‘আমরা বেরোবি উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ’র দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ করেছি’
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ’র বিরুদ্ধে ১১১টি অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করেছে বেরোবি শিক্ষকদের একাংশের সংগঠন অধিকার সুরক্ষা পরিষদ।
আজ শনিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ৭৯০ পৃষ্ঠার শ্বেতপত্র (প্রথম খণ্ড) প্রকাশ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন অধিকার সুরক্ষা পরিষদের আহবায়ক অধ্যাপক ড. মতিউর রহমান।
লিখিত বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মতিউর রহমান বলেন, ‘আমরা বেরোবির উপাচার্য অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর অনিয়ম দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা নিয়ে শ্বেতপত্রের প্রথম খণ্ড প্রকাশ করেছি। এতে জনগণের টাকায় পরিচালিত বিশ্ববিদ্যালয়টির নানান অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘উপাচার্যের নানান সংঘবদ্ধ দুর্নীতির তথ্য তুলে ধরা হয়েছে এই শ্বেতপত্রে। তিনি ঢাকার লিয়াজোঁ অফিসে বসে একাডেমিক, প্রশাসনিক ও আর্থিক অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি, জালিয়াতি, ভর্তি বাণিজ্য, হয়রানি, নির্যাতন ও নিপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছেন। বেরোবির কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মকর্তার মদদে তিনি এসব দুর্নীতি করছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডে উপাচার্য এবং তার মা মিলে শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছেন। সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান উপাচার্য নিজেই। উপাচার্য হিসেবে তিনি নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি, অনুষদের ডিন হিসেবে তিনি নিয়োগ বোর্ডের সদস্য এবং বিভাগের প্রধান হিসেবেও তিনি সদস্য। অপরদিকে তার মা বিশেষজ্ঞ সদস্য।’
আর্থিক দুর্নীতি নিয়ে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সরকারি নীতি অনুসরণ না করে অনিয়ম-দুর্নীতি করা হয়েছে। পরিবহন পুলের সঙ্গে সংযোগ সড়কের নামে ইট বিছানো রাস্তা নির্মাণ দেখিয়ে ৫০ লাখ টাকার দুর্নীতি করা হয়েছে।’
লিখিত বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মতিউর রহমান উপাচার্যের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননা, ঢাকার লিয়াজোঁ অফিসে অনিয়ম, বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নির্মাণে অনিয়ম, ধারাবাহিক অনুপস্থিতিসহ ১১১টি অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য তুলে ধরেন।
আজকের সংবাদ সম্মেলনে বেরোবির বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
এ প্রসঙ্গে অধিকার সুরক্ষা পরিষদের সদস্য মাহমুদুল হক দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, এ শ্বেতপত্র বই আকারে সরকারের বিভিন্ন দপ্তর, যেমন- রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসিতে পাঠানো হবে।
অধিকার সুরক্ষা পরিষদের শ্বেতপত্র প্রকাশ প্রসঙ্গে ভিসি অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ আগে থেকেই বলা হচ্ছে। নতুন কিছু না। বিষয়গুলো তদন্ত করতে আগামীকাল বেরোবি ক্যাম্পাসে ইউজিসির একটি দল আসবে। তাদের প্রভাবিত করতে আজকের এই সংবাদ সম্মেলন করে শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা বিভাগের সহকারী পরিচালক মো. এহতেরামুল হক স্বাক্ষরিত একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করতে তথাকথিত শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হয়েছে।
Comments