পেনাল্টি মিস ‘বড় ধাক্কা’, তবুও মেসির সমর্থনে পেদ্রি
খেলার ধারার বিপরীতে গোল হজম করা বার্সেলোনা ম্যাচে ফিরল লিওনেল মেসির অসাধারণ এক দূরপাল্লার গোলে। কিন্তু নায়ক থেকে খলনায়ক বনে যেতে সময় নিলেন না আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড। মিস করে বসলেন পেনাল্টি। পিএসজির বিপক্ষে কাতালানদের অভাবনীয় কিছু করে দেখানোর প্রত্যাশার ইতি ঘটল সেখানেই।
বুধবার রাতে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বিদায় নিয়েছে বার্সা। ২০০৬-০৭ মৌসুমের পর প্রথমবারের মতো তারা ব্যর্থ হয়েছে শেষ আটে উঠতে। মাঝে টানা ১৩ বার কোয়ার্টার ফাইনালে নাম লিখিয়ে তারা গড়েছিল রেকর্ড।
প্রথম লেগে গুঁড়িয়ে যাওয়া বার্সা দ্বিতীয় লেগে উপহার দেয় নজরকাড়া পারফরম্যান্স। শুরু থেকেই স্বাগতিকদের চেপে ধরে তারা। কিন্তু সুযোগ নষ্টের মিছিলে নাম লেখান উসমান দেম্বেলে। তার সঙ্গী হন মেসিও। ফলে পুরো ম্যাচে নেওয়া ২১টি শটের ১০টি লক্ষ্যে রেখেও বার্সা গোল করতে পারে মাত্র একটি।
ম্যাচের পর বার্সেলোনার তরুণ স্প্যানিশ মিডফিল্ডার পেদ্রি পোড়েন আক্ষেপে, ‘আমরা জানতাম, সুযোগগুলো কাজে লাগানো আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে। আমরা দারুণ একটি ম্যাচ উপহার দিয়েছি। কিন্তু আমরা বড় বড় সুযোগ হাতছাড়া করেছি।’
প্রথমার্ধে মেসি একাই গোলমুখে শট নেন ছয়টি। যা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের চলতি মৌসুমে যৌথ সর্বোচ্চ। কিন্তু ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারির পর প্রথমবারের মতো ইউরোপের সেরা ক্লাব আসরে স্পট-কিকে সফলতা পাননি তিনি।
প্রথমার্ধের শেষদিকে ৩৩ বছর বয়সী মেসির শট ঝাঁপিয়ে রুখে দেন পিএসজির গোলরক্ষক কেইলর নাভাস। বল তার পায়ে লেগে বাধা পায় ক্রসবারে। ম্যাচের লাগাম হাতে রেখেও লিড নিতে না পারার প্রভাব প্রকটভাবে দেখা গেছে দ্বিতীয়ার্ধে। রোনাল্ড কোমানের শিষ্যদের আক্রমণাত্মক রূপটা আর ফুটে ওঠেনি।
দলের অধিনায়কের ব্যর্থতাকে প্রত্যাবর্তনের পথে বড় আঘাত বলে মনে করছেন পেদ্রি, ‘আমরা বিশ্বাস করেছিলাম যে, আমরা আরেকটি প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখতে পারব এবং পরের পর্বে উঠতে পারব। কিন্তু বিরতির ঠিক আগে (মেসির) মিস করা পেনাল্টি আমাদের জন্য বড় ধাক্কা হয়ে আসে।’
তবে বিদায়ের কারণ হিসেবে কেবল মেসিকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে রাজী নন তিনি, ‘আমরা লড়াই চালিয়ে গেছি এবং আপনি কখনোই একটি পেনাল্টি মিস দিয়ে কোনো ম্যাচ বা তার ফলকে যাচাই করতে পারেন না। আমরা অনেক সুযোগ পেয়েছি এবং সেগুলো গ্রহণ করতে পারিনি।’
বার্সার ফরাসি ফরোয়ার্ড আঁতোয়ান গ্রিজমানকেও ছুঁয়ে গেছে হতাশা, ‘এটা খুবই বিব্রতকর। আমি বলব, আমরা চারটি স্পষ্ট সুযোগ পেয়েছি, সঙ্গে পেনাল্টিও। সেগুলো কাজে লাগাতে না পারলে ম্যাচের পরের সময়টা অবধারিতভাবে কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। প্রথম লেগের তুলনায় একেবারে ভিন্ন একটা লড়াই ছিল।’
প্যারিসের পার্ক দে প্রিন্সেসে শেষ ষোলোর ফিরতি লেগের ম্যাচটি শেষ হয়েছে ১-১ গোলে। ৩১তম মিনিটে স্পট-কিক থেকে কিলিয়ান এমবাপে পিএসজিকে এগিয়ে নেন। ছয় মিনিট পর লড়াইয়ে সমতা টানেন মেসি। কিন্তু বিরতির ঠিক আগে পেনাল্টি থেকে বল জালে জড়াতে ব্যর্থ হন তিনি।
প্রথম লেগে বার্সার মাঠ ন্যু ক্যাম্পে ৪-১ গোলে জিতেছিল পিএসজি। ফলে দুই লেগ মিলিয়ে ৫-২ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে ফরাসি লিগ ওয়ানের শিরোপাধারীরা পেয়েছে জায়গা করে নিয়েছে শেষ আটে।
Comments