চীনের সঙ্গে ইরানের ২৫ বছর মেয়াদী সহযোগিতা চুক্তি
চীনের সঙ্গে ২৫ বছর মেয়াদী একটি সহযোগিতা চুক্তি সই করেছে ইরান।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ শনিবার দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ চুক্তিতে সই করেন।
ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানায়, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভাদ জারিফ।
তিনি বলেন, ‘চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই জানিয়েছেন দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক এখন কৌশলগত অংশীদারিত্বের পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং ইরানের সঙ্গে চীন ব্যাপকভাবে সম্পর্কের উন্নতি করতে চাইছে।’
টেলিভিশনে প্রচারিত ওই চুক্তি সই অনুষ্ঠানের আগে ওয়াং ই বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে ইরানের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক প্রভাবিত হবে না, তবে স্থায়ী ও কৌশলগত হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইরান অন্যান্য দেশের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেয়। ইরান এমন দেশ না যারা একটি ফোন পেয়েই অবস্থান পরিবর্তন করে ফেলে।’
তেহরানে চুক্তি সইয়ের আগে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সঙ্গে বৈঠক করেন ওয়াং। বৈঠকে জ্বালানি ও অবকাঠামোর মতো মূল খাতে চীনা বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।
রুহানি ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তিতে ফেরার ক্ষেত্রে সমর্থন দেওয়ায় বেইজিংয়ের প্রশংসা করেছেন। পাশাপাশি চীনের কাছ থেকে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন নেওয়ার কথা জানান তিনি। মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যে করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ ইরান।
রুহানি তার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে বলেন, ‘পারমাণবিক চুক্তি বাস্তবায়ন ও ইউরোপীয় দেশগুলোর বাধ্যবাধকতা পূরণের জন্য দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি আরও বলেন, ‘করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন নিয়ে দুদেশের মধ্যে সহযোগিতা বাড়াতে হবে। আমরা চীন থেকে আরও বেশি ভ্যাকসিন চাই।’
২০১৮ সালে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ডেমোক্র্যাটিক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার নেতৃত্বে হওয়া আলোচিত ইরান পারমাণবিক চুক্তি থেকে সরে আসেন। পাশাপাশি, ইরানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করেন তিনি।
জো বাইডেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে পর্যালোচনা করবেন বলে জানান। তবে ট্রাম্পের আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো এখনও কার্যকর আছে।
ওয়াং বলেন, ‘নতুন প্রশাসনের অধীনে আমেরিকানরা তাদের নীতি পুনর্বিবেচনা করতে ও পারমাণবিক চুক্তিতে ফিরে আসতে চায়। চীন তাদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানায়। আমরা ইরানকে আরও করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন সরবরাহ করবো। ভ্যাকসিনের সরবরাহের ক্ষেত্রে ইরান আমাদের কাছে অগ্রাধিকার পাবে।’
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সা সাইদ খতিবজাদেহ জানান, এই চুক্তিটি বাণিজ্য, অর্থনীতি ও পরিবহন সহযোগিতার জন্য একটি ‘রোডম্যাপ’, যেখানে ‘উভয় পক্ষের বেসরকারি খাতের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া হবে।’
ইরানের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার ও মিত্র দেশ চীন ২০১৬ সালে একমত হয়েছিল যে, আগামী এক দশকে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যকে ১০ গুণেরও বেশি প্রায় ৬০০ বিলিয়ন ডলার বাড়ানো হবে।
Comments