব্লিউ। চারে নামা পুরান এসেই ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে। হ্যাটট্রিকের আনন্দে মাতোয়ারা তখন ধনঞ্জয়া। ম্যাচে ফেরায় স্বস্তি দলেরও।

কে জানত সেই স্বস্তি খানিক পরই রূপ নেবে চরম হতাশায়। ১৫ বলে ২৮ করা আগ্রাসী সিমন্সকে পরের ওভারে ছেঁটে ফেলেছিলেন ওয়াইন্দু হাসারাঙ্গা। বিনা উইকেটে ৫২ থেকে ৪ উইকেটে ৬২ রানে পরিণত হয়েছিল ক্যারিবিয়ানরা।

পাওয়ার প্লের শেষ আর ধনঞ্জয়ার তৃতীয় ওভারে পোয়ার্ড লং অন দিয়ে মারেন প্রথম ছয়, সোজা পরেরটা মেরে দেন একদম সাইটস্ক্রিনে, তিন নম্বরটা উড়ান লং অফ দিয়ে। চার নম্বরটা স্লগ সুইপে পাঠিয়ে দেন মিড উইকেট দিয়ে। পঞ্চম ছয় পেছনে সরে গায়ের জোরে বোলারের মাথার উপর দিয়ে পাঠান ছক্কায়। শেষটা ডিপ মিড উইকেট দিয়ে উড়িয়ে তিনি বসেন যুবরাজের পাশে। যেখানে ২০১২ সালের পর একা ছিল যুবরাজ। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অবশ্য ওভারে ছয় ছক্কা আছে আরেকজনের। ওয়ানডেতে তা করে দেখিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার হার্শেল গিবস।  

ঘটনার শেষ নয় এখানেই। পরের ওভারে অধিনায়ক পোলার্ড ও ফ্যাবিয়ান অ্যালানকে তুলে নেন হাসারাঙ্গা। রেকর্ডময় ইনিংসে মাত্র ১১ বলে ৩৮ করে যান তিনি।

১০১ রানে ৬ উইকেট হারালেও বাকি কাজটা শেষ করতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি জেসন হোল্ডারের। ওয়েস্ট ইন্ডিজের টেস্ট অধিনায়ক ২৪ বলে ২৯ করে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন।

এর লগে লঙ্কানদের ইনিংস এগোয় খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। মাত্র ৪ রান করে দলের ২০ রানে অভিষিক্ত কেভিন সিনক্লিয়ারের বলে আউট হন দাসুন গুনাথিলেকা। দ্বিতীয় উইকেটে ডিকভেলা-নিশাকা মিলে দলকে পথে এনেছিলেন। ২৯ বলে ৩৩ করা ডিকভেলাকে ফিরিয়ে তাদের ৫১ রানের জুটি ভাঙ্গেন হোল্ডার। ৩৪ বলে ৩৯ করা নিশাকাকে খানিক পর তুলে নেন অ্যালান। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস ফেরেন ৯ বছর পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরা ফিদেল অ্যাডওয়ার্ডসের বলে।

দীনেশ চান্দিমাল আর বিপদজনক থিসারা পেরেরাকে তুলে নে অবেদ ম্যাককয়। হাসারাঙ্গা, অ্যাসেন বান্দারা মিলে শেষ দিকে কিছু রান যোগ করেন। কিন্তু তাতে লড়াইয়ের পূঁজি পাওয়া হয়নি সফরকারীদের।

 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

শ্রীলঙ্কা: ২০ ওভারে ১৩১/৯ (ডিকভেলা ৩৩, গুনাথিলেকা ৪, নিশাকা ৩৯, চান্দিমাল ১১, ম্যাথিউস ৫, থিসারা ১, হাসারাঙ্গা ১২, বান্দারা ১০, ধনঞ্জয়া ৯*, চামিরা ২ ; সিনক্লিয়ার ১/২৬, এডওয়ার্ডস ১/২৯, হোল্ডার ১/১৯, ম্যাককয় ২/২৫, ব্র্যাভো ১/২৬, অ্যালান ১/৪)

ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১৩.১  ১৩৪/৬  (সিমন্স ২৬, লুইস ২৮, গেইল ০, পুরান ০, পোলার্ড ৩৮, হোল্ডার ২৯*, অ্যালেন ০, ব্র্যাভো ৪* ; ম্যাথিউস ০/১৯, ধনঞ্জয়া ৩/৬২, চামিরা ০/২৯, হাসারাঙ্গা ৩/১২, বান্দারা ০/২, প্রদিপ ০/৬)

ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৪ উইকেটে জয়ী।

ম্যাচ সেরা: কাইরন পোলার্ড।

সিরিজ: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে।

Comments

The Daily Star  | English

Ishraque must be sworn in or tougher movement will follow: Salahuddin

"We have always cooperated with this government. But that doesn't mean we've handed you a blank cheque"

21m ago