স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী সংকীর্ণ ও দলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে উদযাপন করা হয়েছে, ২০ নাগরিকের বিবৃতি
গৌরবময় স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর দিনটিকে সরকার সংকীর্ণভাবে ও দলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে উদযাপন করেছে বলে জানিয়েছেন দেশের ২০ জন নাগরিক।
আজ শনিবার এক বিবৃতিতে তারা আরও জানান, ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে বিরাজমান বিভিন্ন বিতর্কের কারণে আমন্ত্রণটি ভারতের রাষ্ট্রপতিকে করা হলে তা সঙ্গত হতো।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গতকাল ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। এই গৌরবময় দিনটি সরকার সংকীর্ণভাবে ও দলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে পালন করেছে বলে আমরা মনে করি। দিবসটি পালন উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ কয়েকজন রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে ভারতের সাহায্য বা সহযোগিতার কথা মনে রেখে ভারতের কোনো উপযুক্ত প্রতিনিধিকে এই দিবস উদযাপন উপলক্ষে আমন্ত্রণ করা প্রত্যাশিত ছিল।’
বিবৃতিদাতারা হলেন এম হাফিজ উদ্দিন খান, আলী ইমাম মজুমদার, আনু মুহাম্মদ, বদিউল আলম মজুমদার, সি আর আবরার, জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, পারভীন হাসান, সারা হোসেন, আসিফ নজরুল, শহিদুল আলম, নূর খান, শিরীন হক, হাসনাত কাইয়ুম, জাকির হোসেন, লুবনা মরিয়ম, শারমীন মুরশিদ, ফেরদৌস আজিম, নায়লা জামান খান ও রেহনুমা আহমেদ।
বিবৃতিতে তারা আরও বলেন, আমরা এটাও মনে করি বাংলাদেশ বিরোধী যে কোনো কর্মকাণ্ড ও বক্তব্যের অভিযোগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আগমনের প্রদিবাদ করার অধিকার বাংলাদেশের নাগরিকদের রয়েছে। এই প্রতিবাদ করতে গিয়ে গত কয়েকদিনে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলোসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ সেভাবে পুলিশ ও ছাত্রলীগের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছে তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। হাটহাজারীতে এমন একটি ঘটনায় পুলিশের গুলিতে কয়েকজন মাদ্রাসা ছাত্রের নিহত হওয়ার মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে।
বিবৃতিতে এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে তারা এজন্য পুলিশ সদস্য, কর্মকর্তা ও ব্যক্তিদের বিচার দাবি করেন। তারা মনে করেন, ‘এসব হামলার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের নাগরিকদের মৌলিক অধিকার লংঘন করা হয়েছে এবং আমাদের স্বাধীনতার উৎসবকে কালিমালিপ্ত করা হয়েছে।’
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘আমাদের সবাইকে মনে রাখতে হবে যে, নিয়মতান্ত্রিকভাবে যে কোনো প্রতিবাদ করার সাংবিধানিক স্বাধীনতা ও অধিকার জনগণের আছে। স্বাধীনতার পশ্চাশ বছর পুর্তির সময়ে গুলি চালিয়ে ও নির্যাতন করে এই অধিকার রুদ্ধ করার অপচেষ্টা এদেশের স্বাধীনতার লক্ষ্য ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি নির্মম উপহাস বলে আমরা মনে করি। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ করছি এবং আমাদের গভীর ক্ষোভ জানাচ্ছি।’
Comments