চীন-রাশিয়ার বিরোধিতায় আবারও মিয়ানমার নিয়ে বিবৃতি দিতে পারেনি নিরাপত্তা পরিষদ
মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিতে আবারও ব্যর্থ হয়েছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ।
আজ বুধবার রয়টার্স জানিয়েছে, গতকাল মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের নিন্দা ও শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর সংঘাতপূর্ণ আচরণ থেকে বের হয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তৈরি বিবৃতিটি নিরাপত্তা পরিষদে চূড়ান্ত হয়নি।
খসড়া বিবৃতিটিতে সেনাবাহিনীকে সংযত হওয়ার আহ্বান এবং তা না হলে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছিল।
গত মঙ্গলবার ব্রিটেনের ওই খসড়াটি সংশোধনের জন্যে চীন, রাশিয়া, ভারত ও ভিয়েতনাম পরামর্শ দেয়। তারা বিবৃতি থেকে সেনা অভ্যুত্থান সম্পর্কিত আলোচনা ও ‘সেনাবাহিনী সংযত না হলে আরও ব্যবস্থা গ্রহণ’র মতো কথাগুলো সরিয়ে ফেলার অনুরোধ জানায়।
নিরাপত্তা পরিষদ গত মাসেও এক বিবৃতিতে মিয়ানমারে সেনাবাহিনী ঘোষিত জরুরি অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ ও আটককৃতদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল।
তখনও চীন-রাশিয়ার বিরোধিতায় বিবৃতিটিতে সেনা অভ্যুত্থানের নিন্দা জানানো হয়নি।
জাতিসংঘের মুখপাত্র স্তেফান দুজারিচ গত মঙ্গলবার বৈঠকের আগে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘প্রতিটি সদস্য রাষ্ট্র স্বতন্ত্র ও সম্মিলিতভাবে ভূমিকা রাখতে পারে। আমরা সবসময় সম্মিলিতভাবে নিরাপত্তা পরিষদ থেকে দৃঢ় ও কঠোর ব্যবস্থা আশা করছি।’
মিয়ানমারে সেনাবিরোধী বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে এখন পর্যন্ত ৬০ জনেরও বেশি নিহত হয়েছেন। প্রায় ১ হাজার ৮০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েক ডজন সাংবাদিকও আছেন।
মঙ্গলবার রয়টার্সের হাতে আসা নিরাপত্তা পরিষদের খসড়া বিবৃতিতে, ‘মিয়ারমারের সামরিক বাহিনীকে চূড়ান্ত সংযম দেখানো’র ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। এতে আরও বলা হয়েছে, নিরাপত্তা পরিষদ দেশটির পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং ‘মিয়ানমারের ওপর সম্ভাব্য ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে প্রস্তুতি’র কথাও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
খসড়া বিবৃতিতে ‘শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীদের ওপর হামলার’ তীব্র নিন্দা জানিয়েছে নিরাপত্তা পরিষদ। এছাড়াও, বিবৃতিটিতে দেশটির স্বাস্থ্যকর্মী, নাগরিক সমাজ, সাংবাদিক ও মিডিয়াকর্মীদের ওপর নিষেধাজ্ঞাসহ মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতা লঙ্ঘনের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। আটককৃতদের অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ারও আহ্বান জানানো হয়েছে।
মিয়ানমারে জাতিসংঘের মানবাধিকার তদন্তকারী এবং নিউইয়র্কভিত্তিক হিউম্যান রাইটস ওয়াচ নিরাপত্তা পরিষদকে মিয়ানমারের ওপর আর্ন্তজাতিক অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানায়। সামরিক সরকারের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার কথাও জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা শীঘ্রই জারি হওয়ার সম্ভাবনা নেই, উল্লেখ করে কূটনীতিকরা বলছেন, কারণ যেকোনো সময়েই চীন ও রাশিয়া এর বিরোধিতা করবে।
আরও পড়ুন:
Comments