মহামারিতে বিধ্বস্ত দরিদ্র জনগোষ্ঠী

যেহেতু দরিদ্র এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠিও বৈষম্যহীনভাবে আক্রান্ত হচ্ছে সেহেতু এ সংশয় কখনোই ছিল না যে কোভিড-১৯ মহামারী দেশের অর্থনৈতিক বৈষম্যকেই আরও প্রকট করবে। গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত নতুন এক জরিপের ফলে জানা গেছে, সমস্যার শেষ এখানেই নয়, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর দুর্দশা কমানোর জন্য যে সরকারি সহায়তা প্যাকেজ ছিল, তার বেশিরভাগই প্রাপকের হাতে পৌঁছায়নি। এই সমীক্ষার ফলগুলো এ সংক্রান্ত আগের সমীক্ষাগুলোতে পাওয়া তথ্যের সাথে মিলে যায়। আরও গুরুত্বপূর্ণ হলো চর, হাওর, উপকূলীয় এবং বস্তি অঞ্চল, দলিত, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠি, প্রতিবন্ধী, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা এবং দেশে ফিরে আসা প্রবাসী কর্মীদের মতো ১০টি প্রান্তিক জনগোষ্ঠির তথ্যও সেখানে আছে। জরিপে আমরা দেখতে পাচ্ছি, সরকারি সহায়তার প্রতিশ্রুতি থাকা সত্ত্বেও কিভাবে মানুষকে আয় কমে যাওয়ার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে হয়েছে, কিভাবে খাবারের পরিমাণ কমাতে হয়েছে, জমানো অর্থ খরচ করতে হয়েছে এবং মহামারিজনিত মন্দার সাথে মানিয়ে নিতে ঋণ করতে হয়েছে।

যেহেতু দরিদ্র এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠিও বৈষম্যহীনভাবে আক্রান্ত হচ্ছে সেহেতু এ সংশয় কখনোই ছিল না যে কোভিড-১৯ মহামারী দেশের অর্থনৈতিক বৈষম্যকেই আরও প্রকট করবে। গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত নতুন এক জরিপের ফলে জানা গেছে, সমস্যার শেষ এখানেই নয়, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর দুর্দশা কমানোর জন্য যে সরকারি সহায়তা প্যাকেজ ছিল, তার বেশিরভাগই প্রাপকের হাতে পৌঁছায়নি। এই সমীক্ষার ফলগুলো এ সংক্রান্ত আগের সমীক্ষাগুলোতে পাওয়া তথ্যের সাথে মিলে যায়। আরও গুরুত্বপূর্ণ হলো চর, হাওর, উপকূলীয় এবং বস্তি অঞ্চল, দলিত, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠি, প্রতিবন্ধী, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা এবং দেশে ফিরে আসা প্রবাসী কর্মীদের মতো ১০টি প্রান্তিক জনগোষ্ঠির তথ্যও সেখানে আছে। জরিপে আমরা দেখতে পাচ্ছি, সরকারি সহায়তার প্রতিশ্রুতি থাকা সত্ত্বেও কিভাবে মানুষকে আয় কমে যাওয়ার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে হয়েছে, কিভাবে খাবারের পরিমাণ কমাতে হয়েছে, জমানো অর্থ খরচ করতে হয়েছে এবং মহামারিজনিত মন্দার সাথে মানিয়ে নিতে ঋণ করতে হয়েছে।

যেমন, সমীক্ষার ফলে দেখা গেছে, জরিপে অংশ নেওয়া প্রান্তিক পরিবারগুলোর মাত্র ৩৭ শতাংশ সরকারি সহায়তা পেয়েছে। এতে আমরা আরও দেখেছি ৭৯ শতাংশ পরিবার কোভিড-১৯ মহামারির সময়ে অভাবে পড়েছে। তাদের মধ্যে মাত্র সাড়ে ২১ শতাংশ পরিবার, অর্থাৎ মোটামুটি প্রতি পাঁচটি পরিবারের মাত্র একটি নিজেদের আগের আর্থিক অবস্থানে ফিরতে পেরেছে, যাতে সময় লেগেছে গড়ে পাঁচ মাসের মতো। এজন্য বাকি সাড়ে ৭৮ শতাংশ পরিবারের এজন্য সময় লাগবে গড়ে ১৩ মাসের মতো। প্রতি পাঁচটি পরিবারের চারটি পরিবার বাধ্য হয়েছে খাবারের খরচ কমিয়ে আনতে আর শতকরা ৬৪ দশমিক পাঁচ শতাংশ পরিবার অন্যান্য খরচ কমিয়েছে। সমীক্ষায় আরও জানা গিয়েছে যে মূলত গত বছরের এপ্রিল থেকে মে মাসের মধ্যে ২০ দশমিক আট শতাংশ পরিবারকে তাদের জমানো টাকা খরচ করতে হয়েছে আর শতকরা ৪৭ দশমিক নয় শতাংশ পরিবার গেল বছল এপ্রিল এবং মে মাসে ঋণ করতে বাধ্য হয়েছে। এছাড়াও ৭০ শতাংশ পরিবারে অন্তত একজন মানুষ চাকরি হারিয়েছেন কিংবা ব্যবসা গুটিয়ে ফেলতে বাধ্য হয়েছেন।

এই পরিসংখ্যান খুবই উদ্বেগজনক কিন্তু শুরু থেকেই মহামারি পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের ধারাবাহিক ব্যর্থতার কথা মাথায় রাখলে এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। দরিদ্র এবং প্রান্তিকেরা শুধু ভয়াবহ আর্থিক সংকটেই পড়েননি, তারা তাদের সামান্য সঞ্চয়টুকুও শেষ করে ফেলেছেন এবং এখন ঋণচক্রের এক দুঃসহ ও দীর্ঘ লড়াই শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সম্প্রতি চালু হওয়া অপরিকল্পিত লকডাউন তাদের পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে তুলবে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মহামারি চলাকালীন দরিদ্রদের কল্যাণে সরকারি কৌশল নির্ধারণের বিষয়টি ফের ভাববার প্রয়োজন আছে। সরকারের উচিত, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য নতুন করে আর্থিক প্রণোদনা এবং খাদ্য সহায়তা প্রকল্প শুরু করা এবং সে সহায়তা যেন সঠিক মানুষের কাছে পৌঁছায় সেটি নিশ্চিত করা। উচিত হবে, আসন্ন বাজেটেও সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের জন্য নির্দিষ্ট ও বর্ধিত বরাদ্দের পরিকল্পনা ঠিক করে রাখা। বিশেষজ্ঞরা পরিস্থিতির প্রতিকারে স্থানীয় প্রশাসন ও এনজিওগুলোকে সাথে নিয়ে একটি মধ্যমেয়াদী জাতীয় পরিকল্পনার পরামর্শ দিয়েছেন। গতানুগতিক চিন্তাধারা আগে কোনো কাজে আসেনি এবং এবারো আসবে না সেটি কর্তৃপক্ষের বোঝা দরকার।

Comments

The Daily Star  | English

How Hasina’s flight was kept off radar

Zgitalyma Islam and Partha Pratim Bhattacharjee.When the air force transporter plane carrying Sheikh Hasina left Dhaka on August 5, it took off as a training flight and turned off its transponders to blur its flightpath and location..The transponders, which transmit location, heading

1h ago