সেঞ্চুরির পর নাসিরের ৪ উইকেট, জাকিরের শতরানে সিলেটের লিড
প্রত্যাশা পূরণের পথে নাসির হোসেনের শুরুটা হয়েছে একদম যথাযথ। জাতীয় ক্রিকেট লিগের (এনসিএল) নতুন মৌসুমে প্রথমবার ব্যাট হাতে নেমেই পেয়েছেন সেঞ্চুরির স্বাদ। সেখানেই থামেননি বাংলাদেশ জাতীয় দলে ফেরার লড়াইয়ে থাকা রংপুর বিভাগের এই অলরাউন্ডার। ঢাকা বিভাগকে গুঁড়িয়ে দিতে পরে বল হাতেও নিয়েছেন ৪ উইকেট। প্রথম স্তরের আরেক ম্যাচে ফলো-অনে পড়া সিলেট বিভাগের উদ্ধারকর্তার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন জাকির হোসেন। তার অপরাজিত সেঞ্চুরিতে খুলনা বিভাগের বিপক্ষে লিড নিয়েছে তারা।
বুধবার শেষ হয়েছে এনসিএলের প্রথম রাউন্ডের ম্যাচের তৃতীয় দিনের খেলা। সাভারের বিকেএসপিতে রোমাঞ্চকর লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে ঢাকা ও রংপুরের মধ্যকার ম্যাচে। আগামীকাল চতুর্থ ও শেষদিনে জয়ের জন্য রংপুরের চাই ২২৯ রান। তাদের হাতে রয়েছে ৮ উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে তাদের সংগ্রহ ২ উইকেটে ৩৫ রান। এর আগে নাসিরের সেঞ্চুরিতে প্রথম ইনিংসে তারা তোলে ২৩০ রান। পরে ঢাকা দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট হয় মাত্র ১২৮ রানে।
আগের দিনের ৭ উইকেটে ১৯৪ রান নিয়ে দিনের খেলা শুরু করেছিল রংপুর। দলটির শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে নাসির করেন ১১৫ রান। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এটি তার অষ্টম সেঞ্চুরি। ২৫২ বলের ইনিংসে ১১ চার ও ৪ ছক্কা হাঁকান তিনি। সালাউদ্দিন শাকিলের ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরার আগে তিনি উইকেটে কাটান প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা। ঢাকার হয়ে বাঁহাতি স্পিনার নাজমুল ইসলাম অপু ৪ উইকেট নেন ৮৯ রানে।
সম্প্রতি ব্যক্তিগত জীবনে অনেক ঝড়-ঝাপটা সামলানো নাসির লিগ শুরুর আগে বলেছিলেন, অন্তত ৮০০ বা হাজার রান করতে চান তিনি। মাঠের বাইরের ইস্যু খেলায় কোনো প্রভাব ফেলবে না বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। প্রথম ম্যাচে মিলছে তার কথার প্রতিফলন।
১৩৫ রানের বিশাল লিড পাওয়া ঢাকা দ্বিতীয় ইনিংসে সুবিধা করতে পারেনি মোটেও। দুই ওপেনার আব্দুল মজিদ ও রনি তালুকদার উইকেটে ১৩ ওভারের বেশি সময় কাটিয়ে দেওয়ার পর সোহরাওয়ার্দী শুভ নাড়িয়ে দেন দলটিকে। এই বাঁহাতি স্পিনারকে যোগ্য সঙ্গ দেন অফ স্পিনার মাহমুদুল হাসান। তারা ভাগাভাগি করে ৭৩ রানের মধ্যে তুলে নেন ঢাকার ৫ উইকেট।
এরপর জ্বলে ওঠেন ২৯ বছর বয়সী নাসির। ঘূর্ণি বোলিংয়ে ঢাকার শেষ ৫ উইকেটের ৪টিই নেন তিনি। বাকিটি রানআউট। একপ্রান্ত আগলে আরাফাত সানি জুনিয়র অপরাজিত থেকে যান ৪০ রানে। ৩৬ বলের মারমুখী ইনিংসে সমান ৩টি করে চার-ছয় হাঁকান তিনি। নাসির ৯.৫ ওভার হাত ঘুরিয়ে খরচ করেন মোটে ২১ রান।
২৬৪ রানের লক্ষ্য তাড়ায় বিকালে ২৩ রানের মধ্যে দুই ওপেনারকে হারায় রংপুর। জাহিদ জাবেদকে এলবিডাব্লিউ করেন অপু। তানবির হায়দারকে বোল্ড করেন মোহাম্মদ আরাফাত। শেষ কয়েকটি ওভার কাটিয়ে দেওয়া শুভ ১২ ও মাহমুদুল ৪ রানে খেলছেন।
খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে ৯ রানের লিড নিয়েছে সিলেট। দ্বিতীয় ইনিংসে তাদের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ২৫০ রান। বাঁহাতি ব্যাটসম্যান জাকির হাসান ১১৮ রানে অপরাজিত আছেন। ১৯৩ বলের ইনিংসে তিনি মারেন ১৪টি চার। তার সঙ্গী আলোক কাপালি খেলছেন ১৪ রান নিয়ে। তৃতীয় উইকেটে অমিত হাসানের সঙ্গে ১১০ রানের জুটি গড়েন জাকির। অমিতের ব্যাট থেকে আসে ১২৬ বলে ৬৬ রান।
এর আগে খুলনার ৩৭৫ রানের জবাবে প্রথম ইনিংসে ১৩৪ রানে গুটিয়ে যাওয়ায় ফলো-অনে পড়ে সিলেট। আগের দিনের ১৩০ রানের সঙ্গে ৪ রান যোগ করতেই সকালে বাকি ২ উইকেট খোয়ায় তারা। খুলনার হয়ে মাসুম খান ও মিনহাজুর রহমান ৪টি করে উইকেট পান।
Comments