স্পর্শকাতর!

মাদক চোরাকারবারিদের নজরদারিতে রাখতে ও তাদের অবস্থান শনাক্ত করতে মোবাইল ট্র্যাকার কেনার প্রস্তাব করেছিল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। কিন্তু, সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে সরকার।

মাদক চোরাকারবারিদের নজরদারিতে রাখতে ও তাদের অবস্থান শনাক্ত করতে মোবাইল ট্র্যাকার কেনার প্রস্তাব করেছিল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। কিন্তু, সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে সরকার।

গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর জাতীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ উপদেষ্টা কমিটির এক ভার্চ্যুয়াল বৈঠকে এই প্রস্তাবটি দেয় ডিএনসি।

সেই প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারম্যান ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, মোবাইল ট্র্যাকিং একটি স্পর্শকাতর বিষয় এবং এ মুহূর্তে ট্র্যাকার কেনা ঠিক হবে না।

এর পরিবর্তে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে মাদক চোরাকারবারিদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ ও তাদের তথ্য পেতে জাতীয় টেলিযোগাযোগ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র বা ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) কার্যালয়ে ডিএনসির একজন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়ার কথা জানান তিনি।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব এনটিএমসিতে একজন ডিএনসি কর্মকর্তার দায়িত্ব নিশ্চিত করতে লিখিত আদেশ দেবেন।

এনটিএমসির সিনিয়র সচিব, মহাপরিচালক (ডিজি) ও ডিএনসির মহাপরিচালককে (ডিজি) এই নির্দেশনা তদারকির জন্য বলা হয়েছিল।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ওই ভার্চ্যুয়াল বৈঠক সংক্রান্ত লিখিত নির্দেশনা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মুহাম্মদ আবদুর রউফ মিয়া।

ডিএনসির কর্মকর্তারা জানান, সূত্র ব্যবহার করে প্রথাগত পদ্ধতিতে অপারেশন পরিচালনা করতে গিয়ে তাদেরকে প্রায়ই সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। অনেক ক্ষেত্রেই মাদকদ্রব্য মাস্টারমাইন্ডরা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে যায় এবং অভিযানের আগেই পালাতে সক্ষম হয়। তাই একটি মোবাইল ট্র্যাকিং সিস্টেম পাওয়া গেলে তাদের পক্ষে অপরাধীদের অবস্থান শনাক্ত করা সহজ হতো।

কর্মকর্তারা আরও বলেন, ইয়াবার মতো মাদকের চোরাকারবারের বিরুদ্ধে লড়তে ডিএনসি ইতোমধ্যেই তার নজরদারি ও মাদকবিরোধী অভিযান বাড়িয়েছে।

ডেটাবেজ অনুযায়ী, ২০২০ সালের ১১ মাসে প্রায় তিন কোটি ১৮ লাখ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছিল। ২০১৯ সালে উদ্ধার করা হয়েছিল ৩৪৬ কোটি পিস।

এ ছাড়াও, ২০১৬ সালে দুই কোটি ৯৪ লাখ, ২০১৭ সালে চার কোটি ৭৯ লাখ এবং ২০১৮ সালে প্রায় পাঁচ কোটি ৩০ লাখ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে।

ডিএনসির সহকারী পরিচালক (অপারেশন) মো. বজলুর রহমান বলেন, ‘মাদক চোরাকারবারিরা যাতে ইয়াবা পাচারের সুযোগ না পায় সেজন্য আমরা প্রতিদিন নতুন নতুন কৌশল অবলম্বন করছি।’

ডিএনসির মহাপরিচালক মুহাম্মদ আহসানুল জব্বার গতকাল দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, উপদেষ্টা কমিটি মোবাইল ট্র্যাকার কেনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।

ডিজি বলেন, ‘আমরা আবারও একটি প্রস্তাব জমা দেওয়ার চেষ্টা করছি যাতে করে অন্তত মাদক চোরাকারবারিদের অবস্থান শনাক্ত করার সুবিধা পেতে পারি। তারা কোথায় লুকিয়ে আছে সেটি কোনো মোবাইল টাওয়ারের মাধ্যমে অপারেশন পরিচালনার সময় জানতে পারি।’

Comments

The Daily Star  | English
No hartal and blockade on Sunday

No hartal and blockade on Sunday

BNP has refrained from calling any programmes on Sunday marking International Human Rights Day

3h ago