বগুড়ায় ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষ, পাল্টাপাল্টি মামলা
বগুড়ায় ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় ১৯ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও ৬০ জনের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি মামলা করেছে উভয়পক্ষ।
আজ শনিবার রাতে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হুমায়ন কবির দ্য ডেইলি স্টারকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘গত ১১ মার্চ রাতে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় আজ সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে দুটি মামলা রুজু করা হয়েছে।’
তিনি জানান, জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক তাকদীর ইসলাম খানের মা আফরোজা ইসলাম (৫০) বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। অন্যদিকে কলেজ ছাত্রলীগ শাখার কর্মী সোহাগ হাসান বাদী হয়ে অপর মামলাটি করেছেন।
‘যেহেতু মামলা হয়েছে, এখন আমরা আসামি ধরে আইনগত ব্যবস্থা নেব,’ বলেন হুমায়ন কবির।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজ ছাত্রলীগ কর্মী সোহাগ হাসান বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক তাকদীর ইসলাম খানকে প্রধান আসামি করে ১২ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও ২০-২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। মামালার এজাহারে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পরিকল্পনা অনুযায়ী ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার সঙ্গীদের হত্যাচেষ্টার অভিযোগ করা হয়েছে।
এ ছাড়া, তাকদীর ইসলামের মা সাত জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৩০-৩৫ জনের বিরুদ্ধে তার ছেলেকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম এবং হত্যাচেষ্টার মামলা করেছেন। এই মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে আজিজুল হক কলেজ ছাত্রলীগ শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রউফকে।
মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে আফরোজা ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমার ছেলে এখনো গুরুতর আহত। সে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি।’
আফরোজা ইসলাম মামলার বিষয়ে এরচেয়ে বেশি কিছু বলেননি।
কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রউফ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমাকে ফাঁসাতে প্রধান আসামি করা হয়েছে। ঘটনার সময় আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলাম না।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রলীগের এক নেতা বলেন, ‘মামলা না করে আপোষের পরামর্শ দিয়েছিলেন জেলা আওয়ামী লীগ নেতারা। কিন্তু, একপক্ষ এতে রাজি না হলে উভয়পক্ষ পাল্টাপাল্টি মামলা করেছে।’
বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান মজনু দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এটা রাজনৈতিক ইস্যু নয়। ছাত্রলীগের দু’পক্ষের কথা কাটাকাটির জেরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি খুবই নিন্দনীয়। পাল্টাপাল্টি মামলা হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। যেহেতু তারা আমাদের সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। তাই উভয়পক্ষের সঙ্গে বসে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করব।’
উল্লেখ্য, গত ১১ মার্চ একটি দলীয় অনুষ্ঠানে যাওয়ার সময় জেলা ছাত্রলীগ নেতা তাকদীর এবং কলেজ ছাত্রলীগের শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রউফের সমর্থকদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এর রেশ ধরে রাত নয়টার দিকে শহরের সাতমাথা এলাকায় উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের আট জন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিত্সা নেন এবং অন্তত তিন জন হাসপাতালে ভর্তি হন।
Comments