ফখর জামানের ৭ রানের আক্ষেপ, হারল পাকিস্তান
এক প্রান্তে বুক চিতিয়ে প্রায় শেষ পর্যন্ত লড়াই করলেন ফখর জামান। কিন্তু সতীর্থরা সমর্থন দিতে পারলেন না। শেষ দিকে স্ট্রাইক ধরে খেলতে চেয়েছিলেন তবে শেষ ওভারের প্রথম বলে ২ রান নিতে গিয়ে ব্যর্থ হন। রানআউট ফিরতে হয় তাকে। তাতে হাতছাড়া হয় দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরি করার সুবর্ণ সুযোগ। আর তার আউটের সঙ্গে সঙ্গে শেষ হয় যায় পাকিস্তানের সব আশা। হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তাদের।
জোহানসবার্গে পাকিস্তানকে ১৭ রানে হারিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ফলে তিন ম্যাচে ওয়ানডে সিরিজে ১-১ এ সমতায় ফিরলো স্বাগতিকরা। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ৩৪১ রান করে তারা। জবাবে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ৩২৪ রানের বেশি করতে পারেনি পাকিস্তান।
তবে এদিন পাকিস্তানের জয়ের চেয়ে বেশি দৃষ্টি ছিল ফখর জামানের ব্যক্তিগত স্কোরের দিকে। কারণ সতীর্থরা যখন একে একে ফিরে গেছেন সাজঘরে তখন একাই পাকিস্তানের আশা জিইয়ে রেখেছিলেন তিনি। এগিয়ে যাচ্ছিলেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরির দিকে। এর আগে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২১০ রানের একটা ইনিংস আছে তার। এবার আরেকটি ডাবল হলো না অল্পের জন্য। লং অন থেকে করা এক থ্রো তার সব আশা শেষ করে দেয়। সরাসরি স্টাম্প ভাঙলে মাথা নিচু করেই মাঠ ছাড়তে হয় তাকে।
শেষ ওভারে আউট হওয়ার আগে ১৯৩ রানের দারুণ ইনিংস খেলেন ফখর। ১৫৫ বলের ইনিংসটি সাজাতে ১৮টি চার ও ১০টি ছক্কা মেরেছেন। ফখর ছাড়া হাফসেঞ্চুরি করতে পারেননি দলের আর কেউ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩১ রান অধিনায়ক বাবর আজমের।
লক্ষ্য তাড়ায় পাকিস্তানের শুরুটাই ভালো হয়। দলীয় ৭ রানে ইমাম-উল-হককে হারিয়ে বসে পাকিস্তান। এরপর আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান অধিনায়ক বাবরকে নিয়ে ৬৩ রানের জুটিতে প্রাথমিক চাপ সামলে নিয়েছিলেন ফখর। কিন্তু এ জুটি ভাঙতেই আনরিক নরকিয়ার তোপে পড়ে দলটি। ১৫ রানের ব্যবধানেই হারায় ৩টি উইকেট। তাতে বড় চাপে পড়ে যায় সফরকারী দলটি। এরপর স্কোরবোর্ডে ৩৫ রান পর হারায় আরো একটি উইকেট।
পরে ষষ্ঠ উইকেটে আসিফ আলিকে নিয়ে ইনিংস মেরামতের কাজে নামেন ফখর। স্কোরবোর্ডে ৬৬ রান যোগ করেন এ দুই ব্যাটসম্যান। তাতে কিছুটা স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল দলটি। কিন্তু এই জুটি ভাঙতে ১৯ রানের ব্যবধানে দুটি উইকেট হারিয়ে ফের চাপে পড়ে যায় তারা। পরে শুরু হয় ফখর শো। একাই ধুমধাড়াক্কা ব্যাটিং করে দলকে জয়ের পথে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু শেষ ওভারে তার রানআউটেই শেষ হয়ে যায় সব আশা।
দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে ৬৩ রানের খরচায় ৩টি উইকেট নেন নরকিয়া। ২টি উইকেট পেয়েছেন আন্দিলে ফেলুকুয়ায়ো।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো করে দক্ষিণ আফ্রিকা। এইডেন মার্করাম ও কুইন্টন ডি ককের ওপেনিং জুটিতে আসে ৫৫ রান। এরপর মার্করাম ফিরে গেলে অধিনায়ক টেম্বা বাভুমাকে নিয়ে ১১৪ রানে আরো একটি দারুণ জুটি গড়েন। ককের বিদায়ের পর রাসি ভ্যান ডার ডাসেনকে নিয়ে অধিনায়ক আরও গড়েন ১০১ রানের জুটি। তাতেই বড় সংগ্রহের ভিত পেয়ে যায় স্বাগতিকরা। এরপর নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারালেও মিলারের ঝড় ব্যাটিংয়ে বিশাল সংগ্রহই পায় দক্ষিণ আফ্রিকা।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৯২ রানের ইনিংস খেলেন অধিনায়ক। ১০২ বলে ৯টি চারের সাহায্যে এ রান করেন তিনি। ককের ব্যাট থেকে আসে ৮০ রান। ৮৬ বলে ১০টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে এ রান সংগ্রহ করেন এ উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান। ৩৭ বলে ৬টি চার ৪টি ছক্কা ৬০ রান করেন ডাসেন। ২৭ বলে সমান ৩টি করে চার ও ছক্কায় ৫০ রানে অপরাজিত থাকেন মিলার। মার্করাম করেন ৩৯ রান।
পাকিস্তানের পক্ষে ৫৪ রানের খরচায় তিনটি উইকেট নিয়ে দিনের সেরা বোলার হারিস রউফ।
Comments