আবুল মনসুর আহমদের ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

উপমহাদেশের প্রখ্যাত সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ আবুল মনসুর আহমদের ৪১তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ)। ১৮৯৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর তিনি ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল থানাধীন ধানীখোলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৯ সালের ১৮ মার্চ ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।
আবুল মনসুর আহমদ

উপমহাদেশের প্রখ্যাত সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ আবুল মনসুর আহমদের ৪১তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ)। ১৮৯৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর তিনি ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল থানাধীন ধানীখোলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৯ সালের ১৮ মার্চ ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।

বাংলাসাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্রূপাত্মক রচয়িতা আবুল মনসুর আহমদ ছিলেন একাধারে একজন সাহিত্যিক, রাজনীতিবিদ, আইনজ্ঞ ও সাংবাদিক। তিনি ১৯৪৬ সালে অবিভক্ত বাংলার কলকাতা থেকে প্রকাশিত দৈনিক ‘কৃষক’, ‘নবযুগ’ ও ‘ইত্তেহাদ’র সম্পাদক ছিলেন এবং তিনি ছিলেন আধুনিক ও প্রগতিশীল সাংবাদিকতার এক অগ্রপথিক।

অত্যন্ত সফল রাজনীতিবিদ আবুল মনসুর আহমদ শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের যুক্তফ্রন্ট সরকারে প্রাদেশিক শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন এবং ১৯৫৭ সালে তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর আওয়ামী লীগ সরকারে ছিলেন কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী। পূর্ববাংলার স্বার্থের স্বপক্ষে শক্ত অবস্থান ও নানাবিধ উদ্যোগের জন্য, বিশেষ করে শিল্পায়নের ক্ষেত্রে তার অবদান অনস্বীকার্য।

তার রচনা সম্ভারের মধ্যে রয়েছে বিখ্যাত বিদ্রূপাত্মক রচনা ‘আয়না’, ‘আসমানী পর্দা’, ‘গালিভারের সফরনামা’ ও ‘ফুড কনফারেন্স’। আরও রয়েছে বাংলার সামাজিক ও রাজনৈতিক ইতিহাসের ওপর বিখ্যাত রচনাবলী। তার আত্মজীবনীমূলক দুটি গ্রন্থ হচ্ছে ‘আত্মকথা’ ও ‘আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর’।

আবুল মনসুর আহমদ চল্লিশ, পঞ্চাশ ও ষাট-এর দশকজুড়ে গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার স্বপক্ষে যে অবিরাম প্রচারণা চালিয়েছিলেন, তা তুলনাহীন। পাকিস্তানের প্রথম দিকে বিরোধী দলীয় আন্দোলনে তার ভূমিকা ছিল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রথম সারির একজন নেতা।

তিনি চল্লিশের দশকে প্রথম থেকেই ভাষা বিষয়ে লিখে আসছিলেন এবং ‘ইত্তেহাদ’ সম্পাদক হিসেবে ভাষা আন্দোলনে গভীর অবদান রাখেন। অর্থাৎ পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা কী হবে, তা নিয়ে তিনি দেশভাগের চার বছর আগেই (১৯৪৩ সালে) নানান রচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। রচনা করেন ১৯৫৪’র নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট (বাঙালির রাজনীতির তিন জাঁদরেল ব্যক্তিত্ব শেরেবাংলা ফজলুল হক, মাওলানা ভাসানী ও শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সমন্বয়ে) এর মেনিফেস্টো ‘একুশ দফা’র, যে নির্বাচনে মুসলিম লীগকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করা হয়।

১৯৫৪’র যুক্তফ্রন্টের ২১ দফা ছিল তদানীন্তন পাকিস্তানের পূর্বাংশের বাঙালিদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক দাবির প্রথম পূর্ণাঙ্গ উপস্থাপন। রাজনৈতিক কার্যকারণে আবুল মনসুর আহমদকে পঞ্চাশ দশকের শেষ দিকে ও ষাটের দশকের প্রথম দিকে জেনারেল আইয়ুব খানের সামরিক শাসনামলে বেশ কয়েকবার কারাবরণ করতে হয়েছে।

উল্লেখ্য, আজ রাত ৮টায় আবুল মনসুর আহমদকে স্মরণ করে আলোচনা ও বুক রিভিউ প্রতিযোগিতার ফলাফল ঘোষণা অনুষ্ঠান অনলাইনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। যা প্রচার করা হবে ‘আবুল মনসুর আহমদ’ (Abul Mansur Ahmad) ফেসবুক পেজ থেকে। অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে থাকবেন জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম। প্রধান অতিথি বাংলা একাডেমির সভাপতি শামসুজ্জামান খান। বিশেষ আলোচক অধ্যাপক শহীদ ইকবাল, অধ্যাপক মিজানুর রহমান ও গবেষক ড. এম আব্দুল আলীম। আলোচনায় যুক্ত হবেন আবুল মনসুর আহমদের পুত্র দ্য ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম। সঞ্চালনা করবেন ইমরান মাহফুজ।

Comments

The Daily Star  | English

Ex-public administration minister Farhad arrested

Former Public Administration minister Farhad Hossain was arrested from Dhaka's Eskaton area

3h ago