নারায়ণগঞ্জে হকার-পুলিশ সংঘর্ষ, আহত অন্তত ৩০

নারায়ণগঞ্জ শহরের ফুটপাতে বসার দাবিতে আন্দোলনকারী হকারদের সঙ্গে পুলিশের কয়েক দফা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে।
Narayanganj.jpg
আন্দোলনকারী হকাররা শহরের বেশ কয়েক স্থানে সড়ক অবরোধ করে আগুন ধরিয়ে দেন। ছবি: স্টার

নারায়ণগঞ্জ শহরের ফুটপাতে বসার দাবিতে আন্দোলনকারী হকারদের সঙ্গে পুলিশের কয়েক দফা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে।

এসময় বিক্ষুব্ধ হকাররা বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে সড়কে আগুন ধরিয়ে দেন। তারা তিনটি যাত্রীবাহী বাস, একটি প্রাইভেটকার ও ছয়টি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ভাঙচুর করেন। সেসময় বাস থেকে ভয়ে লাফিয়ে নামতে গিয়ে একজন নারীসহ পাঁচ জন আহত হন।

এ ছাড়া, হকারদের ইটপাটকেলে অন্তত ১০ জন সদস্য আহত হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ। তবে হকারদের দাবি, পুলিশের লাঠিচার্জে তাদের নেতা আসাদুজ্জামানসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার বিকাল ৫টা থেকে সন্ধ্যা পৌনে ৭টা পর্যন্ত শহরের বঙ্গবন্ধু সড়ক, সলিমুল্লাহ সড়ক ও ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে এসব ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী, হকার ও পুলিশ জানায়, ফুটপাতে বসার দাবিতে গত কয়েকদিন ধরেই বিক্ষোভ করে আসছে হকারদের একটি অংশ। আজ বিকাল ৫টায় শহরে আবারও বিক্ষোভ করেন তারা। চাষাঢ়ায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে থেকে তারা মিছিল বের করেন।

মিছিলটি চাষাঢ়া গোলচত্বর এলাকায় পৌঁছলে পুলিশ বাধা দেয়। তবে সেই বাধা উপেক্ষা করে মিছিল এগিয়ে যেতে চাইলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে ও হকার নেতা আসাদুজ্জামানকে আটক করে।

N.ganj-1.jpg
হকাররা তিনটি যাত্রীবাহী বাস, একটি প্রাইভেটকার ও ছয়টি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ভাঙচুর করেন। ছবি: স্টার

এ ঘটনার জের ধরে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন হকাররা। তারা মডার্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে বঙ্গবন্ধু সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেন। বিপরীত দিকে সুগন্ধ রেস্টুরেন্টের সামনে কাপড়ের ঝুট ও চৌকি ফেলে তাতে আগুন ধরিয়ে দেন।

তখন সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ জামানের নেতৃত্বে পুলিশ অ্যাকশনে যাওয়ার চেষ্টা করলে হকারদের আরেকটি অংশ গ্রীন্ডলেজ ব্যাংকের সামনে গিয়ে অবস্থান নেয়। সেখানেও তারা সড়কে আগুন ধরিয়ে দেন।

সেসময় ‘আল্লাহ ভরসা’, ‘বাধন’ ও ‘বন্ধন’ পরিবহনের তিনটি বাস লক্ষ্য করে হকাররা ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। আতংকিত হয়ে যাত্রীরা দ্রুত বাস থেকে নামতে গিয়ে এক নারীসহ পাঁচ জন আহত হন। পরে বাসগুলো দ্রুত সেখান থেকে সরে যায় ও আহতরা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যান। তাদের পরিচয় জানা যায়নি।

পরে গ্রীন্ডলেজ ব্যাংক মোড়, সুগন্ধা রেস্টুরেন্টের সামনে ও চাষাঢ়ায় সায়াম প্লাজার সামনে হকারদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে হকাররা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। পুলিশও পাল্টা লাঠিচার্জ করে।

N.ganj-2.jpg
বিকাল ৫টা থেকে সন্ধ্যা পৌনে ৭টা পর্যন্ত হকারদের সঙ্গে পুলিশের কয়েক দফা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। ছবি: স্টার

প্রায় এক ঘণ্টা পর সন্ধ্যা ৬টায় হকাররা বঙ্গবন্ধু সড়ক থেকে সরে গেলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। একই সময়ে হকারদের আরেকটি গ্রুপ নবাব সলিমুল্লাহ সড়কে হকার্স মার্কেটের সামনের সড়ক বন্ধ করে বিক্ষোভ দেখায়। সেখানেও পুলিশ গিয়ে তাদের সরিয়ে দেয়।

শহরের দুটি সড়ক থেকে যখন হকারদের সরিয়ে দেওয়া হয়, তখন তারা ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে গিয়ে সড়কে আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। সেখানে পুলিশ গিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিলে পৌনে ৭টায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

হকার নেতা রহিম মুন্সি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমি নারায়ণগঞ্জে নেই। তবে শুনেছি হকার নেতা আসাদুজ্জামানকে আটক করেছে পুলিশ। পুলিশের লাঠিপেটায় ১৫ জনের মতো হকার আহত হয়েছেন।’

নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মেহেদী ইমরান সিদ্দিকী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘হকারদের একটি গ্রুপ মিছিল বের করে জনস্বার্থে ব্যাঘাত ঘটায়। তখন পুলিশ তাদের বাধা দেয়। তখন হকাররা সড়ক অবরোধ করলে তাদের সরিয়ে দিতে চাইলে পুলিশকে লক্ষ্য করে তারা ইটপাটকেল ছুড়েন। এতে পুলিশের অন্তত ১০ জন সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের পরিচয় পরে জানানো হবে। এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Comments

The Daily Star  | English

Over 5,500 held in one week

At least 738 more people were arrested in the capital and several other districts in 36 hours till 6:00pm yesterday in connection with the recent violence across the country.

14h ago