তিমির মৃত্যু বড় জাহাজের আঘাতে, ধারণা বিশেষজ্ঞদের
কক্সবাজারের সৈকতে ভেসে আসা তিমি দুটোর মৃত্যু বাংলাদেশের সমুদ্রের এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোনের বাইরে চলাচলরত বড় জাহাজের আঘাতে হয়েছে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তিমির দুটোর গায়ে বড় আকারে ক্ষত দেখে তারা এ ধারণা করছেন।
তিমি দুটোর পাকস্থলীতে কোনো ধরনের প্লাস্টিকের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি বলে বাংলাদেশ সমুদ্রবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে জানান।
তিনি বলেন, ‘তিমির শরীরে আঘাতের চিহ্ন আছে। তাদের পাকস্থলীতে আমরা কোনো ধরনের প্লাস্টিক পাইনি। যেহেতু পাকস্থলী আর ইনটেসটাইন (নাড়িভুঁড়ি) পচে গেছে, আমরা এগুলোর নমুনা উচ্চতর পরীক্ষার জন্য চট্টগ্রামের ভেটেরিনারি অ্যানিমেল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে পাঠিয়েছি।’
গত শুক্রবার ও শনিবার পরপর দুটো বৃহৎ আকারের ব্রিডস হোয়েল হিমছড়ির সমুদ্র সৈকতে ভেসে আসে। এর আগে, ১৯৯০ সালে একটি তিমি কক্সবাজারের লাবনী পয়েন্টে ভেসে এসেছিল।
বাংলাদেশ সামুদ্রিক মৎস্য ও প্রযুক্তি কেন্দ্র, কক্সবাজারের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শফিকুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘শনিবার ভেসে আসা তিমিটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৪৮ ফুট। এর ওজন প্রায় দশ টনের কাছাকাছি।’
এ তিমির পিঠের দিকে ছয় ফুট দৈর্ঘ্যের একটা বড় ক্ষত আছে, যা বড় জাহাজের প্রপেলারের আঘাতে হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা তার।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সমুদ্রের এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোনের বাইরে যে বড় জাহাজগুলো চলাচল করে, সেগুলোর আঘাতে এ ধরনের ক্ষত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। আমরা ধারণা করছি, এরকম আরও আঘাতপ্রাপ্ত তিমি আগামী কয়েকদিনের মধ্যে সৈকতে ভেসে আসতে পারে, কারণ ব্রিডস হোয়েল দল বেঁধে চলতে পছন্দ করে।’
শনিবার ভেসে আসা তিমিটি মধ্যবয়সী চিহ্নিত করে তিনি বলেন, ‘এ প্রজাতির তিমিগুলো প্রায় ২৯ মিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। এর দৈর্ঘ্য ৪৮ ফুট। সে হিসেবে এটি মধ্যবয়সী তিমি।’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরিন সায়েন্স ডিপার্টমেন্টের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ নুরুল আজিম শিকদার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘হয়তো দূষণ নতুবা বড় কোনো জাহাজের আঘাত, এ দুটোর একটিতে এসব তিমি মারা যাচ্ছে।’
‘এসব তিমির মৃত্যুর সুনির্দিষ্ট কারণ বের করতে আমাদের সক্ষমতা আরও বাড়াতে হবে। নতুবা আমরা বুঝতে পারব না, আমাদের সমুদ্রসীমার ভেতরে ও বাইরে কারা কী করছে,’ বলেন তিনি।
আরও পড়ুন:
Comments