২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ফলে ত্রুটির অভিযোগ
২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার প্রকাশিত ফলে ত্রুটির অভিযোগ তুলেছেন পরীক্ষার্থীদের একটি অংশ। আজ রবিবার দুপুরে পুনরায় ফল পুর্নমূল্যায়নের জন্য স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে একটি স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন তারা।
গত ২ এপ্রিল সারা দেশে ১০০ নম্বরের এমসিকিউ প্রশ্নে একযোগে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। গত ৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় ফল প্রকাশ করা হয়। প্রকাশিত ফলে অসংগতির অভিযোগ তুলেছেন পরীক্ষার্থীদের একাংশ।
তারা বলছেন, পরীক্ষা শেষে পাঠ্যবইয়ের সঙ্গে প্রশ্নের উত্তর মিলিয়ে যে নম্বর প্রত্যাশা করেছিলেন, প্রকাশিত ফলাফলের সঙ্গে সেটির ব্যবধান অনেক। তাই প্রকাশিত ফলাফল স্থগিত করে পুনরায় ফলাফল ও মেধাক্রম প্রকাশ করার দাবি জানান তারা। পরীক্ষার ফলে অসংগতির কথা জানান ১ হাজার ৩২৩ জন অভিযোগকারী। তাদের তৈরিকৃত একটি সার্ভে ডেটাশিট থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
চার দফা দাবিতে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেনকে আজ স্মারকলিপি দেন পরীক্ষার্থীরা। তাদের দাবিগুলো হলো- মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রতিটি সেট প্রশ্নের পুনঃযাচাই করে প্রতিটি উত্তরপত্র পুনরায় স্বচ্ছতার সঙ্গে যাচাই করতে হবে, যে সমাধান দিয়ে উত্তরপত্র মূল্যায়ন করা হয়েছে, তার সাথে অভিযোগকারীদের মধ্য থেকে ১০০ জনের উত্তরপত্র একজন নিরপেক্ষ প্রতিনিধির প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে স্বহস্তে যাচাই করতে হবে, পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের সমাধানের ব্যাখ্যাসহ পুর্ণাঙ্গরূপে প্রশ্নপত্রের উত্তর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে এবং ইতোমধ্যে যে ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে তা স্থগিত করে পুনরায় ফলাফল ও মেধাক্রম প্রকাশ করতে হবে।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, মেডিকেলের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার এক দিন পরে ফলাফল প্রকাশ করা হয় এবং এই ফলাফলে দেখা দেয় বড় রকমের অসংগতি। যেখানে একজন পরীক্ষার্থীর ৭০-৭৫ নম্বর পাওয়ার কথা ছিল সেখানে ফল আসে ৬০-৬৫ নম্বর। এমনকি কোথাও আরও কম। অর্থাৎ প্রায় ১০-১৫ নম্বরের অসংগতি। এটা শুধু হাতে গোনা কয়েকজন পরীক্ষার্থীদের সঙ্গেই ঘটেনি। বরং প্রায় সহস্রাধিক পরীক্ষার্থী এই অসংগতির শিকার। আর এর মধ্যে সিংহভাগই বিগত শিক্ষাবর্ষের পরীক্ষার্থী।
এতে আরও উল্লেখ করা হয়, নিয়ম অনুযায়ী কোথাও কোনও মেডিকেলে ভর্তি থাকা অবস্থায় কেউ যদি দ্বিতীয় বার ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে, তাহলে তার ৭.৫ নম্বর কর্তন হবার কথা। কিন্তু অনেকের ক্ষেত্রেই তা ঘটেনি। শুধু ৫ নম্বর কর্তন হয়েছে এবং ২ দশমিক ৫ নম্বর বেশি দিয়ে মেধাক্রম এসেছে। এই অসংগতির কারণে যোগ্যরা বঞ্চিত হয়েছে।
নোয়াখালী আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন ঢাকা কলেজ থেকে পাস করা এক শিক্ষার্থী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই শিক্ষার্থী জানান, তিনি নিজের ফল নিয়ে সন্তুষ্ট নন। তাই আগামী ২০ এপ্রিল সে ফল পুনঃনিরীক্ষণের জন্য আবেদন করবেন।
ফল পুর্নমূল্যায়নের আন্দোলনের সমন্বয়কারী এসএম রাসেল সিদ্দিকী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, অনেক শিক্ষার্থী ফলাফলে অসংগতি পেয়েছে। তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়েছি। তিনি বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবেন বলে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। ফল পুর্নমূল্যায়নের ধাপ সম্পন্ন হলে পরবর্তীতে প্রয়োজনে হাইকোর্টে রিট করা হবে।
আরও পড়ুন-
মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে হাজারো মানুষ
Comments