মরদেহের নমুনা সংগ্রহে ভুল, সঠিক ডিএনএ রিপোর্ট না পাওয়ার অভিযোগ পুলিশের
সিরাজগঞ্জে অজ্ঞাতপরিচয়ের একটি মরদেহ উদ্ধারের সময় পুলিশ পুরুষ বলে চিহ্নিত করলেও ডিএনএ পরীক্ষার প্রতিবেদনে এসেছে মরদেহটি নারীর।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে সংগ্রহকৃত নমুনা এলোমেলো হয়ে এ অবস্থা তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ পুলিশের।
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক কুমার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘গত বছর ১১ জুলাই সারবিল এলাকা থেকে একটি পুরুষের মরদেহ অর্ধগলিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। কিন্তু, ডিএনএ রিপোর্টে দেখা যায় মরদেহটি নারীর। আবারও ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করতে না পারায় শেষ পর্যন্ত আদালতের অনুমতি নিয়ে কবর থেকে মরদেহের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়।’
সিরাজগঞ্জ সদর থানা পুলিশ ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে একটি অর্ধগলিত অজ্ঞাতপরিচয় মরদেহ উদ্ধার করে। মরদেহের সঙ্গে থাকা পোশাক দেখে তা পুরুষের বলে চিহ্নিত করা হয়। আইনি প্রক্রিয়ায় মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে।
পরিচয় শনাক্তের জন্য মরদেহের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে সিআইডির ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়। ডিএনএ রিপোর্টে আসে মরদেহটি একজন নারীর। আবারও সেই নমুনা দিয়ে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য পাঠানো হলেও একই রিপোর্ট আসে। এতে বিপাকে পরে পুলিশ।
সিরাজগঞ্জ সদর থানা, উল্লাপাড়া থানা ও বেলকুচি থানার একাধিক অজ্ঞাতপরিচয় মরদেহের ডিএনএ পরীক্ষার ক্ষেত্রে এ ধরণের ঘটনা ঘটেছে।
সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার হাসিবুল আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্তের পর দেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে তা সংরক্ষণ করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে সংগ্রহকৃত নমুনা এলোমেলো হয়ে যাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে।’
সঠিকভাবে ডিএনএ রিপোর্ট না পাওয়ায় অজ্ঞাতপরিচয় মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় মামলাগুলোর তদন্ত কার্যক্রম ঝুলে আছে। একইসঙ্গে অজ্ঞাতপরিচয় মরদেহের পরিচয় শনাক্তকরণেও বাড়ছে দীর্ঘসূত্রিতা।
এ প্রসঙ্গে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. সাইফুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘হাসপাতালে দক্ষ ডোম না থাকায় মরদেহের ময়নাতদন্তে ও নমুনা সংগ্রহে ভোগান্তি পোহাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।’
পুলিশের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে তদন্ত করছে জানিয়ে ডা. সাইফুল বলেন, ‘আমরা কঠোরভাবে নির্দেশনা দিয়েছি যেন নমুনা সংগ্রহ ও সংরক্ষণের কাজ হাসপাতালের দায়িত্বশীল কর্মকর্তার সামনে করা হয়। কোনো ভুলের ঘটনা আর যেন না ঘটে।’
Comments