সংরক্ষিত বনে আগুন ও গাছ কাটার প্রতিবাদে জাবিতে মানববন্ধন
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সংরক্ষিত বনে আগুন ও বোটানি বিভাগের উদ্যোগে গাছ কাটার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একাংশ।
আজ রবিবার দুপুর একটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।
এ সময় আন্দোলনকারীরা দাবি করেন, ‘নিয়ম লঙ্ঘন’ করে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের আওতাধীন বোটানিক্যাল গার্ডেনের ভিতরে ছয় থেকে সাতটি মেহগনি গাছ কাটা হয়েছে।
এছাড়া, ক্যাম্পাসের সংরক্ষিত বনাঞ্চলসহ বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক আগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তারা।
পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জামালউদ্দিন রুনু বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন লকডাউনের মধ্যে ফাঁকা ক্যাম্পাসের সুযোগ নিয়ে বনভূমি উজাড়ে ব্যস্ত। মাঝে-মাঝেই ক্যাম্পাসে আগুন লাগিয়ে আগাছা পরিষ্কার করতে দেখা যায় কর্মচারীদের। এই ধ্বংসাত্মক পরিকল্পনায় যুক্ত আছে ক্যাম্পাসের বহিরাগত কিছু অসাধু শিক্ষক। তারা জাহাঙ্গীরনগরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ধ্বংস করতে সবসময় তৎপর।’
জাবি সংসদ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল রনি বলেন, ‘আমরা শুনেছি দেশীয় গাছ কেটে এখানে বিদেশি ফল ড্রাগন চাষের প্রকল্প নিয়েছে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ। গাছ কেটে এই প্রকল্প করা একান্তই নিষ্প্রয়োজন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বিভাগ যেমন খুশি তেমন করে তো বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট করতে পারে না। অচিরেই এ সমস্ত বিবেচনাহীন কাজ বন্ধ করতে হবে। সামগ্রিক পরিকল্পনা অনুযায়ী সব কাজ হতে হবে।’
উদ্ভিদ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মো. নুহু আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত নিয়ম অনুসরণ করেই বোটানিক্যাল গার্ডেনে কিছু গাছ কাটা হয়েছে। কোনো লুকোচুরি করা হয় নি। বাগানে কিছু একাডেমিক এক্সপেরিমেন্ট পরিচালনার জন্য নার্সারি করতে হবে। বড় আকারের গাছ এখানে থাকলে ছায়া তৈরি করবে। এতে গবেষণা বিঘ্নিত হবে।’
‘আমরা এখানে গবেষণার জন্য গ্রিনহাউজ শেড তৈরি করব। ভবিষ্যতে যাতে এখানে কমপ্লিট (পূর্ণাঙ্গ) বোটানিক্যাল গার্ডেন তৈরি করা যায়। আর কিছু নতুন ধরনের গাছ লাগানোর পরিকল্পনা আছে,’ বলেন অধ্যাপক আলম।
মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন- বাংলা বিভাগের অধ্যাপক তারেক রেজা, অধ্যাপক শামীমা সুলতানা এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক আবু সাইদ, সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি দীপঙ্কর চক্রবর্তীসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
এর আগে, গত বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংরক্ষিত বনে আগুন লেগে প্রায় ১০-১৫ একর বনাঞ্চল পুড়ে যায়। সাভারের ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিটের প্রায় ঘণ্টাখানেকের প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে, কী কারণে আগুন লেগেছে তা এখনো খুঁজে বের করতে পারেনি পারেন বিশ্ববিদ্যালয় এস্টেট অফিস। কোনো ধরনের তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়নি।
Comments