দেশে দ. আফ্রিকাসহ করোনার ১২ স্ট্রেইন শনাক্ত
করোনাভাইরাসের যুক্তরাজ্যের স্ট্রেইন শনাক্তের পর বাংলাদেশে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিলের স্ট্রেইনও পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে গ্লোবাল জিনোম সিকোয়েন্সিং ডেটাবেস জিআইএসএআইডি।
ডেটাবেসের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকার স্ট্রেইনে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয় গত ২৪ জানুয়ারি। ‘বি ডট১ ডট ৩৫১’ বা ‘৫০১ ডট ভি২’ নামে পরিচিত এই স্ট্রেইনটি যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রেও পাওয়া গেছে। ব্রাজিলে প্রথম শনাক্ত হওয়া স্ট্রেইনের সাংকেতিক নাম ‘বি ডট১ ডট১ ডট১০৭’।
জিআইএসএআইডি থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, দক্ষিণ আফ্রিকার স্ট্রেইনটি ছাড়াও দেশে আরও ১১ ধরনের করোনাভাইরাস স্ট্রেইন রয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার স্ট্রেইন শনাক্তের খবর এমন সময় পাওয়া গেল যখন দেশে আশঙ্কাজনক হারে সংক্রমণ বাড়ছে।
গত ২১ ফেব্রুয়ারি করোনা শনাক্তের হার দুই দশমিক ৩৩ শতাংশে নেমে এসেছিল। যা গতকাল বেড়ে দাঁড়িয়েছে নয় দশমিক ৪৮ শতাংশে। গত ৮ মার্চ নতুন শনাক্ত হয়েছিল ৮৪৫ জন। গতকাল সোমবার এই সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে এক হাজার ৭৭৩ এ দাঁড়িয়েছে।
সংক্রমণের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে মৃত্যুর হারও। গত রোববার করোনায় আক্রান্ত ১৮ জনের মৃত্যু হলেও গতকাল হয়েছে ২৬ জনের।
প্রাথমিক গবেষণায় জানা গেছে, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন যুক্তরাজ্যের স্ট্রেইনের বিরুদ্ধে কার্যকর হলেও দক্ষিণ আফ্রিকার স্ট্রেইনে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ‘সীমিত’ প্রতিরক্ষা তৈরি করতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, ভ্যাকসিনটি রোগীদের পরিস্থিতি গুরুতর হওয়া থেকে রক্ষা করবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দক্ষিণ আফ্রিকার স্ট্রেইনটি যদি দেশে এসে থাকে তাহলে তা উদ্বেগজনক। কারণ এই স্ট্রেইনটি অন্যান্য স্ট্রেইনের তুলনায় অনেক বেশি দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে।
বাংলাদেশ কাউন্সিল ফর সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চের (বিসিএসআইআর) পরিচালক অধ্যাপক ড. আবুল খায়ের মোহাম্মদ শামসুজ্জামান গতকাল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, গত ২১ জানুয়ারি ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টার থেকে জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য পাঠানো নমুনায় দক্ষিণ আফ্রিকার স্ট্রেইন শনাক্ত হয়েছে।
বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর) গত সপ্তাহে ৯৩টি নতুন জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের ডেটা পাঠিয়েছে জিআইএসএআইডি ডেটাবেজে।
জানতে চাইলে বিসিএসআইআরের প্রিন্সিপাল সায়েন্টিস্ট ড. সেলিম খান এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে জিআইএসএআইডি ডেটাবেজে ৯০৩টি জিনোম সিকোয়েন্সিং ডেটা দেওয়া হয়েছে।
জিআইএসএআইডি ডেটাবেসের তথ্য ব্যাখ্যা করে ঢাকার আশিয়ান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চীফ মলিকুলার বায়োলজিস্ট মো. আমিনুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘জিআইএসএআইডি ডেটাবেসে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশে করোনার ১২টি স্ট্রেইন রয়েছে, যা একাধিক দেশেও পাওয়া গেছে। এর মধ্যে যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিলের স্ট্রেইনগুলো সবচেয়ে বেশি উদ্বেগের বিষয়।’
সংক্ষেপিত: ইংরেজিতে মূল প্রতিবেদনটি পড়তে ক্লিক করুন এই লিংকে Covid-19 Cases in Bangladesh: Worrying spike
Comments