‘এখানে উন্নতি করতে আসিনি, ম্যাচ জিততে এসেছি’
নিউজিল্যান্ডে গিয়ে স্বাগতিকদের কোন সংস্করণে কখনই হারাতে পারেনি বাংলাদেশ। অনেকবারই জয়ের একটা আভাস তৈরি হয়েছিল, জয় থেকেছে অধরা। তবে ক্রাইস্টচার্চে এবারের মতো সুযোগ আগে কখনো আসেনি বলে মনে করেন তামিম ইকবাল। এই কারণেই বেশি আক্ষেপে পুড়ছেন তিনি। আগের ম্যাচ থেকে উন্নতি করার ক্লান্তিকর বুলিও কপচাতে চান না অধিনায়ক। তার স্পষ্ট কথা, একটু একটু করে উন্নতি নয়, নিউজিল্যান্ডে তারা গিয়েছেন ম্যাচ জিততে।
দ্বিতীয় ওয়ানডেতে কিছুটা মন্থর উইকেটে তামিম ইকবাল আর মোহাম্মদ মিঠুনের দুই ফিফটিতে ২৭১ রান করে বাংলাদেশ। ওই রান ডিফেন্ড করতে গিয়ে ৫৩ রানে ফেলে দিয়েছিল নিউজিল্যান্ডের ৩ উইকেট। পরে টম ল্যাথাম-ডেভন কনওয়ের জুটিতে ম্যাচ নিজেদের দিকে নিয়ে যায় কিইউরা। দারুণ থ্রোতে এই জুটি ভেঙ্গে দলকে খেলায় ফিরিয়েছিলেন তামিমই। বোলাররাও তৈরি করছিলেন সুযোগ। কিন্তু এরপর মুশফিকুর রহিম জিমি নিশামের আর শেখ মেহেদী হাসান ল্যাথামের সহজ দুই ক্যাচ ছেড়ে দিলে ম্যাচ ফসকে যায় বাংলাদেশের কাছ থেকে। ১০ বল আগে ৫ উইকেটে জিতে যায় নিউজিল্যান্ড।
ম্যাচ শেষে অধিনায়কের কণ্ঠে সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করার হতাশা, ‘এর চেয়ে ভাল সুযোগ কোন সময় আমরা পাইনি। এটা আমাদের অবশ্যই জেতা উচিত ছিল। দেশের বাইরে এমন সুযোগ সব সময় আসে না। আজ আমরা যেভাবে ব্যাটিং করেছি..উইকেটটা একটু স্লো ছিল, কঠিন ছিল। ২৭১ অবশ্যই ভাল স্কোর। সেই সঙ্গে ৫০ রানে (৫৩ রানে) ওদের তিনটা উইকেট নিয়ে আমরা যেভাবে শুরু করেছি….তারপর খেলাটা প্রায় আয়ত্তে ছিল কিন্তু দুইটা সুযোগ যেটা মিস করলাম…(দুই ক্যাচ) এই চান্সগুলো (কাচগুলো) যদি তুলতে পারতাম। সত্যি হতাশ যে আমরা এরকম সুযোগ কাজে লাগাতে পারিনি।’
আরও পড়ুন- ২৩ মার্চ তারিখটা কি মুশফিককে আলাদা করে পোড়াবে?
ডানেডিনে চরম ব্যাটিং ব্যর্থতায় প্রথম ওয়ানডেতে ১৩১ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল দল। এবার সেই দলই করেছে ২৭১ রান। তামিম নিজে করেন পঞ্চাশতম ওয়ানডে ফিফটিতে ৭৮ রান। মিঠুনের ব্যাট থেকে আসে ৫৩ বলে ৭৩ রানের ইনিংস।
পরে ম্যাচ জেতার মতো অবস্থায় নিতে পারে নিশ্চিতভাবেই ইউটার্ন করে ঘুরে দাঁড়ানো। কিন্তু ম্যাচ জিততে না পারলে এই উন্নতির কোন মূল্য নেই তামিমের কাছে, ‘প্রেজেন্টেশনে আমাকে এই প্রশ্ন করা হয়েছিল, যে ডানেডিন থেকে এটা অনেক বড় উন্নতি। হ্যাঁ, এটা হয়ত বড় উন্নতি কিন্তু আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি আমরা এখানে উন্নতি করতে আসিনি। আমরা এখানে ম্যাচ জিততে এসেছি। আজ আমাদের জন্য সেই সুযোগটা ছিল যা আমরা কাজে লাগাতে পারিনি। তবে হ্যাঁ উন্নতির দিকে বলতে পারেন যে ১৩০ করেছিলাম এখন ২৭১ করেছি। আমার মনে হয় এখানে জিততে এসেছি। আজ সেরা সুযোগ ছিল যা হাতছাড়া হয়েছে।’
আরও পড়ুন- জীবন পাওয়া ল্যাথামের সেঞ্চুরি, বাজে ফিল্ডিংয়ে আক্ষেপের হার
হারা ম্যাচে বাংলাদেশের সব অধিনায়কই খুঁজেন ইতিবাচক দিকের সান্ত্বনা। তামিম এদিকে হাঁটতে চান না। এই ম্যাচ থেকে ইতিবাচক অনেক কিছু নেওয়ার থাকলেও সেই কথাগুলো বলা তার কাছে ক্লান্তিকর, ‘এখান থেকে অনেক কিছুই ইতিবাচক নেয়ার আছে। এই কথাগুলো বলতে বলতে যেই অধিনায়ক থাকে তার জন্য ক্লান্তিকর হয়ে যাচ্ছে। ম্যাচে এটা-ওটা ভাল হচ্ছে, আমি আপনাকে তিন-চারটা বিষয় দেখাতে পারি যা ইতিবাচক ছিল। কিন্তু এটা আমাদের উদ্দেশ্য না। আমাদের উদ্দেশ্য ম্যাচ জেতা, যার জন্য আমরা এখানে এসেছি এবং এরকম সুযোগ বারবার আসে না। তো উন্নতির দিক থেকে চিন্তা করলে হ্যাঁ ঠিক আছে, কিন্তু আমার কাছে এটা গুরুত্ব রাখে না। গুরুত্বটা হল বাংলাদেশের ম্যাচ জেতা উচিত যা আমরা পারিনি।’
Comments