বাউফলের ওসির বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তির সুপারিশ
পটুয়াখালীর বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে দ্রুত বিচার আইনসহ একাধিক মামলার আসামিদের সেলফি ও ছবি তোলার ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে কমিটি।
তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে এবং বাউফল থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মাহফুজুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘ওসির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’
পটুয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল মুকিত হাসান খানকে প্রধান করে গঠিত এক সদস্যের তদন্ত কমিটি আজ বুধবার পুলিশ সুপারের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।
এর আগে, পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ শহীদুল্লাহ মঙ্গলবার এ কমিটি গঠন করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন।
উল্লেখ্য, দ্রুত বিচার আইনে দায়ের হওয়া একটি মামলার কিছু আসামি রোববার রাতে বাউফল থানা চত্বরে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ওসির সঙ্গে সেলফি ও ছবি তোলেন। পরে এগুলো তারা নিজেদের ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করেন।
এ ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় শুরু হয় এবং দ্য ডেইলি স্টারসহ বিভিন্ন সংবাদ মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হয়।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ওসির সঙ্গে সেলফি ও ছবি তোলা ওইসব আসামিসহ ১৮-২০ জন গত ১৩ ফেব্রুয়ারি রাতে নওমালা ইউনিয়নের বটকাজল গ্রামে স্থানীয় ব্যবসায়ী মিজান মৃধার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এ ঘটনায় মিজান মৃধা বাদী হয়ে ১৮ ফেব্রুয়ারি পটুয়াখালী আদালতে দ্রুত বিচার আইনে একটি অভিযোগ করলে আদালত অভিযোগটি মামলা হিসেবে নেওয়ার জন্য বাউফল থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী ২৫ ফেব্রুয়ারি থানায় ওই মামলাটি রেকর্ড করা হয়।
বাদী মিজানুর রহমানের অভিযোগ, দ্রুত বিচার আইনে দায়ের করা মামলার কোনো আসামি আদালতে হাজির হয়ে জামিন নেননি বা পুলিশের কাছেও আত্মসমর্পণ করেননি। বরং আসামিরা এলাকায় বীরদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এবং মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছেন। সেই আসামিদের সঙ্গে থানার ওসির সেলফি ও ছবি তোলার ঘটনায় তিনি ভীত, শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। তিনি ওই মামলা সুষ্ঠ তদন্ত নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
এ বিষয়ে বাউফল থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ‘আনন্দ উৎসব অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত হয়েছেন। অনেকেই আমার সঙ্গে ছবি ও সেলফি তুলেছেন। তাদের মধ্যে কে আসামি আর কে আসামি না, তা আমি চিনতে পারিনি।’
Comments