লালমনিরহাট

‘এ’ পজিটিভ রোগীর শরীরে ‘বি’ পজিটিভ রক্ত দেওয়ার অভিযোগ, জড়িতদের শাস্তি দাবি

লালমনিরহাটে ‘এ’ পজিটিভ রোগীর শরীরে ‘বি’ পজিটিভ রক্ত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে ও এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয়রা।
জড়িতদের শাস্তির দাবিতে স্থানীয়দের মানববন্ধন। ছবি: সংগৃহীত

লালমনিরহাটে ‘এ’ পজিটিভ রোগীর শরীরে ‘বি’ পজিটিভ রক্ত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে ও এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয়রা।

আজ শনিবার দুপুরে সদর হাসপাতালের সামনে লালমনিরহাট-পুলবাড় সড়কে ঘন্টাব্যাপী এই মানববন্ধন করেন তারা।

এর আগে, লালমনিরহাট সদর উপজেলার দুড়াকুটি গ্রামের রহিমা বেগমের (২৮) শরীরে ‘বি’ পজিটিভ রক্ত দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনার পর রহিমা বেগম আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং গত ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন।

রহিমা বেগমের স্বামী রব্বানী ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, ‘আমার স্ত্রীর সন্তান নষ্ট হওয়ার পর সে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। গত ১৪ মার্চ রাতে তাকে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার শরীরে রক্তের প্রয়োজন হওয়ায় হাসপাতাল থেকে রক্ত পরীক্ষা করে ‘বি’ পজিটিভ রক্ত সংগ্রহ করতে বলা হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘গত ১৫ ও ১৬ মার্চ আমি ‘বি’ পজিটিভ রক্তদাতা যোগাড় করে দুই ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করি। এই রক্ত আমার স্ত্রীর শরীরে দেওয়ায় সে আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে।’

তিনি অভিযোগ করেন, ‘১৬ মার্চ বিকেলে আমার স্ত্রীর শরীর থেকে পুনরায় রক্ত সংগ্রহ ও পরীক্ষা করে জানা যায় তার রক্তের গ্রুপ ‘এ’ পজিটিভ।’

রব্বানী ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমার স্ত্রী এখন অনেক অসুস্থ। একা উঠে দাঁড়াতে পারছে না। তার চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন। আমি গরীব মানুষ এত টাকা কোথায় পাব। যাদের কারণে আমার এই পরিনতি তাদের শাস্তি দাবি করছি।’

রক্তদাতা সাকলাইন সোহান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমার শরীরে ‘বি’ পজিটিভ রক্ত। অনেকদিন ধরে রক্তদান করছি। হাসপাতালে দায়িত্বরতরা কীভাবে ‘এ’ পজিটিভ রোগীর শরীরে ‘বি’ পজিটিভ রক্ত দিলো। তারা এ কাজটি করে রোগীকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দোষীদের শাস্তির দাবিতে মানব বন্ধন করেছি। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের রহিমা বেগমের চিকিৎসার সকল দায়ভার বহন করতে হবে।’

অপর রক্তদাতা মোখলেছুর রহমান মুকুল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘হাসপাতালে দায়িত্বরতদের অবহেলার কারণে রহিমা বেগম আজ মৃত্যুর মুখে পড়েছেন।’

লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে মেডিকেল প্যাথোলজিস্ট বিভাগের প্রধান জাহেদুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমি বিষয়টির সঙ্গে জড়িত নই। প্যাথোলজিস্ট মোজাফফার হোসেন রহিমা বেগমরে রক্তের গ্রুপ করেছিলেন এবং তিনিই রক্তদাতাদের রক্ত সংগ্রহ করেছিলেন।’

প্যাথোলজিস্ট মোজাফফার হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘হাসপাতালে আরও প্যাথোলজিস্ট আছেন। এ কাজটি কে করেছে তা আমার অজানা। আমি নিজে করেছি কিনা তাও মনে পড়ছে না।’

লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মঞ্জুর মোর্শেদ দোলন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠনের প্রস্তুতি চলছে। তদন্ত শেষে বলা যাবে কী ঘটেছিলে এবং কে ঘটনার সঙ্গে জড়িত। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী দায়ীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

‘রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রহিমা বেগমের চিকিৎসার ব্যাপারে খোঁজখবর রাখা হচ্ছে,’ বলেন ডা. দোলন।

Comments

The Daily Star  | English

Gaza still bleeds

Intensified Israeli airstrikes on Gaza yesterday killed dozens on the eve of the first anniversary of its offensive in the besieged territory that has killed nearly 42,000 Palestinians and left the enclave in ruins.

4h ago