এবার সোধির লেগ স্পিনের ধাঁধায় কাবু বাংলাদেশ
ডেভন কনওয়ে আর উইল ইয়ংয়ের তাণ্ডবে বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ ছিল কঠিন। তবে ছোট মাঠ আর ব্যাটিং স্বর্গ উইকেটে তা মোটেও অসম্ভব কিছু ছিল না। অমন উইকেটের ফায়দা তুলতে পারেননি ব্যাটসম্যানরা। শুরুতে নাঈম শেখের হালকা দ্যুতির পরই পথ হারায় বাংলাদেশ। এরপর দুই ওভারে ৪ উইকেট নিয়ে মাঝের ওভারে মাহমুদউল্লাহর দলের মাঝা ভেঙ্গে দেন লেগ স্পিনার ইশ সোধি। আফিফ হোসেন দারুণ ব্যাট করলেও যা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে আর জেতার অবস্থায় যাওয়া হয়নি।
হ্যামিল্টনে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে নিউজিল্যান্ডের ২১০ রানের জবাবে বাংলাদেশ করতে পেরেছে ১৪৪ রান। ম্যাচ হেরেছে ৬৬ রানের বড় ব্যবধানে। ওয়ানডেতে হোয়াইটওয়াশের পর টি-টোয়েন্টিতেও শুরুটা হয়েছে বেহাল।
বিশাল রান তাড়ায় নেমে তিন চারে শুরু পেয়েছিলেন নাঈম। বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে খেলছিলেন তিনি। আরেক প্রান্তে লিটন দাস এক চার মেরেই বল উঠিয়ে দেন আকাশে। টিম সাউদিকে মারার পর নাঈম লুকি ফার্গুসেনকেও বাউন্ডারি মেরে স্বাগত জানান নাঈম। কিন্তু অতিরিক্ত আগ্রাসণই কাল হয় তার। বল না বুঝে ফ্লিক করতে গিয়েছিলেন। সহজ এলবিডব্লিউতে ১৮ বলে ২৭ করে শেষ হয়েছেন তিনি।
সাউদিকে চার মেরে শুরু সৌম্যেরও। কিন্তু নিজের ব্যাটিংয়ের আসল সুরই যেন তালকাটা তার। পাওয়ার প্লের মধ্যে লেগ স্পিনার ইশ সোধিকে পেয়ে মারবেন না ধরবেন দ্বিধা কাজ করল। গুগলিতে দুনোমুনো করতে করতে ক্যাচ দেন বোলারের হাতেই। ওই ওভারেই গুগলি টের না পেয়ে বাজে এক সুইপের চেষ্টায় বোল্ড মোহাম্মদ মিঠুনও।
৪৪ রানে ৪ উইকেট খুইয়ে তখন ম্যাচের গতিপথ ঠিক করে ফেলেছে বাংলাদেশ। সোধির দ্বিতীয় ওভারে কাট করতে গিয়ে স্টাম্পে টেনে বোল্ড অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহও। ঠিক পরের শেখ মেহেদী বল ঠেকিয়েও বল নিয়ে যান স্টাম্পে! ৫৮ রানে নেই ৬ উইকেট!
এরপর আর খেলার কার্যত বাকি কিছু ছিল না। তবে বাকিটা সময়ে নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছেন আফিফ। পালটা আক্রমণ চালিয়ে খেলছেন ৩৩ বলে ৪৫ রানের এক ইনিংস। সাইফুদ্দিন শেষ পর্যন্ত টিকে করেছেন ৩৪ রান। তাতে একশোর নিচে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কা থেকে রক্ষা মেলে বাংলাদেশের, যাওয়া যায় দেড়শোর কিনারেও। কিন্তু রক্ষা মেলেনি আরেকটি বিব্রতকর হার থেকে।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নামা নিউজিল্যান্ডের প্রথম ওভারেই উইকেট পেয়েছিলেন নাসুম আহমেদ। পরেও দারুণ বল করেছেন তিনি। কিন্তু শুরুটা পরে ভেস্তে যায় অন্যদের সাদামাটা চেষ্টায়।
বাংলাদেশের বোলারদের গুঁড়িয়ে ১০৫ রানের জুটিতে খেলা সহজ করে দেন কনওয়ে আর ইয়ং। কনওয়ে ৫২ বলে ৯২ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন। ইয়ং করেন ৩০ বলে ৫৩ রান। অভিষিক্ত নাসুম ভাল করলেও শরিফুল ইসলাম তার ৪ ওভার থেকে দিয়ে দেন ৫০ রান, ৪৮ রান দিয়ে খরুচে মোস্তাফিজুর রহমানও। আরেক পেসার সাইফুদ্দিনের ৪ ওভার থেকেও এসেছে ৪৩ রা
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নিউজিল্যান্ড : ২০ ওভারে ২১০/৩ (গাপটিল ৩৫, অ্যালেন ০, কনওয়ে ৯২* , ইয়ং ৫৩, ফিলিপস ২৪* ;নাসুম ২/৩০, সাইফুদ্দিন ০/৪৩, শরিফুল ০/৫০, মোস্তাফিজ ০/৪৮ , শেখ মেহেদী ১/৩৭)
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৪২/৮ (নাঈম ২৭, লিটন ৪, সৌম্য ৫, মিঠুন ৪, মাহমুদউল্লাহ ১১ , আফিফ ৪৫ , শেখ মেহেদী ০, সাইফুদ্দিন ৩৪*, শরিফুল ৫, নাসুম ০* ; সাউদি ১/৩৪ , বেনেট ১/২০, ফার্গুসেন ১/২৫, সোধি ৪/২৮ , চাপম্যান ০/৯, ফিলিপস ০/৫, মিচেল ০/২১ )
ফল: নিউজিল্যান্ড ৬৬ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ডেভন কনওয়ে।
সিরিজ: নিউজিল্যাড ৩ ম্যাচ সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে।
Comments