ষড়যন্ত্রের চোরাগলিতে ওবায়দুল কাদের পা দিয়েছেন: কাদের মির্জা

নোয়াখালীর কোম্পানিগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভার মেয়র ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ভাই আবদুল কাদের মির্জা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘আমার ভাই ওবায়দুল কাদের ষড়যন্ত্রের চোরাগলিতে পা দিয়েছেন।’
আবদুল কাদের মির্জা। ছবি: সংগৃহীত

নোয়াখালীর কোম্পানিগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভার মেয়র ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ভাই আবদুল কাদের মির্জা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘আমার ভাই ওবায়দুল কাদের ষড়যন্ত্রের চোরাগলিতে পা দিয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের আমাদের নেতা। তাকে শ্রদ্ধা করি। নোয়াখালীর সবচেয়ে ত্যাগী নেতা মাহমুদুর রহমান বেলায়েত ওবায়দুল কাদেরকে রাজনীতিতে এনেছেন। কিন্তু আজ তাকে পছন্দ করেন না ওবায়দুল কাদের।''

বুধবার দুপুরে কাদের মির্জা তার ফেইসবুক লাইভে এসে এসব কথা বলেন। ৩০ মিনিট ২২ সেকেন্ডের ওই লাইভ ভিডিওতে কাদের মির্জা বলেন, ‘ফেনীর আওয়ামী লীগ নেতা জয়নাল হাজারী অনেক মানবিক কাজ করেছেন। স্টিয়ারিং কমিটি গঠন করে প্রতিটি নেতাকর্মীকে তিনি টাকা দিয়েছেন আর আমি নোয়াখালীতে বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগ্রহ করে সোয়া ২ কোটি টাকা নেতাকর্মীদের দিয়েছি। ফেনীতে জয়নাল হাজারী এবং নোয়াখালীতে আমি ছাড়া কেউ নেতা কর্মীদের টাকা দেয়নি। আজ সেই জয়নাল হাজারী ওবায়দুল কাদের সাহেবের বাসায় নিষিদ্ধ। ওবায়দুল কাদেরের এক নম্বর লোক হচ্ছেন ফেনীর স্টার লাইনের তেল চুরির অভিযোগে যাকে পিলারের সঙ্গে বেঁধে রেখেছিল সে এখন অবৈধ অস্ত্রের ব্যবসা করেন। সেই ব্যবসার সঙ্গে রাহাত ও মিজানুর রহমান বাদল জড়িত। অস্ত্রগুলো আসে ইন্ডিয়া থেকে। ওবায়দুল কাদেরের সেই এক নম্বর পছন্দের লোক হচ্ছে স্বপন মিয়াজী। দুই নম্বর পছন্দের লোক হচ্ছে নিজাম হাজারী। ঢাকা থেকে আসার পথে গুলিতে নিজাম হাজারী ঝাঁজরা করে দিতে পারে সেই ভয়ে নিজাম হাজারীকে ওবায়দুল কাদের পছন্দ করেন।

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ও দলের সভাপতি শেখ হাসিনা যদি আমাকে ডাকেন তখন আমি সব কথা নেত্রীকে বলব। এরই মধ্যে যদি হত্যা করে ফেলে তাহলে তো আর বলতে পারবো না।'

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন আপনি আমাদের শেষ ঠিকানা।

কোম্পানীগঞ্জে একজন সাংবাদিক ও একজন শ্রমজীবি মানুষ হত্যাকাণ্ডের বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেন কাদের মির্জা।

কোম্পানীগঞ্জে যতগুলো গুলি ও বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে তার সবগুলোই মিজানুর রহমান বাদলের নেতৃত্বে হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘এসব ঘটনায় যতগুলো মামলা হয়েছে তার সবগুলোতে আসামি করা হয়েছে আমাকে, আমার ভাই ও আমার ছেলেকে এবং আমার অনুসারীদেরকে। মুজাক্কির (সাংবাদিক) হত্যাকাণ্ডের সঙ্গেও আমার ৩ জন নিরীহ আওয়ামী লীগ নেতাকে জড়ানো হয়েছে। তাদেরকে শ্যোন এরেস্ট দেখানো হয়েছে। ….সন্ত্রাসের গডফাদার বাদলকে আইওয়াস করার জন্য গত ১১ মার্চ গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাদল কে ৩টি মামলার মধ্যে একটি মামলায় জামিন দিয়েছে আদালত। বাকি দুটি মামলার শুনানির দিন ছিল ২৫ মার্চ। ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশে কোর্ট থেকে বিচারক নেমে যাওয়ার পরেও ৩টি মামলায় বাদলকে জামিন দিয়েছে। কোম্পানীগঞ্জ তথা দেশবাসী এটা জানতে চায় এমন ঘটনা কী করে সম্ভব ?

ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, মওদুদ আহমদের শোকসভার আয়োজন করেছি। কিন্তু আমাকে শোকসভা করতে দেওয়া হয়নি।

‘আমি কোন প্রোগ্রাম করতে পারবো না অথচ মাদকসম্রাট ভূমিদস্যু বাদল জেল থেকে বের হয়ে সংবর্ধনা নেন। গুলি করলো আমাকে আবার মামলায়ও জড়ালো আমাকে,’ বলেন তিনি।

সিএনজি চালক আলা উদ্দিন হত্যা মামলায় ১৬৪ জনের নামে মামলা হয়েছে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, একজন মানুষকে মারতে কি ১৬৪ লোকের প্রয়োজন হয় ? আজ ২০ দিন যাবত ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশে আমার ও আমার লোকজনের বিরোধীতা করা হচ্ছে।

যারা আমাকে পুঁজি করে এবং মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নাম বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা আয় করেছেন তারাই আজ বড় ষড়যন্ত্র করছেন।

তিনি বলেন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি খিজির হায়াত খাঁন মূলত জাসদের লোক। ১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময় খিজির হায়াত খাঁন ওবায়দুল কাদেরকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা করেছিল।

খিজির হায়াত আদম ব্যবসা করে এলাকার অনেক লোককে পথে বসিয়েছিল। ১৯৭২ সালের ব্যাংক ডাকাতির সাথে জড়িত ছিলেন তিনি। খিজির হায়াত এ ঘটনা কাদের মির্জার কাছে স্বীকার করেছেন বলে তিনি দাবি করেন।

এ ব্যাপারে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খাঁনের সঙ্গে কথা বললে, তিনি কাদের মির্জার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘কবিরহাট ব্যাংক ডাকাতির সময় এবং কামাল হত্যাকাণ্ডের সময় আমি নোয়াখালী জেলা কারাগারে ছিলাম। আমি যদি ওবায়দুল কাদেরকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা করে থাকি তাহলে ওবায়দুল কাদের সাহেব ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে কেন আমাকে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির দায়িত্ব এবং ২০০৪ সালে আমাকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির পদে বসালেন? বসুরহাট পৌরসভার মেয়র কাদের মির্জা একজন মানসিক রোগী। তার চিকিৎসার প্রয়োজন।’

কাদের মির্জার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার সঙ্গে কথা বলা যায়নি।

আরও পড়ুন-

প্রধানমন্ত্রী আমাকে শান্ত থাকতে বলেছেন, তাই শান্ত আছি: কাদের মির্জা

আপনার মন্ত্রণালয়ের সব খবর জানি, সব বলে দেব: ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে কাদের মির্জা

 
 
 

Comments

The Daily Star  | English
government changed office hours

Govt office hours 9am-3pm from Sunday to Tuesday

The government offices will be open from 9:00am to 3:00pm for the next three days -- from Sunday to Tuesday -- this week, Public Administration Minister Farhad Hossain said today

1h ago