আক্সার, অশ্বিন, সিরাজে ধরাশায়ী ইংল্যান্ড
ভেন্যু একই। শুরু থেকে স্পিনাররা সুবিধাও পেলেন। কিন্তু আগের টেস্টের মতো রুদ্রমূর্তি ধারণ করল না উইকেট। তারপরও ইংল্যান্ড হলো ধরাশায়ী। বিবর্ণ ব্যাটিং পারফরম্যান্সে কোনোমতে দুইশ পেরিয়ে তারা গুটিয়ে গেল। ভারতের হাতে ম্যাচের লাগাম দিতে ছন্দে থাকা দুই স্পিনার আক্সার প্যাটেল ও রবিচন্দ্রন অশ্বিনের সঙ্গে জ্বলে উঠলেন একাদশে ফেরা পেসার মোহাম্মদ সিরাজ।
বৃহস্পতিবার আহমেদাবাদে সিরিজের চতুর্থ টেস্টের প্রথম দিন শেষে ১৮১ রানে পিছিয়ে আছেন বিরাট কোহলিরা। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংসে অলআউট হয়েছে ২০৫ রানে। জবাবে ভারতের সংগ্রহ ১ উইকেটে ২৪ রান। উইকেটে আছেন রোহিত শর্মা ৩৪ বলে ৮ রানে। তার সঙ্গী চেতেশ্বর পূজারা খেলছেন ৩৬ বলে ১৫ রানে।
প্রথম ওভারেই ভারতকে ধাক্কা দেন জেমস অ্যান্ডারসন। এই অভিজ্ঞ পেসারের ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েন শুবমান গিল। রিভিউ নিলেও রক্ষা পাননি তিনি। শূন্য রানে উইকেট হারানো স্বাগতিকরা এরপর আর কোনো বিপদে পড়েনি। এদিন অ্যান্ডারসন ৫ ওভারে একটি রানও দেননি।
এর আগে ইংল্যান্ডকে অল্পতে বেঁধে ফেলতে আক্সার ৪৫ রানে নেন ৪ উইকেট। একটুর জন্য টানা চার ইনিংসে ৫ উইকেট পাওয়া হয়নি তার। অশ্বিন ৪৭ রানে দখল করেন ৩ উইকেট। জাসপ্রিত বুমরাহর পরিবর্তে জায়গা পাওয়া সিরাজ ২ উইকেট পান ৪৫ রানে।
ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে বল হাতে নিয়ে ভারতীয়দের মুখে হাসি ফোটান আক্সার। টার্নহীন দ্বিতীয় ডেলিভারিতে তিনি উপড়ে নেন ডম সিবলির স্টাম্প। সিরিজজুড়ে ব্যর্থ এই ওপেনার করেন ২ রান। ইংলিশদের সংগ্রহ তখন ১০। আরেক ওপেনার জ্যাক ক্রলিকেও টিকতে দেননি বাঁহাতি আক্সার। উড়িয়ে মারতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন তিনি।
প্রথম সেশনের প্রথম ঘণ্টার পানি পানের বিরতির পরপরই বড় শিকার করেন সিরাজ। তার ইনসুইংয়ে পরাস্ত হয়ে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েন সফরকারী অধিনায়ক জো রুট। তার সংগ্রহ ৯ বলে ৫ রান।
৩০ রানে ৩ উইকেট খোয়ানো দলের হাল ধরেন জনি বেয়ারস্টো আর বেন স্টোকস। তাই মধ্যাহ্ন বিরতির আগে আর কোনো বিপাকে পড়েনি ইংল্যান্ড। তবে এই জুটিকে বেশিদূর এগোতে দেননি সিরাজ। দ্বিতীয় সেশনের চতুর্থ ওভারে ফেরেন বেয়ারস্টো। তাতে ভাঙে ইনিংসের সর্বোচ্চ ৪৮ রানের জুটি। বেয়ারস্টোর ব্যাট থেকে আসে ৬৭ বলে ২৮ রান।
অলি পোপকে নিয়ে এগোচ্ছিলেন স্টোকস। ইংল্যান্ডের ইনিংসের একমাত্র হাফসেঞ্চুরি আসে তার ব্যাট থেকে। ৪৩ রানের সম্ভাবনাময় এই জুটির ইতি টানেন ওয়াশিংটন সুন্দর। সোজা বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ৫৫ রান করে বিদায় নেন স্টোকস। তার ১২১ বলের ইনিংসে ছিল ৬ চার ও ২ ছক্কা।
পোপ ও একাদশে ঢোকা ড্যান লরেন্সের কল্যাণে ৫ উইকেটে ১৬৬ রানে পৌঁছে যায় ইংলিশরা। কিন্তু তাদের ৪৫ রানে জুটি ভাঙতেই হুড়মুড় করে গুটিয়ে যায় দলটি। শেষ ৫ উইকেটের পতন হয় মাত্র ৩৯ রানে। পোপ ৮৭ বলে করেন ২৯ রান। তাকে শর্ট লেগে গিলের ক্যাচে পরিণত করার পর বেন ফোকসকেও দ্রুত সাজঘরে পাঠান অশ্বিন।
একই ওভারে ডম বেস ও লরেন্সকে আউট করেন আক্সার। আগ্রাসী শট খেলতে গিয়ে স্টাম্পিং হন লরেন্স। তিনি ৮ চারে ৭৪ বলে করেন ৪৬ রান। জ্যাক লিচকে ফিরিয়ে ইংল্যান্ডের ইনিংসের ইতি টানেন অশ্বিন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
(প্রথম দিন শেষে)
ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংস: ৭৫.৫ ওভারে ২০৫ (ক্রলি ৯, সিবলি ২, বেয়ারস্টো ২৮, রুট ৫, স্টোকস ৫৫, পোপ ২৯, লরেন্স ৪৬, ফোকস ১, বেস ৩, লিচ ৭, অ্যান্ডারসন ১০; ইশান্ত ০/২৩, সিরাজ ২/৪৫, আক্সার ৪/৬৮, অশ্বিন ৩/৪৭, সুন্দর ১/১৪)
ভারত প্রথম ইনিংস: ১২ ওভারে ২৪/১ (গিল ০, রোহিত ৮*, পূজারা ১৫*; অ্যান্ডারসন ১/০, স্টোকস ০/৪, লিচ ০/১৬, বেস ০/৪)।
Comments