ওরাল আলসার বা মুখে ঘা হলে করণীয়
ওরাল আলসার বা মুখে ক্ষত বিভিন্ন কারণে হতে পারে। সবচেয়ে বেশি দেখা যাওয়া ওরাল আলসারের মধ্যে একটি হলো অ্যাপথাস আলসার, আর অন্যটি কোল্ড সোর (জ্বর ঠোসা) যা হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাসের কারণে হয়ে থাকে। আলসার যখন তীব্র বেদনাদায়ক হয় তখন অনেক সময় তা ভুলবশত দাঁতের ব্যথা বলে মনে হতে পারে।
ওরাল আলসারের কারণ
সাধারণত মানসিক চাপ, হরমোনের পরিবর্তন, মাসিকের সমস্যা, খাদ্যজনিত এলার্জি, ক্ষুদ্রান্ত্রের রোগ, ভিটামিন বি ১২, আয়রন বা ফলিক এসিডের ঘাটতির কারণে মুখে অ্যাপথাস আলসার দেখা দিতে পারে।
কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, ব্যাকটেরিয়া,ভাইরাস সংক্রমণ বা ফাঙ্গাল সংক্রমণ, রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার ত্রুটি, কেমোথেরাপি ও এইচআইভি সংক্রমণ রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে অনেক কমিয়ে দেয়। এসবের কারণেও মুখে আলসার দেখা দিতে পারে।
দাঁতের কোনো অংশ যদি ধারালো থাকে তাহলে সেখান থেকেও ট্রমা বা আঘাতজনিত ওরাল আলসার হতে পারে। কিছু দীর্ঘস্থায়ী রোগ— যেমন, ওরাল লাইকেন প্ল্যানাস, অটোইমিউন ডিজিজ ও মুখে ক্যানসার হলেও ওরাল আলসার বা মুখে ঘা দেখা দিতে পারে।
চিকিৎসা
ওরাল আলসারের ক্ষেত্রে রোগের কারণ বের করে চিকিৎসা দিতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমের প্রয়োজন। পাশাপাশি মানসিক চাপ কমানো গুরুত্বপূর্ণ। রোগীর খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনতে হবে। দীর্ঘ দিন সিগারেট, পান-সুপারি, জর্দার মিশ্রণ, মদ্য পান করার ফলে মুখে ক্যানসার হতে পারে।
যদি তিন সপ্তাহের বেশি মুখের ঘা স্থায়ী হয় তবে জরুরিভিত্তিতে দন্ত চিকিৎসক পরামর্শ নেওয়া উচিত। কিছু ক্ষেত্রে রোগ নির্ণয় করতে বায়োপসি ও রক্ত পরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে। যদি ধারালো দাঁত থেকে আলসার হয়ে থাকে তাহলে যত দ্রুত সম্ভব দাঁত ট্রিমিং করে নিতে হবে।
রোগীর সার্বিক শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে চিকিৎসা দেওয়া খুবই জরুরি। এই রোগের সঠিক কারণ জানতে ও চিকিত্সার জন্য ওরাল মেডিসিন নিতে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ প্রয়োজন।
ডা. রিফাত রহমান: বিডিএস, এমএসসি ওরাল মেডিসিন (থাইল্যান্ড), ওরাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ (ডেন্টাল ইউনিট), বারডেম হাসপাতাল
Comments