বরগুনায় পুকুরে দেড় কেজি ইলিশ!
বরগুনার তালতলী উপজেলার নয়াপাড়া গ্রামের একটি পুকুরে ইলিশ মাছ পাওয়া গেছে। গত সোমবার মাছ ধরার জন্য পুকুরটি সেঁচে ফেলার পর ইলিশটি পাওয়া যায়। মাছটির ওজন প্রায় দেড় কেজি।
সাগরের লোনা পানির ইলিশ পুকুরে ধরা পড়ার খবরে শত শত কৌতূহলী মানুষ পুকুর পাড়ে ভিড় জমান।
স্থানীয়রা জানান, কাওসার হাওলাদার মাছ ধরতে পুকুর সেঁচে ফেলার পর অন্যান্য মাছের সঙ্গে জীবিত ইলিশ মাছটি পান।
কাওসার হাওলাদার জানান, পরিবারের লোকজন নিয়ে তিনি সেদিনই মাছটি রান্না করে খেয়েছেন। পুকুরে পাওয়া ইলিশের স্বাদ নদীর ইলিশের মতোই। মাছটি রান্নার সময় নদীর ইলিশের মতোই ঘ্রাণ ছড়িয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বর্ষায় আমাদের এই এলাকার খাল-বিল সাগরের পানিতে তলিয়ে যায়। আমার পুকুরও তখন ভেসে গিয়েছিল। তখনই হয়ত ইলিশ মাছটি পুকুরে ঢুকে আর বের হতে পারেনি।’
পাশের নওয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আফজাল হোসেন বলেন, ‘আগে কখনো জীবিত ইলিশের দেখা পাইনি। কারণ ইলিশ জালে ধরা পড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যায়। কাওসারের পুকুরের ইলিশ জীবিত অবস্থায় আমিও দেখেছি।’
তালতলী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ইলিশ মাছ পুকুরে অনেক দিন বাঁচতে পারে। ডিম পাড়ার সময় হলে ইলিশ নদীতে চলে আসে। নদীর পানিতে পুকুর তলিয়ে যাওয়ায় সময় মাছটি হয়তো পুকুরে এসে আটকা পড়েছিল।’
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ অনুষদের ডিন ইলিশ গবেষক অধ্যাপক ড. মো. লোকমান আলী বলেন, ইলিশ সাগরের লোনা পানিতে থাকলেও ডিম পাড়ার সময় নদীর স্বাদু পানিতে আসে। ফলে, এটি দুই ধরনের পানিতেই জীবিত থাকতে পারে।
তিনি আরও জানান, ইলিশ শুধুমাত্র প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো প্ল্যাঙ্কটন খায়। কিন্তু, পুকুরে সাধারণত প্রাকৃতিক খাবার কম থাকে বলে সেখানে এদের দেখা যায় না।
তিনি বলেন, ‘পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পুকুরে ইলিশ চাষের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তাতে আমরা সফল হতে পারিনি। তবে পুকুরের পানিতে প্রয়োজনীয় মাত্রায় লবণাক্ততা বজায় রাখতে পারলে বাণিজ্যিকভাবে ইলিশ উৎপাদন সম্ভব। এক্ষেত্রে বড় অন্তরায় হচ্ছে এর পোনা না পাওয়া।’
Comments