উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ

‘আবার যেন এলডিসি থেকে উত্তরণ পেছানোর আবেদন করতে না হয়’

স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে আসন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারকে প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দেশের শীর্ষ অর্থনীতিবিধ ও গবেষকরা। সতর্ক করে দিয়ে তারা বলেছেন, ২০২৬ সালে গিয়ে এই উত্তরণ পিছিয়ে দেওয়ার অনুরোধ যাতে না করতে হয় সে ব্যাপারে এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে।

স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে আসন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারকে প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দেশের শীর্ষ অর্থনীতিবিধ ও গবেষকরা। সতর্ক করে দিয়ে তারা বলেছেন, ২০২৬ সালে গিয়ে এই উত্তরণ পিছিয়ে দেওয়ার অনুরোধ যাতে না করতে হয় সে ব্যাপারে এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের উদ্যোগে আজ ‘বাংলাদেশ ট্রানজিশন টু ডেভলপিং কান্ট্রি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় অর্থনীতিবিদ ও গবেষকরা এলডিসি থেকে উত্তরণে দেশের এ যাবতকালের অর্জন আর ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরেন।

তারা বলেন, উত্তরণের পথে আবার যদি পিছিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানাতে হয় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সেটা বড় লজ্জার কারণ হয়ে দেখা দেবে।

গত ২৬ ফেব্রুয়ারি জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (ইউএন সিডিপি) সভায় বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের চূড়ান্ত সুপারিশ পেয়েছে। কমিটির প্রথা অনুযায়ি ২০২৪ সালে বাংলাদেশ পাকাপাকি স্বল্পন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হয়ে যাওয়ার কথা। তবে কোভিড-১৯ মহামারির কারণে বাংলাদেশ সরকার অনুরোধ জানিয়ে উত্তরণের সময় দুই বছর বাড়িয়ে নিয়েছে।

পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউটের নির্বাহি পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, ১৯৭১ এ মুক্তিযুদ্ধের আগে এদেশের মাথাপিছু আয় ছিল ১২৩ ডলার। যুদ্ধের পর এই আয় ৯৪ ডলারে নেমে আসে। এক ধাক্কায় প্রায় ৩০ ডলার কমে যাওয়া, সেটা এক কঠিন পরিস্থিতি তৈরি করেছিল।

মনসুর বলেন, কত বড় অর্থনৈতিক শক, প্রত্যেক পরিবার কঠিন একটা পরিস্থিতিতে পড়েছিল।

যুদ্ধবিধ্বস্ত স্বাধীন বাংলাদেশকে যে অর্থনৈতিক দুরবস্থার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে সেসব কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় একটি অর্থনৈতিক সম্ভাব্যতা যাচাই করেছিল। তার এই দেশের একটা হতাশাজনক চিত্র তুলেধরে বলেছিল দেশটি মনে হয় ‘বাস্কেট কেস’ হয়ে থাকবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সাহায্য দিয়ে যেতে হবে।

আজকে আমাদের জাতীয় আয়ের মাত্র দেড় শতাংশ বিদেশি ঋণ আসে।

আইএমএফ এর সাবেক এই কর্মকর্তা বলেন, সুতারাং যেকোন বিবেচনায় বড় অর্জন তবে চ্যালেঞ্জ কিছু আছে। এখন আমাদের অর্থনীতিতে প্রতিরক্ষণ ব্যাবস্থা ২৭ শতাংশ, ভারতে যা ৯ আর ভিয়েতনামে ৭ শতাংশ। অর্থনীতিকে আরও উন্মুক্ত করার সক্ষমতা অর্জন না করলে বিদেশিরা এদেশে আসবে না।

ভিয়েতনামের সঙ্গে তুলনা টেনে তিনি বলেন, ৯০ দশকে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের রপ্তানি আয় প্রায় সমান ছিল। এখন ভিয়েতনামের রপ্তানি আয় ২৭০ বিলিয়ন ডলার সেখানে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হয় ৪০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের সন্মানিয় ফেল মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এলডিসি থেকে গ্রাজুয়েশনের ফলে অনেক সম্ভাবনাও তৈরি হবে তবে কাজে লাগাতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চৌকষ নেগোশিয়েশনে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। তার জন্য তিনি একটি নেগোশিয়েশন সেল করার পরামর্শ দেন, যাতে দক্ষ নেগোশিয়টরের সমাবেশ ঘটাতে হবে।

সাবেক তত্বাবধায়ক সরকারের অর্থউপদেষ্টা মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম এলডিসি থেকে গ্রাজুয়েশনে বাংলাদেশের ক্ষতির চেয়ে লাভই বেশি হবে।

আরও পড়ুন: 

এলডিসি থেকে বের হওয়ার চূড়ান্ত সুপারিশ পেল বাংলাদেশ

উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে ক্ষতির চেয়ে লাভ বেশি: অর্থমন্ত্রী

 

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

10h ago