কাজলের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আরেকটি মামলার চার্জশিট

ফটোসাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা আরেকটি মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পুলিশ। অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, কাজলের মূল উদ্দেশ্য ছিল ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের ভাবমূর্তি নষ্ট করা ও মিথ্যা তথ্য প্রকাশ করে অর্থ আদায় করা।
kajol
ফটোসংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল। ছবি: সংগৃহীত

ফটোসাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা আরেকটি মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পুলিশ। অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, কাজলের মূল উদ্দেশ্য ছিল ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের ভাবমূর্তি নষ্ট করা ও মিথ্যা তথ্য প্রকাশ করে অর্থ আদায় করা।

প্রায় এক বছরের দীর্ঘ তদন্তের পর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার উপপরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাসেল মোল্লা ১৪ মার্চ ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার অভিযোগপত্র জমা দেন। ফটোসাংবাদিক কাজলের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা তিনটি মামলার মধ্যে এটি ছিল কামরাঙ্গীরচর থানায় করা মামলার অভিযোগপত্র।

এর আগে গত ৪ ফেব্রুয়ারি হাজারীবাগ থানায় করা মামলায় অভিযোগপত্র দিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ফটোসাংবাদিক কাজলের বিরুদ্ধে কামরাঙ্গীরচর, হাজারীবাগ ও শেরেবাংলা নগর থানায় করা তিনটি মামলার প্রত্যেকটিই ক্ষমতাসীন দলের সদস্যরা দায়ের করেছেন।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, যুব মহিলা লীগ থেকে বহিষ্কৃত নেতা শামিমা নূর পাপিয়ার অপরাধ ও গ্রেপ্তার নিয়ে কাজল তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ভুয়া খবর প্রকাশ করেছেন। কাজল যখন তার ফেসবুকে মিথ্যা তথ্য প্রচার করছিলেন, তখন যুব মহিলা লীগের নেতা শামীমা নূর পাপিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাকে দল থেকে বহিষ্কার ও জেলা যুব মহিলা লীগের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছিল।

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে, কাজল এক ফেসবুক পোস্টে বলেছেন, পাপিয়ার নারী ও মাদক ব্যবসার অন্যতম সহযোগী ছিলেন সুমাইয়া চৌধুরী বন্যা।

ফেসবুকে এমন পোস্টের পরই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুমাইয়া চৌধুরী বন্যা গত বছরের ১১ মার্চ কামরঙ্গীরচর থানায় মামলাটি দায়ের করেন।

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে, কাজল বিভিন্ন ফেসবুক আইডিতে অশ্লীল মেসেজ ও অশ্লীল ছবি পাঠিয়েছিলেন।

এ ছাড়া, তদন্তকারী কর্মকর্তাদের দাবি, অভিযোগকারী সুমাইয়া চৌধুরী বন্যার স্বামী আসাদুজ্জামান নাহিদ সম্পর্কেও অশালীন, মানহানিকর ও আপত্তিকর তথ্য প্রকাশ করেছেন কাজল।

কাজলের বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ আরও বেশ কয়েকজন মন্ত্রী, আওয়ামী লীগ নেতা ও সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমুসহ অন্যান্য সংসদ সদস্য এবং যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তার, সাধারণ সম্পাদক অপু উকিলসহ কয়েকজন নারী নেতাকর্মীকে নিয়ে অশালীন, মানহানিকর, আপত্তিকর ও মিথ্যা তথ্য প্রকাশের অভিযোগ আনা হয়।

২০২০ সালের ১০ মার্চ নিখোঁজ হওয়ার ৫৩ দিন পর ৩ মে বেনাপোল সীমান্তের কাছাকাছি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) কাজলকে খুঁজে পায়। এরপর অবৈধ অনুপ্রবেশের অপরাধে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর ও যুব মহিলা লীগের দুই নেতাকর্মী তার বিরুদ্ধে করা মামলায় কারাগারে ছিলেন তিনি। সংশ্লিষ্ট নিম্ন আদালতে সাত মাস তার জামিন হয়নি।

২৪ নভেম্বর হাইকোর্ট তাকে একটি মামলায় জামিন দেন এবং তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সাইবার ট্রাইব্যুনালকে অন্য দুটি মামলায় প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

অবশেষে ১৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট অন্য দুটি মামলায় কাজলের জামিন মঞ্জুর করেন। কাজলের আইনজীবী সেসময় উল্লেখ করেছিলেন, মামলা দায়েরের ৭৫ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করার কথা থাকলেও তদন্তকারীরা সেটি করতে ব্যর্থ হয়েছেন।

গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর কাজলকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।

হাজারীবাগ থানা ও কামরাঙ্গীরচর থানায় করা মামলার অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হলেও শেরে বাংলা নগর থানায় করা মামলার তদন্তকারীরা এখনো প্রতিবেদন জমা দেননি।

আরও পড়ুন:

কাজলের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় চার্জশিট

অবশেষে কারামুক্ত সাংবাদিক কাজল

সব মামলায় সাংবাদিক কাজলের জামিন, মুক্তিতে বাধা নেই

দু’একদিনের মধ্যে মুক্তি পেতে পারেন সাংবাদিক কাজল

জামিন পেলেও ছাড়া পাচ্ছেন না সাংবাদিক কাজল

সাংবাদিক কাজলের বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের মামলা

অনুপ্রবেশের মামলায় জামিন, অন্য মামলায় কারাগারে সাংবাদিক কাজল

নিখোঁজ সাংবাদিক কাজল এখন বেনাপোল থানা হেফাজতে

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার আসামি সাংবাদিক কাজল ৩ দিন ধরে নিখোঁজ

‘তোমার জন্য অপেক্ষা করছি’ বাবার উদ্দেশে ছেলের চিঠি

নিখোঁজ সাংবাদিক: মামলা নিতে ২ থানার লুকোচুরি

পুলিশ তদন্ত শুরুর পর সাংবাদিক কাজলকে অনুসরণ করা হচ্ছিল: অ্যামনেস্টি

সাংবাদিক কাজলকে নিয়ে এইচআরওর উদ্বেগ, দ্রুত খুঁজে বের করার তাগিদ

পিঠমোড়া করে হাতকড়ায় বাঁধা ক্যামেরাশিল্পী

বাবার জন্য, মুক্তির জন্য

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

4h ago