কলাপাড়ায় লকডাউন কার্যকরে যুবককে মারধরের অভিযোগ, ইউএনও অবরুদ্ধ

বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর সঙ্গে পুলিশের ঘণ্টাব্যাপী ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ছবি: স্টার

করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সচেতনতামূলক প্রচারনাকালে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এক যুবককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয়রা। এসময় ইউএনওকে প্রায় আধঘণ্টা আবরুদ্ধ করে রাখা হয়।

গতকাল সোমবার রাত ৮টার দিকে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ইউএনওকে ঘটনাস্থলে অবরুদ্ধ করে রাখলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। এ নিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে পুলিশের ঘণ্টাব্যাপী ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে চলমান লকডাউন কার্যকর করতে ও সচেতনতামূলক প্রচারণার জন্য কলাপাড়ার ইউএনও আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদুল হক কুয়াকাটা চৌরাস্তায় কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন। এসময় একটি ‘তালাশ’ পত্রিকার স্টিকার লাগানো মোটরসাইকেল চালিয়ে ইলিয়াস শেখ সেখান দিয়ে যাওয়ার সময় ইউএনও তাকে থামিয়ে পরিচয় জানতে চান।

ইলিয়াস শেখ সাংবাদিক বলে নিজের পরিচয় দিলে ইউএনও বেধড়ক মারধর করেন। ইউএনও’র নির্দেশে তিন পুলিশ সদস্য ও এক আনসার সদস্য ওই যুবককে এলোপাথাড়ি পেটাতে থাকেন। ইউএনও নিজেও কিল-ঘুষি ও লাথি মারেন।

এমন নির্যাতন দেখে স্থানীয়রা উত্তেজিত হয়ে ইউএনও’র বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখানো শুরু করেন। তারা ইউএনওকে সেখানে প্রায় আধা ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন।

পরে মহিপুর থানা পুলিশ ও কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ অবরুদ্ধ ইউএনওকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। রাত ৯টার দিকে পুলিশ উত্তেজিত জনতাকে মাইকিং করে সরিয়ে দেওয়ার পর পরিস্থিতি শান্ত হয়।

এসময় কুয়াকাটা পৌর মেয়র আনোয়ার হাওলাদার, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র আ. বারেক মোল্লাসহ পৌর পরিষদের কাউন্সিলররা পুলিশের পাশাপাশি বিক্ষুব্ধ জনতাকে শান্ত করার চেষ্টা করেন।

স্থানীয়রা ইলিয়াসকে উদ্ধার করে কুয়াকাটা ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করেন এবং সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাতেই তাকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে পাঠানো হয়।

শেবাচিমে চিকিৎসাধীন ইলিয়াস শেখ বলেন, ‘আমি মোটরসাইকেল চালিয়ে কুয়াকাটা চৌরাস্তায় এলে ইউএনও সাহেব আমাকে থামিয়ে পরিচয় জানতে চান। পরিচয় দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মোটরসাইকেল থেকে আমাকে টেনে নামিয়ে মারধর করেন।’

মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উত্তেজিত জনতাকে সরে যেতে অনুরোধ করলে তারা ফিরে যান। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও নিয়ন্ত্রণে রয়েছেন।’

ইউএনও আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদুল হক বলেন, ‘চলমান করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার ঘোষিত কঠোর নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরি করতে গেলে ইলিয়াস শেখ বাধা প্রদানসহ আমাকে লাঞ্ছিত করেন এবং গাড়িসহ আমাকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে।’

Comments

The Daily Star  | English
Khaleda Zia calls for unity

‘Seize the moment to anchor democracy’

Urging people to remain united, BNP Chairperson Khaleda Zia has said the country must quickly seize the opportunity to institutionalise the democratic system.

4h ago