বইপ্রেমীদের ডিজিটাল প্লাটফর্ম ই-বুক
ই-বুক ও মুদ্রিত বই— উভয়ই একটি বইয়ের দুটি ভিন্ন রূপ। এখন কে কোন ভার্সন বেছে নেবেন তা পাঠকের অগ্রাধিকার এবং স্বাচ্ছন্দ্যের বিষয়।
প্রযুক্তি সবসময় মানুষের জীবনযাত্রাকে প্রভাবিত করে থাকে। তাই বলে এটা বলা ঠিক হবে না— সবাই ই-বুক পছন্দ করেন। তবে, আধুনিক সময়ে এসে অনেকেই ই-বুকের দিকে ঝুঁকছেন। বিশেষ করে, নানা দেশে তরুণ প্রজন্মের কাছে ই-বুকের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ছে। এর পেছনে অবশ্য কিছু যুক্তিসঙ্গত কারণ আছে।
ই-বুক আসলে কী? ই-বুক হলো একটি মুদ্রিত বইয়ের ডিজিটাল ফরম্যাট। এটি যেকোনো রিডিং ডিভাইসে ডাউনলোড করা যায়। যেমন, চাইলেই যে কেউ তার স্মার্টফোন বা ট্যাবলেটে কোনো ঝামেলা ছাড়াই ই-বুক ডাউনলোড করতে পারেন। এটা ঠিক একটি মুদ্রিত বইয়ের মতোই।
বই প্রেমীদের জন্য বিশ্বে ই-বুকের বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্ম আছে। সেগুলোতে প্রবেশ করে পছন্দের বইয়ের লিংকে ক্লিক করলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে রিডিং ডিভাইসে ডাউনলোড হয়ে যায়। একবার ডাইনলোড হয়ে গেলে পড়তে ইন্টারনেট সংযোগের প্রয়োজন হয় না।
এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো— বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের যেকোনো বই খুব সহজেই মুহূর্তের মধ্যে ই-বুকের প্লাটফর্মগুলো থেকে ডাউনলোড করা যায়। তবে, কিছু কিছু বই বিনামূল্যে পাওয়া গেলেও কিছু বইয়ের জন্য চার্জ প্রযোজ্য হয়।
বিশ্বব্যাপী কেন ই-বুকের চাহিদা বাড়ছে তার কিছু কারণ এখানো তুলে ধরা হলো:
দ্রুত সময়ে নতুন বই পাওয়া যায়
অনেকেই অপেক্ষা করতে পছন্দ করেন না। ই-বুকের চাহিদা বাড়ার অন্যতম কারণ এটি। ই-বুক অপেক্ষার সময়সীমা অনেক কমিয়ে দিয়েছে। একটি বই প্রকাশিত হওয়ার পর সেটির মুদ্রিত কপি হাতে পেতে যথেষ্ট সময় লাগে। আর যদি সেটি হয় অন্য কোনো দেশের, তাহলে সেই সময়সীমা বেশি হয়।
কিন্তু, ই-বুকের কল্যাণে বইটি প্রকাশের পরদিনও রিডিং ডিভাইসে ডাউনলোড করা সম্ভব। ফলে, মুদ্রিত কপি হাতে পেতে দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হয় না। শুধুমাত্র এক ক্লিকেই বইটি ডিভাইসে ডাউনলোড হয়ে যায়।
ভ্রমণবান্ধব
অনেকেই ভ্রমণে বই পড়তে পছন্দ করেন। কিন্তু, খুব বেশি মুদ্রিত বই নিয়ে ভ্রমণ করা কঠিন। কারণ, সেগুলো ভারি হয়ে থাকে। তাই মুদ্রিত বইয়ের চমৎকার বিকল্প ই-বুক। এর অতিরিক্ত ওজন না থাকায় এটি ভ্রমণবান্ধব।
একটি ডিভাইসে অসংখ্য বইয়ের ই-বুক সংস্করণ রাখা সম্ভব। তাই, মোবাইলে বা ট্যাবলেটের মধ্যে অনেক বই ডাউনলোড করে ভ্রমণ করাটাই বর্তমানে বুদ্ধিমানের কাজ।
ইচ্ছে হলেইে ডিভাইস থেকে পছন্দের বই পড়া সম্ভব। এতে প্রয়োজন নেই ইন্টারনেট সংযোগ।
চোখের জন্য আরামদায়ক
ই-বুকের আরেকটি সুবিধা হলো— চোখের ওপর কম চাপ দিয়ে এটি পড়া যায়। কারণ, ডিডাইসের স্ক্রিনের আলো চোখের জন্য আরামদায়ক পর্যায়ে নিয়ে ই-বুক পড়া সম্ভব। আবার যেকোনো অংশের লেখা বড় করে বা ছোট করে পড়া যায়। এমনকি, চাইলে ফন্টও পরিবর্তন করে পড়া সম্ভব।
পকেট লাইব্রেরি
ই-বুকের জন্য খুব কম জায়গা লাগে। ই-বুক সংগ্রহ করতে কোনো নির্দিষ্ট জায়গার প্রয়োজন হয় না। কম্পিউটার বা রিডিং ডিভাইসে শত শত কিংবা হাজার হাজার ই-বুক সংগ্রহে রাখা যায়। এতে ডিভাইসটি হয়ে উঠবে একটি ডিজিটাল লাইব্রেরি। আর সেই লাইব্রেরি থাকবে পাঠকের ব্যাকপ্যাকে বা পকেটে।
অর্থাৎ, একটি লাইব্রেরি পকেটে নিয়ে সারাবিশ্ব ঘুরতে পারবেন একজন বইপ্রেমী। আবার ঘরের লাইব্রেরির মতো এটিকে সাজিয়ে-গুছিয়ে রাখার প্রয়োজন হয় না। ডিভাইসটি যতোই ঘাটাঘাটি করা হোক না কেন ই-বুকগুলো এলোমেলো হবে না।
Comments