করোনার দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে জনগণের সহায়তা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হঠাৎ করে খুব দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে আনতে জনগণের সহায়তা চেয়েছেন।
বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, বিয়ে-শাদীর অনুষ্ঠান ঘরোয়া ভাবে করা, জনসমাগম যাতে না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা, অযথা বাইরে বা দোকানপাটে ঘুরাঘুরি না করার আহ্বান জানান তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে শোক প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা এই আহ্বান জানান।
চলমান সংসদের সরকার দলীয় সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর মৃত্যুতে ওই শোক প্রস্তাব আনা হয়। গত ১১ মার্চ তিনি মারা যান।
পাশাপাশি দেশের বিশিষ্ট জনদের মৃত্যুতেও সংসদে শোক প্রকাশ করা হয়।
সাধারণত চলমান সংসদের কোনো সদস্যের মৃত্যুর পরের অধিবেশনের প্রথম বৈঠক শোক প্রকাশের পর মুলতবি করা হয়। সে অনুযায়ী, মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আজ বৈঠকের অন্যান্য কার্যক্রম মুলতবি করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, ‘করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা হয়েছিল। কিন্তু আবার বিশ্বব্যাপী প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশেও গত কিছুদিন ধরে হঠাৎ দ্রুত সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনেকে হয়ত মনে করছে, যেহেতু টিকা নিয়েছেন আর কিছু হবে না। স্বাস্থ্যবিধি মানা বন্ধ হয়েছে। যত বিয়ের অনুষ্ঠান হয়েছে সেখানে অনেকে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, যারা পর্যটনে গেছে সেখানে আক্রান্ত হয়েছেন।’
সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের সরকারের ১৮ দফার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আবার ধীরে ধীরে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার চেষ্টা করছে। সেজন্য জনগণের সহায়তা দরকার। সেই সঙ্গে সবসময় মাস্ক পরা, নাকে গরম পানির ভাপ নেওয়া ও নাকে সরিষার তেল দেওয়ার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনেক সংসদ সদস্য ও বিশিষ্ট জনকে হারিয়েছি এই করোনার কারণে। এটা দুর্ভাগ্যজনক। মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী একজন ভালো সংগঠক ছিলেন। কয়েকদিন আগেও কথা হল। সবসময় সক্রিয় ছিল। চিকিৎসার জন্য ব্যবস্থা নিতে না নিতেই চলে গেলেন। মানুষের জন্য কাজ করার আগ্রহ ছিল তার।’
আলোচনায় অংশ নেন সরকারি দলের সংসদ সদস্য ফারুক খান, নুরুল ইসলাম নাহিদ, পীর ফজলুর রহমান, আবদুস শহীদ, নুরুল ইসলাম, বিএনপির হারুনুর রশীদ, জাতীয় পার্টির মসিউর রহমান রাঙা প্রমুখ।
আলোচনা শেষে সর্বসম্মতভাবে শোক প্রস্তাব সংসদ এ গৃহীত হয়।
মহামারির মধ্যেও সংবিধানের নিয়ম রক্ষায় সকাল ১১টায় বসে চলতি সংসদের দ্বাদশ অধিবেশন। সংসদ সদস্যরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে অধিবেশনে যোগ দেন।
বৈঠকের শুরুতে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী চলতি অধিবেশনের সভাপতিমণ্ডলী মনোনয়ন করেন।
সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যরা হলেন- আব্দুল কুদ্দুস, মৃণাল কান্তি দাশ, নজরুল ইসলাম, মুজিবুল হক ও শাহাদারা মান্নান।
স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের অনুপস্থিতিতে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যদের মধ্যে অগ্রবর্তীজন অধিবেশনে সভাপতিত্ব করবেন।
সভাপতিমণ্ডলীর মনোনয়নের পর কুয়েতের আদালতে নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারি অপরাধে দণ্ডিত হওয়ায় লক্ষ্মীপুর-২ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য শহিদ ইসলাম পাপুলের সংসদ সদস্য পদ বাতিল হওয়ার বিষয়টি জাতীয় সংসদকে অবহিত করেন স্পিকার।
Comments