রাজশাহীর ভাষা সৈনিক আবুল হোসেন আর নেই
ভাষা সৈনিক মো. আবুল হোসেন আর নেই। আজ বুধবার বিকেল চারটায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।
আবুল হোসেনের ছেলে আবুল হাসনাত বিদ্যুৎ বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন।
আবুল হাসনাত বিদ্যুৎ জানান, তার বাবা কয়েক সপ্তাহ ধরে বার্ধক্যজনিত জটিলতায় ভুগছিলেন। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে আজ সকালে তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে বিকেলে তাকে রামেকে স্থানান্তর করা হয়।
ভাষা আন্দোলনের সময় ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি রাতে রাজশাহীতে দেশের প্রথম শহীদ মিনার নির্মাণকারীদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন মো. আবুল হোসেন।
আবুল হোসেন ১৯৩৪ সালের ৩ জুলাই ভারতের মালদায় জন্মগ্রহণ করেন। পঞ্চাশের দশকে তিনি পরিবারের সঙ্গে রাজশাহীতে এসে রাজশাহী কলেজে ভর্তি হন।
‘রাজশাহীতে ভাষা আন্দোলন’ বইয়ের লেখক ড. তসিকুল ইসলাম রাজা জানান, ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়দের মো. আবুল হোসেন অন্যতম ছিলেন।
তিনি জানান, ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি ঢাকায় হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদকারীদের মধ্যে আবুল হোসেন অন্যতম। সে রাতে রাজশাহীতে শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় ভাষা আন্দোলনকারী ছাত্ররা। ঢাকার শহীদদের স্মরণে সেই রাতেই রাজশাহী কলেজের ছাত্রাবাসের মূল ফটকের কাছে ইট ও মাটি দিয়ে একটি স্তম্ভ নির্মাণ করা হয়।
রাজশাহীর স্থানীয়রা এটাকেই দেশের প্রথম শহীদ মিনার হিসেবে বিবেচনা করেন বলে জানান ড. তসিকুল। তবে, তত্কালীন পাকিস্তানি পুলিশদের সহায়তায় মুসলিম লীগ কর্মীরা সূর্যোদয়ের আগেই স্তম্ভটি গুঁড়িয়ে দিয়েছিল।
ভাষা আন্দোলনে অংশ নেওয়ার কারণে তিনি জেলও খেটেছেন।
ভাষা সৈনিক আবুল হোসেনের মৃত্যুতে রাজশাহীর মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, এমপি ফজলে হোসেন বাদশা, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন, প্রেসক্লাব শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে।
শ্রদ্ধা নিবেদনের পরে আবুল হোসেনকে রাতে টিকাপাড়া কবরস্থানে দাফন করা হবে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।
Comments