টানা তিন শিরোপার পর এই প্রথম কোয়ার্টারে রিয়াল
উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সফলতম দল তারা। ২০১৬-১৮ সালে টানা তিনবার ইউরোপের সর্বোচ্চ ক্লাব আসরের শিরোপা ওঠে তাদের হাতে। অথচ তারাই কিনা গত দুই মৌসুমে বাদ পড়েছিল শেষ ১৬ থেকে! ব্যর্থতার সেই ধারার অবসান ঘটাল রিয়াল মাদ্রিদ। আতালান্তাকে ফিরতি লেগেও হারিয়ে জিনেদিন জিদানের দল পেল কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট।
মঙ্গলবার রাতে ঘরের মাঠ আলফ্রেদো দি স্তেফানো স্টেডিয়ামে ৩-১ গোলে জেতে রিয়াল। প্রথম লেগে ইতালিয়ান ক্লাবটিকে তাদের মাঠেই ১-০ ব্যবধানে হারিয়েছিল তারা। ফলে দুই লেগ মিলিয়ে ৪-১ গোলে জিতে শেষ আটে পা রেখেছে স্প্যানিশ লা লিগার শিরোপাধারীরা।
ছন্দে থাকা করিম বেনজেমা প্রথমার্ধে এগিয়ে নেন রিয়ালকে। দ্বিতীয়ার্ধে ব্যবধান বাড়ান অধিনায়ক সার্জিও রামোস। শেষদিকে আতালান্তার লুইস মুরিয়েল ব্যবধান কমালে উল্টো তেতে ওঠে স্বাগতিকরা। মার্কো আসেনসিও নাম লেখান গোলদাতাদের তালিকায়।
গতবার ম্যানচেস্টার সিটির কাছে শেষ ১৬-র দুই লেগেই হেরে ছিটকে গিয়েছিল রিয়াল। ২০১৮-১৯ মৌসুমে তাদের বিদায় করেছিল আয়াক্স আমস্টারডাম। প্রথম লেগে প্রতিপক্ষের মাঠে ২-১ গোলে জিতলেও দ্বিতীয় লেগে নিজেদের মাঠে ৪-১ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছিল লস ব্লাঙ্কোসরা।
রিয়ালের মাঠে শুরুটা দারুণ ছিল আক্রমণাত্মক ফুটবলের পূজারী আতলান্তার। তারা এগিয়ে যেতে পারত দ্বিতীয় মিনিটেই। কিন্তু লুইস মুরিয়েলের ক্রসে ছয় গজের বক্সে ফাঁকায় থেকেও বলে উপযুক্ত ছোঁয়া লাগাতে পারেননি রবিন গোসেন্স।
প্রথমার্ধের প্রায় অর্ধেক সময় পর্যন্ত দাপট জারি থাকে অতিথিদের। যদিও তারা নিশ্চিত সুযোগ তৈরি করতে পারেনি সেভাবে। রক্ষণ জমাট রেখে ধীর ধীরে পাল্টা আক্রমণে উঠে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় রিয়াল। গোল পেতেও তাদের তাদের অপেক্ষা করতে হয়নি বেশিক্ষণ। তাতে অবশ্য দায় আছে প্রতিপক্ষের গোলরক্ষকের।
মার্কো স্পোর্তিয়েল্লো বল বিপদমুক্ত করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তার শট সরাসরি পৌঁছায় লুকা মদ্রিচের কাছে। ক্রোয়েশিয়ার এই মিডফিল্ডার ডি-বক্সে ঢুকে পাস দেন অরক্ষিত বেনজেমাকে। বাকিটা অনায়াসে সারেন তিনি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এই ফরাসি স্ট্রাইকারের এটি ৭০তম গোল।
লিড নিয়ে বিরতিতে যাওয়া রিয়াল ব্যবধান বাড়াতে পারত দ্বিতীয়ার্ধের সপ্তম মিনিটে। কিন্তু হতাশ করেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। আতালান্তার রক্ষণভাগকে তছনছ করে গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়েও অবিশ্বাস্যভাবে জাল খুঁজে নিতে ব্যর্থ হন তিনি। তাতে একটি অসাধারণ প্রচেষ্টা পূর্ণতা পায়নি।
দুই মিনিট পর ফারলান্দ মেন্দির দূরপাল্লার শট সহজেই লুফে নেন স্পোর্তিয়েল্লো। চাপ ধরে রেখে ৬০তম মিনিটে পেনাল্টি পেয়ে যায় রিয়াল। ডি-বক্সে ভিনিসিয়ুস ফাউলের শিকার হওয়ায় পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। সফল স্পট-কিকে লক্ষ্যভেদ করেন সম্প্রতি চোট কাটিয়ে ফেরা রামোস।
৬৮তম মিনিটে সব হিসাবনিকাশ শেষ করে দেওয়ার সুযোগ আসে বেনজেমার সামনে। কিন্তু লুকাস ভাজকেজের ক্রসে তার প্রথম হেড গোলরক্ষক ফিরিয়ে দেন। ফিরতি হেড পোস্টে লেগে ফিরে আসে।
এসময় আতালান্তা বেশ কিছু সুযোগ তৈরি করে। তবে রুসলান মালিনোভস্কি, দুভান জাপাতারা রিয়াল গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়াকে পরীক্ষায় ফেললেও অতিক্রম করতে পারেননি। যেন চীনের প্রাচীর হিসেবে আবির্ভূত হন বেলজিয়ান এই তারকা।
তবে ৮৩তম মিনিটে আর পারেননি কোর্তোয়া। কলম্বিয়ান ফরোয়ার্ড মুরিয়েল অসাধারণ ফ্রি-কিকে খুঁজে নেন জালের ঠিকানা। আতালান্তার ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যাশা ফিকে হতে সময় লাগেনি। পরের মিনিটে ভাজকেজের পাসে কাছের পোস্ট দিয়ে রিয়ালের তৃতীয় গোলটি করেন বদলি নামা আসেনসিও। জয় নিশ্চিতের সঙ্গে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে রিয়াল।
Comments