শ্বাসরোধে হত্যার পর করোনায় মৃত্যু বলে মরদেহ দাফনের চেষ্টা, আদালতে জবানবন্দি
পালিত সন্তানের সঙ্গে টিভি দেখাকে কেন্দ্র করে ঝগড়ার এক পর্যায়ে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। পরে অপরাধ ঢাকতে করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছে দাবি করে মরদেহ দাফনের চেষ্টা করেন। তবে, পুলিশের তদন্তের পর বেরিয়ে আসে মূল ঘটনা।
চট্টগ্রামের আকবরশাহ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশি তদন্তের পর শনিবার রাতে সুমি আক্তার (৩০) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার সুমি আক্তার রবিবার বিকালে পালক মেয়ে কুলসুম আক্তার হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার দায় স্বীকার করে মহানগর হাকিম সরওয়ার জাহানের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
আকবরশাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জহির হোসেন দ্যা ডেইলি স্টারকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘গত বছর করোনার সময় জুলাই মাসের তিন তারিখ পুলিশ সুমি আক্তারের বাসার সামনে থেকে মরদেহ গোসলের সময় মরদেহ উদ্ধার করে। কুলসুম করোনাকালীন অসুস্থতা (জ্বর, সর্দি, কাশি) নিয়ে মারা গেছেন বলে সবাইকে জানিয়েছিলেন সুমি আক্তার।’
‘পরে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এই মৃত্যুর ঘটনায় পরে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলাও হয়,’ বলেন ওসি জহির।
‘সুমি আক্তার কুলসুমের চাচী। ছোটবেলায় কুলসুমের বাবা মারা গেলে তার মা অন্যত্র চলে যায়। তখন থেকেই চাঁদপুরে দাদী ও ফুফুর কাছেই থাকতো সে। তার চাচা সৌদি প্রবাসী আলমগীর তাকে তার বাসায় নিয়ে আসে পালক মেয়ে হিসেবে। তবে. বিষয়টি সুমি আক্তার মন থেকে মেনে নিতে পারেননি। এলাকাবাসী আমাদের জানিয়েছেন কুলসুম বাসার কাজও করতো এবং সুমি আক্তার তাকে প্রায়শ মারধর করতেন,’ বলেন ওসি।
পুলিশ কর্মকর্তা জহির বলেন, ‘গত বছরের ২ জুলাই রাত সাড়ে আটটার সময় সুমি আক্তার পালক মেয়ের সঙ্গে টিভিতে কার্টুন দেখা নিয়ে ঝগড়া করেন। এক পর্যায়ে কুলসুমকে গলাটিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং বাসায় সারারাত মরদেহ রেখে দেয়। সকালে প্রতিবেশীদের কাছে অসুস্থ হয়ে মারা গেছে বলে জানায়।’
‘পুলিশ গত শনিবার ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত হয় এবং তাকে গ্রেপ্তার করে,’ বলেন ওসি।
Comments