মিয়ানমারে আজ গুলিতে নিহত ৫, বন্ধ ইন্টারনেট

মিয়ানমারে সেনাবিরোধী বিক্ষোভে আজ শনিবার পুলিশের গুলিতে অন্তত পাঁচ জন নিহত হয়েছেন। গতকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশটিতে ওয়্যারলেস ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ করে দিয়েছে সামরিক সরকার।
Myanmar
মিয়ানমারের লাউংলন শহরে সেনাবিরোধী বিক্ষোভ। ছবি: রয়টার্স ফাইল ফটো

মিয়ানমারে সেনাবিরোধী বিক্ষোভে আজ শনিবার পুলিশের গুলিতে অন্তত পাঁচ জন নিহত হয়েছেন। গতকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশটিতে ওয়্যারলেস ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ করে দিয়েছে সামরিক সরকার।

আজ রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১ ফেব্রুয়ারি সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশটিতে প্রায় প্রতিদিনই বিক্ষোভে গুলি চালিয়েছে পুলিশ। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত দেশটিতে গুলিতে পাঁচ বিক্ষোভকারীর নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে মনিওয়া শহরে তিন জন, বাগো শহরে এক জন ও দক্ষিণে থাটন শহরে এক জনের মৃত্যু হয়েছে।

এখন পর্যন্ত মিয়ানমারে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ৫৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ৪৬ জন শিশু।

দমন-নিপীড়নের পরেও প্রতিবাদকারীরা প্রতিদিন রাস্তায় নামছেন, বিক্ষোভ করছেন। রাতেও মোমবাতি জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন।

মিয়ানমারে তথ্যপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে ক্ষমতাসীন সেনা সরকার। সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে সেনাবিরোধী আন্দোলনকারীদের ওপর দমন-নিপীড়নের ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেনা সরকারের বিরোধী আন্দোলন জোরালো হতে শুরু হয়।

সেনা সরকার ফেসবুকের মতো প্ল্যাটফর্ম নিষিদ্ধ করলেও সমালোচকরা ভিপিএনসহ বিকল্প পদ্ধতিতে ফেসবুক ব্যবহার চালিয়ে যায়। এর আগে দেশটিতে মোবাইল ডেটা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। গতকাল থেকে কন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ওয়্যারলেস ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিষেবাও। ফলে, দেশটিতে ইন্টারনেট ব্যবহার কমে গেছে। তবে, এখনও কিছু পোস্ট ও ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করা হচ্ছে।

অনলাইনে সেনা সরকারের বিরুদ্ধে যারা সমালোচনা করছেন তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করছে সামরিক সরকার।

মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম স্থানীয় সময় শুক্রবার রাতে জানায়, দেশটিতে ১৮ জন তারকার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এদের মধ্যে দুজন সাংবাদিকও আছেন। তারা প্রত্যেকেই সামরিক শাসনের বিরোধিতা করে কথা বলেছিলেন।

রয়টার্স জানায়, তাদেরকে বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।

এ প্রসঙ্গে মিয়ানমারের অভিনেত্রী পিং ফিয়ে থু ফেসবুকে বলেন, ‘পরোয়ানা জারি হোক বা না হোক, যতক্ষণ বেঁচে থাকবো সামরিক স্বৈরশাসনের বিরোধিতা করে যাবো। সেই সরকারের সমালোচনা করে যাবো, যারা নিপীড়ন করছে, হত্যা করছে। বিপ্লব অবশ্যই জয়ী হবে।’

পিং ফিয়ো থু ইয়াঙ্গুন শহরে নিয়মিত বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নিয়েছেন। তবে, বর্তমানে তার অবস্থান তাত্ক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

দেশটির গণমাধ্যম এমআরটিভি জানায়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা করায় ১৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা অভিযোগপত্রে স্ক্রিনশট ও ফেসবুক প্রোফাইল লিংকও সংযুক্ত করা হয়েছে।

এমআরটিভির ইউটিউব চ্যানেল ও টুইটার আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে সেনা সরকার।

মিয়ানমারে ইন্টারনেট বন্ধ ও তথ্য প্রবাহ নিয়ন্ত্রণের নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

আরও পড়ুন:

এবার মিয়ানমারে ‘গেরিলা’ আক্রমণের ডাক

মিয়ানমারে গুলিতে অন্তত ৪৩ শিশু নিহত: সেভ দ্য চিলড্রেন

মিয়ানমারে হত্যাযজ্ঞ বন্ধে নিরাপত্তা পরিষদের উদ্যোগ আহ্বান

চীন-রাশিয়ার বিরোধিতায় আবারও মিয়ানমার নিয়ে বিবৃতি দিতে পারেনি নিরাপত্তা পরিষদ

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা পরিষদের বিবৃতি আটকে দিলো চীন

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান নিরাপত্তা পরিষদকে

সু চি ‘সুস্থ’ আছেন: আইনজীবী

বিক্ষোভ করলে মাথায় গুলি লাগতে পারে: মিয়ানমার সেনাদের হুমকি

মিয়ানমারে সেনাবিরোধী বিক্ষোভে নিহত ৩ শতাধিক

মিয়ানমারে সেনাবিরোধী বিক্ষোভে গুলিতে নিহত আরও ৯০

সু চির বিরুদ্ধে মিয়ানমার পুলিশের মামলা

মিয়ানমারে আমাদের বিনিয়োগে প্রভাব পড়বে না: জাপান

মিয়ানমারে চীনের বিনিয়োগে বিলম্ব ঝুঁকি

যুক্তরাষ্ট্রের অবরোধ ঝুঁকিতে মিয়ানমার

‘সু চি সরকারের বেশিরভাগ ক্ষমতা সামরিক বাহিনীর হাতেই ছিল’

রোহিঙ্গা প্রতিক্রিয়া: সু চি-সেনাবাহিনী একই

অভ্যুত্থান মেনে না নেওয়ার আহ্বান সু চির

যে কারণে সু চিকে সরিয়ে ক্ষমতা নিলো সেনাবাহিনী

মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের নিন্দায় বিশ্ব সম্প্রদায়

‘নির্বাচনে কারচুপি’র অজুহাতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থান

মিয়ানমারে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও গণতন্ত্র চায় বাংলাদেশ

মিয়ানমার: ১৯৪৮ থেকে ২০২১

Comments

The Daily Star  | English

How Islami Bank was taken over ‘at gunpoint’

Islami Bank, the largest private bank by deposits in 2017, was a lucrative target for Sheikh Hasina’s cronies when an influential business group with her blessing occupied it by force – a “perfect robbery” in Bangladesh’s banking history.

8h ago