সালথায় সহিংসতা: এসিল্যান্ডের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পায়নি তদন্ত কমিটি

সালথার সহকারী কমিশনারের (ভূমি) গাড়ি থেকে লোক নেমে মারধর করেছে এমন অভিযোগের সত্যতা পায়নি জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গঠিত তদন্ত কমিটি।
20210406_102929.jpg
সালথা উপজেলা কমপ্লেক্সের ভেতরে এবং ইউএনও ও এসিল্যান্ডের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়াও পুড়িয়ে দেওয়া হয় পুলিশের দুটি মোটরসাইকেল। ছবি: সংগৃহীত

সালথার সহকারী কমিশনারের (ভূমি) গাড়ি থেকে লোক নেমে মারধর করেছে এমন অভিযোগের সত্যতা পায়নি জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গঠিত তদন্ত কমিটি।

ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় গত ৫ এপ্রিল সোমবার রাতে সহিংস তাণ্ডবের ঘটনা ঘটে। অভিযোগ ছিল, ওইদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের ফুকরা বাজারে সালথার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মারুফা সুলতানা খানের গাড়ি থেকে কয়েকজন লোক নেমে বাজারের দুই তিন জন মানুষকে পেটানোয় সহিংস তাণ্ডবের সৃষ্টি হয়।

কী কারণে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে, এ বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ৬ এপ্রিল ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তাসলিমা আলীকে আহ্বায়ক করে ছয় সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটিকে আগামী তিন কর্ম দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।

কমিটি আজ রোববার প্রতিবেদন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকারের হাতে তুলে দেয়।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, ““এসিল্যান্ড এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে মাজা ভেঙে দিয়েছেন”, “একজন হুজুরকে পুলিশ আটক করেছে”, “পুলিশের গুলিতে চার-পাঁচ জন নিহত হয়েছেন” এ জাতীয় নানা ধরনের গুজব রটিয়ে পরিকল্পিতভাবে সালথায় ওই দিন সহিংস তাণ্ডব সৃষ্টি করা হয়েছে। এ কথাগুলো তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। তবে এ তাণ্ডবের পেছনে কোন কোন শক্তি, কী কী উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করেছে, তা পুলিশি তদন্তে বের হয়ে আসবে।”

জেলা প্রশাসক বলেন, ‘তবে “সহকারী কমিশনার (ভূমি) এক বৃদ্ধ ব্যক্তিকে পিটিয়ে তার মাজা ভেঙ্গে দিয়েছেন’ এ গুজবের কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি।’

তদন্ত প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘সহকারী কমিশনার (ভূমি) ওই বাজারে গাড়ি থেকেই নামেননি। এমনকি তার গাড়ি থেকে অন্য কেউ নেমেও কোনো দোকানদারকে পিটুনি দেয়নি।’

অতুল সরকার আরও বলেন, ‘সহকারী কমিশনারের (ভূমি) ভূমিকার বিষয়টি আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে কঠিনভাবে তদন্ত করে দেখেছি। তাকে (সহকারী কমিশনার) অনেক জেরাও করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘ওই তদন্ত কমিটির পাশাপাশি প্রশাসনিক একটি তদন্ত কমিটিও সহকারী কমিশনারের (ভূমি) ভূমিকা নিয়ে তদন্ত করেছে। সে কমিটিতে আন্তর্জাতিক মানের একটি এনজিওর একজন প্রতিনিধিও ছিলেন। সে প্রতিবেদনেও এসিল্যান্ডের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি।’

গত ৬ এপ্রিল সালথায় সহিংস তাণ্ডবের ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতি পরিমাপের জন্য আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ছয় সদস্যবিশিষ্ট এ তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আসলাম মোল্লা। আসলাম মোল্লাও এ সংক্রান্ত তদন্ত প্রতিবেদন জেলা প্রশাসকের কাছে জমা দিয়েছেন। ওই প্রতিবেদনে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় তিন কোটি টাকা উল্লেখ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৫ এপ্রিল রাতে গুজবকে কেন্দ্র করে ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় ব্যাপক সহিংস তাণ্ডব চলে। এ ঘটনায় পুলিশের গুলিতে দুই জন নিহত হন। পরবর্তীতে এ ঘটনায় পাঁচটি মামরা দায়ের করা হয়। এসব মামলায় ২৬১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও চার হাজার ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।

আরও পড়ুন:

সালথায় সহিংসতা: অজ্ঞাতনামা ৪ হাজার আসামি

Comments

The Daily Star  | English

Teesta floods bury arable land in sand, leaving farmers devastated

40 unions across 13 upazilas in Lalmonirhat, Kurigram, Rangpur, Gaibandha, and Nilphamari are part of the Teesta shoal region

1h ago