অভিষেকেই বিস্ফোরক ইশান, চোখ ধাঁধানো কোহলিতে জিতল ভারত
শেখর ধাওয়ানের জায়গায় প্রথমবার সুযোগ পেয়েই উত্তাল হয়ে উঠল ইশান কিশানের ব্যাট। টানা দুই শূন্যের ক্ষত কাটিয়ে অধিনায়ক বিরাট কোহলির ব্যাট হয়ে উঠল আলো ঝলমলে। ইংল্যান্ডের দেওয়া চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্যও তাই ১৩ বল বাকি রেখে জিতে গেল ভারত। টি-টোয়েন্টি সিরিজে হার দিয়ে শুরু পর ফিরল সিরিজেও।
আহমেদাবাদে ইংল্যান্ডের ১৬৪ রান তাড়া করে ৭ উইকেটে জিতেছে কোহলির দল। ৪৯ বলে ৫ চার, ৩ ছক্কায় সর্বোচ্চ ৭৩ করে তাতে বড় অবদান কোহলির। তবে খেলায় জেতার সুরটা বেধে দিয়েছেন ইশানই। তরুণ এই বাঁহাতি করেন ৩২ বলে ৫৬ রান। এতে পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে এসেছে ১-১ সমতা।
চ্যালেঞ্জিং রান তাড়ায় নেমে বিপর্যয়ে শুরু ভারতের। বাঁহাতি পেসার স্যাম কারান প্রথম ওভারেই চেপে ধরেন লোকেশ রাহুলকে। পাঁচ বল থেকে রান না পেয়ে অফ কাটারে কাবু হন রাহুল। প্রথম ওভারটাই তাই উইকেট মেডেন।
এরপরই জমে উঠে অভিষিক্ত ইশানের সঙ্গে বিরাট কোহলির জুটি। আইপিএলে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে গেল মৌসুমে দুর্দান্ত খেলা ইশান জাতীয় দলের জার্সিতে নেমেই তুলেন ঝড়। স্যাম কারানের বলে ফ্লিক, পুলে আসে বাউন্ডারি। টম কারানকে উড়ান লং অন দিয়ে। বেন স্টোকসের বলে টপ এজ হয়ে পাওয়া ছক্কার পর ডিপ স্কয়ার লেগ দিয়ে মারেন আরেক ছক্কা।
আদিল রশিদকে পেয়েই মিড উইকেট দিয়ে বাউন্ডারিতে পাঠিয়েছিলেন। পরের বলেই আউট হতে পারতেন। তবে লং অনে সহজ ক্যাচ ধরতে পারেননি স্টোকস। ততক্ষণে ২১ বলে ৪০ রানে চলে গেছেন ইশান। জীবন পেয়ে পরের ওভারে রশিদকেই আরও দুই ছক্কায় ২৮ বলে তুলে নেন প্রথম ফিফটি। পরে তার বলেই রিভার্স সুইপে কাটা পড়ে ফেরেন ৩২ বলে ৫৬ রান করে।
এতে শেষ হয় কোহলির সঙ্গে তার ৫৪ বলে ৯৪ রানের বিস্ফোরক জুটি। যাতে কোহলির অবদান ২৩ বলে ৩৫। এরপর রিশভ পান্ত এসেও পা রাখেন এক্সেলেটরে। ৩৬ রানের জুটিতে ক্রিস জর্ডানের বলে ক্যাচ উঠানোর আগে ১৩ বলে ২৬ করে যান পান্ত।
কোহলি ছিলেন অবিচল। খুব তেড়েফুঁড়ে না খেলেও তার ব্যাটও ছিল উত্তাল। সহজেই রান বাড়িয়ে ইংল্যান্ডকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেন ভারত অধিনায়ক। টম কারানকে ছক্কায় উড়িয়ে ৩৪ বলে পুরো করেন ফিফটি।
এরপরও যেন আরও বিধ্বংসী হয়ে উঠে কোহলির ব্যাট। জর্ডানকে কব্জির জোরে তব্দা করে পাঠান বাউন্ডারিতে। পুলে উড়িয়ে আগেভাগেই শেষ করে দেন খেলা। আহমেদাবাদ টেস্টের শেষ ইনিংসে ০ রানে আউট হওয়ার পর প্রথম টি-টোয়েন্টিতেও শূন্যেই শেষ হয়েছিল কোহলির ইনিংস। ৭৩ রানের এই ইনিংসে শূন্যের অস্বস্তি কাটা পড়ল তার।
এর আগে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারেই জস বাটলারকে হারায় ইংল্যান্ড। ভুবনেশ্বর কুমারের বলে লাইন মিস করে এলবিডব্লিউ হন তিনি। কিন্তু জেসন রয় ছিলেন তেতে। আইপিএলে দল না পাওয়ার ঝাঁজ মেটান যেন চার-ছয়ের ঝড়ে। পাওয়ার প্লেতে তার দাপটেই তরতরিয়ে রান বাড়ায় সফরকারীরা।
তিনে নামা দাবিদ মালান ৬৩ রানের জুটির পর শিকার হন যুজভেন্দ্র চেহেলের। এরপর চলে জনি বেয়ারস্টো-রয়ের তুফান। শেষ পর্যন্ত ৩৫ বলে ৪ বাউন্ডারি, ২ ছক্কায় ৪৩ করা রয়কে কাবু করেন ওয়াশিংটন সুন্দর। পরে ১৫ বলে ২০ করে থামেন বেয়ারস্টো। অধিনায়ক ইয়ন মরগ্যানও তুলেছিলেন ঝড়।
শার্দুল ঠাকুরের বলে কিপারের হাতে ধরা পড়ার আগে ২০ বলে ২৮ করে যান তিনি। শেষ অবধি টিকে থাকা হয়নি বেন স্টোকসেরও। তিনিও শিকার শার্দুলের।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইংল্যান্ড: ২০ ওভারে ১৬৪/৬ ( রয় ৪৬, বাটলার ০, মালান ২৪, বেয়ারস্টো ২০, মরগ্যান ২৮, স্টোকস ২৪, কারান ৬* , জর্দান ০* ; ভুবনেশ্বর ১/২৮, সুন্দর ২/২৯ম শার্দুল ২/২৯, হার্দিক ০/৩৩, চাহাল ১/৩৪)
ভারত: ১৭. ৫ ওভারে ১৬৬/৩ (রাহুল ০, ইশান ৫৬, কোহলি ৭৩* , রিশভ ২৬, শ্রেয়াস ৮* ; কারান ১/২২, আর্চার ০/২৪, জর্দান ১ /৩৮, টম কারান ০/২৬ , স্টোকস ০/১৭, রশিদ ১/৩৮ )
ফল: ভারত ৭ উইকেটে জয়ী।
সিরিজ: পাঁচ ম্যাচ সিরিজ ১-১ সমতা।
Comments