ইছামতী নদীর দখলদাররা আমরণ অনশনে, উচ্ছেদ বন্ধে উকিল নোটিশ

পাবনার ইছামতী নদীর দখল উচ্ছেদ অভিযান বন্ধের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছেন দখলদাররা। আজ সোমবার সকাল থেকে শুরু হওয়া অনশন উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে জানান আন্দোলনকারীরা।
Pabna.jpg
নির্ধারিত অভিযান শুরুর আগ মুহূর্তে আমরণ অনশন শুরু করেছেন ইছামতী নদীর দখলদাররা। ছবি: স্টার

পাবনার ইছামতী নদীর দখল উচ্ছেদ অভিযান বন্ধের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছেন দখলদাররা। আজ সোমবার সকাল থেকে শুরু হওয়া অনশন উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে জানান আন্দোলনকারীরা।

ইতোমধ্যে দখল অভিযান বন্ধ চেয়ে একটি উকিল নোটিশ পাঠানো হয়েছে জেলা প্রশাসনে।

আগামীকাল থেকে ইছামতী নদীর অবৈধ দখল উচ্ছেদ অভিযান শুরুর সব প্রস্তুতি নেওয়া হলেও চলমান পরিস্থিতিতে উচ্ছেদ অভিযান নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

পাবনাবাসীর দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে কাঙ্ক্ষিত ইছামতী নদীর অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে নদী খননের মাধ্যমে পানির প্রবাহ ফিরিয়ে আনা ও নদী পাড়ে রাস্তা নির্মাণ করে শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধির কাজ শুরুর জন্য ৩০ মার্চ থেকে অভিযান চালানোর সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে জেলা প্রশাসন।

উচ্ছেদ অভিযান চালানোর জন্য এবং একইসঙ্গে নদী পাড়ে রাস্তা নির্মাণের জন্য একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে প্রায় তিন কোটি টাকার কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে বলে জানায় পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ড।

নির্ধারিত অভিযান শুরুর আগ মুহূর্তে সোমবার সকাল থেকে পাবনা শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ইছামতী নদীর দুই পাড়ের শত শত দখলদার পাবনা প্রেসক্লাবের সামনে আমরণ অনশন শুরু করেছেন।

কাফনের কাপড় সদৃশ পোশাক পরিহিত দখলদাররা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

প্রচণ্ড রোদ আর গরমে অনশনে অংশ নেওয়া দুজন নারী অসুস্থ হয়ে পড়লে সোমবার দুপুরে তাদের পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়।

আন্দোলনকারীদের সংগঠক পাবনা চেম্বারের পরিচালক মাসুদুর রাহমান মিন্টু দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ইছামতী নদীর দুই পাড়ে কয়েক হাজার বসতি চারটি রেকর্ডে জমির মালিকানা নিয়ে বসবাস করছে।’

১৯৩৬ সালের সিইস পেটি রেকর্ড,  ১৯৬২ সালের এসএ রেকর্ড, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর আরএস রেকর্ড ও হালের বিএস রেকর্ডে নাম থাকলেও এসব বৈধ দখলদারদের অবৈধ বলে উচ্ছেদ করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে বলে দাবি করেন মিন্টু।

এ বিষয়ে পাবনা জেলা প্রশাসক কবির মাহামুদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘দখলদাররা ইতোমধ্যে একটি উকিল নোটিশ পাঠিয়েছেন। নোটিশটি আমরা হাতে পেয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠিয়েছি। আইনি দিক বিবেচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তবে উচ্ছেদ অভিযান নির্ধারিত সময়ে শুরু বা বন্ধ রাখার ব্যাপারে নির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি তিনি।

৮৪ কিলোমিটার দীর্ঘ ইছামতী নদীর পাবনা পৌরসভার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত প্রায় ৯ কিলোমিটার এলাকা অবৈধ দখল, দূষণ আর পানির প্রবাহের অভাবে অস্তিত্ব সংকটে।

পাবনার পদ্মা নদী থেকে উৎপন্ন হয়ে বিভিন্ন উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে পাবনার বেড়া উপজেলার যমুনা নদীতে মিশেছে ইছামতী নদী। উৎসমুখ দখল, ভরাট হয়ে যাওয়ায় নদীতে এখন পানির প্রবাহ নেই। পাশাপাশি সীমাহীন দখলে মৃতপ্রায়।

ইছামতী নদীতে প্রাণ ফেরাতে ৩৮ কিলোমিটার এলাকা খনন করে পানি প্রবাহ ফিরিয়ে আনতে প্রায় এক হাজার ২২০ কোটি টাকার প্রকল্পের ডিপিপি অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানান পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তারা।

আরও পড়ুন:

ইছামতীর প্রাণ ফেরাতে উচ্ছেদ অভিযান-খনন এ মাসেই

Comments

The Daily Star  | English

Labour bill put on the shelf

In an almost unheard-of move, President Mohammed Shahabuddin has sent a labour law amendment back to parliament for reconsideration, expressing concern over the proposed punishment of workers for wrongdoings.

4h ago