বোল্টদের স্যুয়িং, বাউন্সে হাবুডুবু খেল বাংলাদেশ

শনিবার ডানেডিনের ইউনিভার্সিটি ওভালে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে মাত্র ১৩১ রানে গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশ। তামিমরে ধসিয়ে মাত্র ২৭ রানে ৪ উইকেট নেন বোল্ট।
Trent Boult
ছবি: সংগ্রহ

ট্রেন্ট  বোল্ট স্যুয়িংয়ের পসরায় শুরুতেই করলেন নাকাল। ম্যাট হেনরি, কাইল জেমিসন রাখলেন চাপ, সেই চাপেই জিমি নিশামও তুললেন উইকেট। নিউজিল্যান্ডের পেসারদের কোন উত্তর দিতে পারল না তামিম ইকবালের দল।

শনিবার ডানেডিনের ইউনিভার্সিটি ওভালে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে টস হেরে ব্যাটিং পেয়ে মাত্র  ১৩১ রানে গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশ। তামিমদের ধসিয়ে মাত্র ২৭ রানে ৪ উইকেট নেন বোল্ট।            

ট্রেন্ট বোল্টের প্রথম বলটাই সাঁই করে বেরিয়ে গেল। আউটস্যুয়িং ইয়র্কারের জবাব ছিল না।  তৃতীয় বলে ছক্কায় উড়ালেন তামিম। অধিনায়কের জন্মদিনের অর্জন বলতে এটাই। বোল্টের স্যুয়িংয়ের যন্ত্রণায় ভুগে সোজা বলেই হলেন পরাস্ত। পঞ্চম ওভারে এলবিডব্লিউতে তামিমকে হারানোর পরই ধসের শুরু।

নিউজিল্যান্ডে এসব পরিস্থিতিতে দলকে আত্মবিশ্বাস যোগাত সৌম্য সরকারের ব্যাট। টপ অর্ডারে জায়গা ফিরে পাওয়াটা উদযাপন করতে পারলেন না বাজে শটে। বোল্টের বাউন্সারের গতি বুঝতে পারলেন না, নিজের জোনেও ছিল না বল। শাফল করে ৩০ গজ পার করতে গিয়ে ধরা খেলে ডেবন কনওয়ের হাতে মিড অফে সহজ ক্যাচ।

লিটন দাস পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ধরে খেলছিলেন। টিকে গিয়ে থিতুও মনে হচ্ছিল তাকে। কাইল জেমিসনের বলে মেরেছিলেন আত্মবিশ্বাসী বাউন্ডারি। মুশফিকের সঙ্গে জুটিতে ২৩ আসার পর তিনি ফিরলেন জিমি নিশামের গতি বুঝতে না পেরে। লেগ স্টাম্পে ঠেলে দিয়ে প্রান্ত বদলের চিন্তা ছিল। কিন্তু মন্থর গতির বল সফট হ্যান্ডে খেলতেন গিয়ে ৩৬ বলে ১৯ করে উঠিয়ে দেন লোপ্পা ক্যাচ।

মুশফিকের অ্যাপ্রোচও ছিল লিটনের মতই। টিকে থাকার চেষ্টা ছিল। বারবার স্যুয়িং-বাউন্সে পরাস্ত হচ্ছিলেন। প্রচণ্ড চাপ ছেড়ে বেরুতে বেরুতেই সমাপ্তি। তাকেও ছেঁটেছেন নিশাম। অফ স্টাম্পের বাইরে লেন্থ ডেলিভারিতে কাট করে ক্যাচ দিয়েছেন মার্টিন গাপটিলের হাতে, চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে তিনি ৪৯ বলে ২৩ করে ফিরে যাওয়ার সময় পেরিয়ে গেছে ২১ ওভার। স্কোর বোর্ডে রান কেবল ৬৯!

মোহাম্মদ মিঠুনও ধুঁকছিলেনই। তবে তাকে কিছুটা দুর্ভাগ্যের শিকারও বলা যায়। নিশামের বলে মাহমুদউল্লাহর স্ট্রেট ড্রাইভ ক্যাচের মতো উঠেছিল। তা ধরতে লাফিয়ে পড়ে সফল না হলেও মিঠুনের উইকেট পেয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। তখন যে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসেছেন তিনি, নিশামের হাত স্পর্শ করে বলও ভেঙ্গে দিয়েছে নন স্ট্রাইকিং প্রান্তের স্টাম্প।

মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে লড়াই করে প্রতিরোধ আনতে পারেননি মেহেদী হাসান মিরাজ। মিচেল স্যান্টনারের স্পিনে বোল্ড হলেন অদ্ভুতভাবে। লেগ স্টাম্পের উপর থাকা বল না বুঝেই ঘুরালেন। ফিরলেন ১০ বলে ১ রান করে।

অভিষিক্ত শেখ মেহেদী নেমেই স্যান্টনারকে ছক্কায় নিজের প্রথম আন্তর্জাতিক রান করেন। কিন্তু মিরপুরের মাঠের মতো ওদেশে খেলাটা যে এত সহজ নয় টের পেয়েছেন খানিক বাদেই। বোল্টকে পেয়ে কাঁপাকাঁপি করেছেন। সেই চাপ সরাতে ফের স্ট্যান্টনারকে উড়াতে গিয়ে এবার আর টাইমিং হয়নি। ২০ বলে ১৪ রানে থামে তার দৌঁড়। ৯৮ রানেই তখন ৭ উইকেট শেষ বাংলাদেশের।

টেল এন্ডারদের নিয়ে দলকে একটা ভদ্রস্থ জায়গায় নিতে একা টিকে ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। তাসকিন আহমেদ সঙ্গও দিলেন তাকে। ৮ম উইকেটে এলো ২৭ রান। অনেক ওভার বাকি থাকায় মাহমুদউল্লাহর একারই রান বাড়ানোর দায় ছিল। তা করতে গিয়েই এক পর্যায়ে থামতে হয় তাকে। শুরু থেকে দারুণ বল হেনরি শেষে এসে পান উইকেট। পুল করে তার বলে মিড উইকেটে ক্যাচ দেন সর্বোচ্চ ২৭ করা মাহমুদউল্লাহ। এরপর বাকি দুই উইকেট উপড়ে ফেলতে মাত্র কয়েক মিনিট সময় নেন বোল্ট। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ৪১.৫ ওভারে ১৩১  (তামিম ১৩, লিটন ১৯, সৌম্য ০, মুশফিক ২৩, মিঠুন ৯, মাহমুদউল্লাহ ২৭, মিরাজ ১, শেখ মেহেদী ১৪ , তাসকিন ১০, হাসান ১ ,  মোস্তাফিজ ১*; বোল্ট ৪/২৭, হেনরি ১/২৬, জেমিসন ০/২৫, নিশাম ২/২৭, স্যান্টনার ২/২৩) 

 

Comments

The Daily Star  | English

Teesta floods bury arable land in sand, leaving farmers devastated

40 unions across 13 upazilas in Lalmonirhat, Kurigram, Rangpur, Gaibandha, and Nilphamari are part of the Teesta shoal region

1h ago