হাসপাতালের করুণ চিত্র
করোনায় আক্রান্ত মোজাম্মেল হককে গতকাল সোমবার সকালে যখন অ্যাম্বুলেন্সে করে রাজধানীর মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলো, তখন নিশ্চিতভাবে বোঝা যাচ্ছিল যে জরুরিভিত্তিতে তার অক্সিজেন সাপোর্ট দরকার।
বাতাসের জন্যে হাঁসফাঁস করতে থাকা মোজাম্মেলের মুখে কোনোমতে একটি অক্সিজেন মাস্ক ধরে রাখেন তার বিশ্ববিদ্যালয়-পড়ুয়া ছেলে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে একটি শয্যার জন্যে করুণ আর্জি জানায় ছেলে, যাতে বাবা কিছুটা চিকিৎসা পায়। কিন্তু, সেখানে একটি স্টিলের স্ট্রেচার ছাড়া আর কিছুই ছিল না। সেটাই মোজাম্মেলকে দেওয়া হলো।
হাসপাতালের একজন কর্মী স্ট্রেচারটিকে ঠেলে জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলেন এবং প্রায় ১০ মিনিট ধরে মোজাম্মেলকে অক্সিজেন সাপোর্ট দেওয়া হলো। তখনই হাসপাতালে আনা হলো আরেকজন গুরুতর রোগীকে। নিরুপায় হয়ে মোজাম্মেলের কাছ থেকে সিলিন্ডারটি নিয়ে নতুন আসা রোগীকে অক্সিজেন দিতে শুরু করলেন ওই হাসপাতালকর্মী।
হাসপাতালের অন্য একটি অংশে ভ্যাকসিন কর্মসূচি চলার কথা। কিন্তু, সেখানে একটি সাইনবোর্ডের মাধ্যমে ভ্যাকসিন নিতে আসা মানুষদের ‘ফিরে যেতে’ বলা হয়েছে।
আবদুস সোবহান ও তার স্ত্রী ভ্যাকসিন কার্ড নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু, তাদের ভ্যাকসিন না নিয়েই চলে যেতে হচ্ছে। গতকাল তাদের ভ্যাকসিন দেওয়ার দিন ছিল।
সোবহান বলেন, ‘তারা আমাদেরকে জানিয়েছে যে এখানে এখনো ভ্যাকসিন এসে পৌঁছায়নি। যেহেতু তারা জানে না কবে আসবে, তাই তারা আমাদেরকে আবার আসার কোনো নির্দিষ্ট দিনও জানাতে পারেনি।’
করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য আসা মানুষের লাইনে মুনির নামের একজন গতকাল সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে জানান, তিনি ভোরবেলায় এসে লাইনে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু, এখনো পরীক্ষা করানোর সুযোগ পাননি।
‘আমার সামনে এখনো ৭০ জন আছেন’, বলেন তিনি।
Comments