ওয়ানডে সিরিজও ভারতের

ছবি: টুইটার

৫০তম ওভারের প্রথম বলটি স্ট্রেইট ড্রাইভ করেছিলেন স্যাম কারান। ২টি রান হতে পারতো। কিন্তু প্রথম রান নিতে গিয়ে পা পিছলে পরে গেলেন স্যাম কারান। একই সঙ্গে সিরিজটাই যেন ছিটকে দিলেন তিনি। অপর প্রান্তে দুই রানের আশায় দৌড়ে ছিলেন মার্ক উড। ফেরার সুযোগ ছিল না। তবুও ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। ম্যাচও বাঁচানো যায়নি। হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় সফরকারীদের।

রোববার মহারাষ্ট্রে শ্বাসরুদ্ধকর লড়াইয়ে ইংল্যান্ডকে ৭ রানের হারিয়েছে ভারত। ফলে সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতে নিল দলটি। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ১০ বল বাকী থাকতে ৩২৯ রানে অলআউট হয় স্বাগতিকরা। জবাবে শুরু থেকেই চাপে পড়া ইংলিশরা নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ৩২২ রানের বেশি করতে পারেনি।

অথচ ভারত সফরে প্রথম টেস্টেই স্বাগতিকদের হারিয়ে চমক দেখিয়েছিল ইংল্যান্ড। অনেকেই তখন ভেবেছিল এবার হয়তো দারুণ কিছু করে দেখাবে ক্রিকেটের জনক দেশটি। কিন্তু এরপর দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে টেস্ট সিরিজ জিতে নেয় ভারতই। পরে জিতে নেয় টি-টোয়েন্টি সিরিজও। সে ধারায় এবার ওয়ানডে সিরিজও জিতে নিল স্বাগতিকরা।

কার্যত দলীয় ২০০ রানেই ৭ উইকেট হারিয়ে হার দেখে ফেলেছিল ইংলিশরা। কিন্তু এরপর বুক চিতিয়ে লড়াই করেন স্যাম কারান। সঙ্গী হিসেবে পেয়েছিলেন আদিল রশিদ ও মার্ক উডকে।

অষ্টম উইকেটে রশিদের সঙ্গে ৫৭ রানের জুটিতে আশা দেখান। এরপর উডের সঙ্গে গড়েন ৬০ রানের জুটি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পেরে ওঠেননি। ৭ রান দূরেই থামেন তারা।

লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটাই ভালো হয়নি ইংলিশদের। দলীয় ২৮ রানেই দুই ওপেনারকে হারায় তারা। অথচ তাদের ওপেনারই ছিলেন দারুণ ফর্মে। এরপর আরেক ইনফর্ম ব্যাটসম্যান বেন স্টোকসকে হারান দলীয় ৬৮ রানে। কিছু করতে পারেননি ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ জস বাটলারও। দলীয় ৯৫ রানেই চার উইকেট হারিয়ে বড় চাপে পড়ে যায় দলটি।

তবে পঞ্চম উইকেটে লিয়াম লিভিংস্টোনকে নিয়ে ৬০ রানের জুটিতে সে চাপ সামলে নেওয়ার চেষ্টা করেন ডেভিড মালান। কিন্তু এ জুটি ভাঙতে স্কোরবোর্ডে আর ১৩ রান যোগ করতে ফিরে যান এ ব্যাটসম্যানও। তাতে ফের চাপে পড়ে যায় দলটি। এরপর কারানের লড়াইও যথেষ্ট হয়নি।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৯৫ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন কারান। ৮৩ বলে ৯টি চার ও ৩টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। মালানের ব্যাট থেকে আসে ৫০ রান। ৫০ বলে ৬টি চারের সাহায্যে এ রান করেন তিনি। এছাড়া লিভিংস্টোন ৩৬ ও স্টোকস ৩৫ রান করেন।

ভারতের পক্ষে ৬৭ রানের খরচায় ৪টি উইকেট নেন শার্দুল ঠাকুর। ৪২ রানের বিনিময়ে ৩টি উইকেট পান ভুবনেশ্বর কুমার।

এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা পায় ভারত। রোহিত শর্মার সঙ্গে ১০৩ রানের দারুণ এক ওপেনিং জুটি গড়েন শেখর ধাওয়ান। এরপর অবশ্য ১৮ রানের ব্যবধানে দুই ওপেনারসহ অধিনায়ক বিরাট কোহলিকে হারায় তারা। দুই ওপেনারকে ফেরান আদিল রশিদ। দলীয় ১৫৭ রানে আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান লোকেশ রাহুলকেও হারায় তারা। ফলে বেশ চাপে পড়ে যায় স্বাগতিকরা।

তবে পঞ্চম উইকেটে হার্দিক পান্ডিয়াকে সঙ্গে নিয়ে দলের হাল ধরেন রিশাভ পান্ত। ৯৯ রানের জুটি গড়ে শুধু চাপ সামলে নেননি, বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেন তারা। যদিও এরপর সে অর্থে আর কেউ দায়িত্ব নিতে না পারায় ৪৮.২ ওভারে ৩২৯ রানে অলআউট হয়ে যায় তারা। তোপ দাগিয়ে লেজের দিকের ব্যাটসম্যানদের ছাঁটাই করেন মার্ক উড।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭৮ রানের ইনিংস খেলেন পান্ত। ৬২ বলের ইনিংসটি ৫টি চার ও ৪টি ছক্কায় সাজান এ উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৬৭ রান আসে ধাওয়ানের ব্যাট থেকে। ৫৬ বলে ১০টি চারের সাহায্যে এ রান করেন তিনি। ৪৪ বলে ৬৪ রানের ইনিংস খেলেন পান্ডিয়া। ৫টি চার ও ৪টি ছক্কায় নিজের ইনিংস গড়েন এ অলরাউন্ডার। শেষ দিকে ২১ বলে ৩০ রানের কার্যকরী একটি ইনিংস খেলেন শার্দুল ঠাকুর।

ইংলিশদের পক্ষে ৩৪ রানের খরচায় ৩টি উইকেট পান উড। ২টি শিকার রশিদের।

Comments

The Daily Star  | English

Sheikh clan’s lust for duty-free cars

With an almost decimated opposition and farcical elections, a party nomination from the ruling Awami League was as good as a seat in the parliament.

7h ago