শ্রদ্ধাঞ্জলি

একজন আজন্ম শিকড় সন্ধানী গবেষক শামসুজ্জামান খান

তার নাম শুনলে প্রথমেই যে কথা মাথায় আসে আমাদের তা হলো লোকজ সংস্কৃতি, পল্লী সাহিত্য, বাঙালি সংস্কৃতি এমন অজস্র বিষয়। যেখানে তিনি গৎবাঁধা নিয়মের বাইরে গিয়ে নিজস্ব ধাঁচে তুলে এনেছেন বাংলার অমৃত রত্নভাণ্ডার। একটি দেশের একটি জাতির সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ হলো তার নিজস্ব সংস্কৃতি, আচার, ঐতিহ্য, লোকজ উৎসব, জীবনধারা, কৃষ্টি, সাংস্কৃতিক পরিক্রমা। একজন লোকজ গবেষক হিসেবে শামসুজ্জামান খানের যে সৃষ্টি আর মাটির সঙ্গে মিশে গ্রাম বাংলার পথ, প্রান্তর, জনপদ, জনমানুষের সঙ্গে মিশে যে কর্মব্যাপ্তি তা নিঃসন্দেহে অতুলনীয়। বাংলাদেশ তো বটেই বাংলা সাহিত্যেও তা হাতেগোনা কয়েকজন মাত্র। বাংলার মাটি, বাংলার রূপ, বাংলার সাংস্কৃতিক ইতিহাস যে কতখানি ব্যাপ্তিময় তা তার গবেষণা, লেখায়, বক্তব্যে বোঝা যেত।
শামসুজ্জামান খান। ছবি: সংগৃহীত

তার নাম শুনলে প্রথমেই যে কথা মাথায় আসে আমাদের তা হলো লোকজ সংস্কৃতি, পল্লী সাহিত্য, বাঙালি সংস্কৃতি এমন অজস্র বিষয়। যেখানে তিনি গৎবাঁধা নিয়মের বাইরে গিয়ে নিজস্ব ধাঁচে তুলে এনেছেন বাংলার অমৃত রত্নভাণ্ডার। একটি দেশের একটি জাতির সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ হলো তার নিজস্ব সংস্কৃতি, আচার, ঐতিহ্য, লোকজ উৎসব, জীবনধারা, কৃষ্টি, সাংস্কৃতিক পরিক্রমা। একজন লোকজ গবেষক হিসেবে শামসুজ্জামান খানের যে সৃষ্টি আর মাটির সঙ্গে মিশে গ্রাম বাংলার পথ, প্রান্তর, জনপদ, জনমানুষের সঙ্গে মিশে যে কর্মব্যাপ্তি তা নিঃসন্দেহে অতুলনীয়। বাংলাদেশ তো বটেই বাংলা সাহিত্যেও তা হাতেগোনা কয়েকজন মাত্র। বাংলার মাটি, বাংলার রূপ, বাংলার সাংস্কৃতিক ইতিহাস যে কতখানি ব্যাপ্তিময় তা তার গবেষণা, লেখায়, বক্তব্যে বোঝা যেত।

প্রখ্যাত লোক সাহিত্য বিশারদ ও গবেষক অধ্যাপক মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিনকে নিজের প্রথম ফোকলার গুরু হিসেবে মানতেন শামসুজ্জামান খান। মূলত অধ্যাপক মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিনের মাধ্যমেই লোকসাহিত্য সংগ্রহ ও লোকজ সংস্কৃতি তুলে ধরার হাতেখড়ি হয়েছিল শামসুজ্জামান খানের। কেবল ফোকলোরই নয়, শামসুজ্জামান খান কাজ করেছেন বাংলার সংস্কৃতি, উৎসব, ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন, প্রখ্যাত সব সাহিত্যিকদের জীবন ও কর্ম নিয়ে। 

ড. শামসুজ্জামান খানের জন্ম মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার চারিগ্রামে। তার বাবা  এমআর খান কলকাতার সরকারি বাড়িতে অনুবাদক হিসেবে কাজ করতেন। তার প্রপিতামহ এলহাদাদ খান এবং তার ভাই আদালত খান ঔপনিবেশিক শাসনামলে  খ্যাতিমান বুদ্ধিজীবী ছিলেন। এলহাদাদ খান ছিলেন সাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেনের বন্ধু। আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসুর বাবা ভগবান চন্দ্র বসু ছিলেন তার সহচর। আর আদালত খান ছিলেন প্রখ্যাত অনুবাদক এবং শিক্ষাবিদ। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের লেখা "বেতাল পঞ্চ বিংশতি"  ও তুলসী দাস রচিত রামায়ণ ইংরেজিতে অনুবাদ করেছিলেন তিনি। মাত্র দুই বছর বয়সে বাবাকে হারান শামসুজ্জামান খান।

তারপর তার মা এবং দাদির কাছেই তার বেড়ে ওঠা। স্কুলে পড়া অবস্থাতেই ভাষা আন্দোলনের মিছিলে তিনি ছিলেন। ভাষা শহীদ রফিকের শহীদ হওয়া তার কোমল মনে ভীষণ প্রভাব বিস্তার করেছিল। মূলত তখন থেকেই বাংলা ভাষা ও বাঙ্গালী  সংস্কৃতির প্রতি তার গভীর মমত্ববোধ ও আত্মপরিচয়ের টানের জন্ম হয়। তাইতো দৈনিক আজাদ পত্রিকার শিশুদের বিভাগ মুকুলের মহফিলে ১৯৫৭ সালে প্রকাশিত হয়েছিল ভাষা শহীদ রফিকের জীবন কেন্দ্রিক "লাল শার্ট" নামের  একটি গল্প। ওই গল্পটি ভীষণ প্রশংসিত হয়েছিল তখন।

বঙ্গবন্ধুকে পুষ্পমাল্য পরিয়ে দিচ্ছেন শামসুজ্জামান খান। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবস্থায় ষাটের দশকে স্বাধীকার আন্দোলনে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন তিনি। ছিলেন ঢাকা হল ছাত্র সংসদে ছাত্রলীগের সহ- সভাপতি প্রার্থীও। বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মণি ও প্রখ্যাত ছাত্রনেতা  সিরাজুল আলম খান ছিলেন তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু। ১৯৬৩ সালে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলনে তিনি ছিলেন নির্বাচন কমিশনার। এছাড়া তিনি ছাত্রলীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও সংগঠকও ছিলেন ছাত্রাবস্থায়।

১৯৬৩ এবং ১৯৬৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে যথাক্রমে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি তারপর একই বছর মুন্সিগঞ্জের হরগঙ্গা কলেজের বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দিলেন।

তখন মুন্সিগঞ্জের হরগঙ্গা কলেজ ছিল বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ হাতেগোনা কয়েকটি কলেজের মধ্যে একটি। কিন্তু এখানে এসে মন টিকলো না শামসুজ্জামান খানের।  একই বছর তিনি জগন্নাথ কলেজে সহকারী অধ্যাপক হিসাবে যোগ দিলেন। সেখানে চার বছর থেকে ১৯৬৮ সালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে গেলেন। তিনি ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে থাকার সময় শুরু হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধ।  মুক্তিযুদ্ধের সময় ৩ ডিসেম্বর ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ জন শিক্ষক, ছাত্র ও কর্মচারীর বিরুদ্ধে পাকিস্তান বিরোধিতা ও মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তার জন্য ময়মনসিংহ বিগ্রেড সদর দপ্তরের প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ খানের নির্দেশে শাস্তির পরোয়ানা জারি করে একটি তালিকা করেছিল হানাদারেরা। সেই তালিকায় শামসুজ্জামান খানের নামও ছিল।

ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক হিসেবে পাঁচ বছর থাকার পরে শামসুজ্জামান খান দেখলেন তিনি তার গবেষণায় পরিপূর্ণ সময় দিতে পারছেন না। এরপর তিনি ১৯৭৩ সালে যোগ দিলেন বাংলা একাডেমিতে। বাংলা একাডেমিতে আসার পর যেন প্রাণ ফিরে পেলেন শামসুজ্জামান খান। এখানেই তার পরিচয় হলো প্রখ্যাত লোকসাহিত্য বিশারদ ও গবেষক অধ্যাপক মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিনের সঙ্গে। এই কিংবদন্তি গবেষকের সংস্পর্শে এসেই যেন জীবনের নতুন এক গন্তব্যের দেখা পেলেন। দেখা পেলেন বাংলার এক অমিয় ভাণ্ডারের। বাংলার লোককথা, উৎসব, লোকজ সংস্কৃতি, পুঁথি, বাংলার ঐতিহ্যের সন্ধানে তাকে ঘুরে বেড়াতে হয়েছিল দিনের পর দিন। তিনি  যেন এক লোককথার ফেরিওয়ালা। বলতেন আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ কেন ছুটেছেন বাড়ি বাড়ি আমি কাজ করতে গিয়ে বুঝেছি। কেন পুঁথি সংগ্রহ করতে গিয়ে দিনের পর দিন এক বাড়িতেই ছুটেছেন, হিন্দুর বাড়িতে তাকে পুঁথি স্পর্শ করতেও দেয়া হয়নি, অথচ তিনি কেবল দেখে নকল করেছেন। এই বিষয়গুলো আমি কাজ করতে গিয়ে টের পেয়েছি। ঐতিহ্য সন্ধান, মাটি ও শেকড়ের প্রতি তীব্র আবেগ না থাকলে এই কাজ করা তার পক্ষে সম্ভব হতো না।" শামসুজ্জামান খান বলেছেন আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদকে নিয়ে, অথচ তিনিও যে এতোটা উঁচু ধাঁচের সংগ্রাহক ও লোকজ সংস্কৃতি বিশেষজ্ঞ তা তার লেখায়, চিন্তায়, সৃষ্টিতে প্রমাণ মেলে। তিনি যে একজন লোক দার্শনিক তাও প্রমাণ মেলে তার লেখায়। কেবল বাংলা নয় বিশ্বের নানা প্রান্তের লোকজ সংস্কৃতি, প্রত্নতত্ত্ব, ইতিহাস নিয়ে তার গভীর জ্ঞান ছিল।

তার সম্পর্কে তার শিক্ষক জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেছিলেন, ‘বিশ্বের নামিদামি ফোকলোরিস্টের মুখে আমি তার যে-প্রশংসা শুনেছি, তা আমাদের সকলের পক্ষেই শ্লাঘার যোগ্য। ইতিহাসে শামসুজ্জামানের আগ্রহ অকৃত্রিম। বাংলা সনের ইতিহাস-সম্পর্কিত তার রচনা কিংবা ভাষা আন্দোলনের শহিদদের জীবনকথা নিয়ে তার লেখা এ-প্রসঙ্গে স্মরণীয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা তাকে প্রণোদিত করেছে তার সম্পর্কে লিখতে এবং তার অসমাপ্ত আত্মজীবনী সম্পাদনা করতে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সে যেভাবে ধারণ করে এসেছে এবং প্রকাশ করে এসেছে তা বিশেষ প্রশংসার যোগ্য।’ মজার বিষয় হলো এই ছাত্র শিক্ষক দুজনেই একসঙ্গে বাংলা একাডেমির সভাপতি ও মহাপরিচালক ছিলেন। আবার দুজনেই ছিলেন বাংলা একাডেমির সভাপতি।

প্রখ্যাত লোকসাহিত্য বিশারদ ও গবেষক অধ্যাপক মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিনের সঙ্গে শামসুজ্জামান খান। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরেরও একসময় মহাপরিচালক ছিলেন তিনি, ছিলেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক। এতো উঁচু পদে কাজ করেও ছিলেন ভীষণ বন্ধুসুলভ। তরুণ সাহিত্যিক কবি ও গবেষকদের ভীষণ প্রশ্রয় দিতেন। তার কাছে গেলে তিনি নিজেই আগ্রহভরে জানতে চাইতেন তরুণদের সৃষ্টির কথা, ভাবনার কথা। বাংলা একাডেমিতে তিনি থাকাকালীন সময়ে নিজস্ব উদ্যোগেও ভাষা ও সংস্কৃতি নিয়ে তরুণ গবেষকদের উদার ভাবনার কথা বলেছেন, নিজস্ব মতামত তো দিতেনই, তরুণদের একনিষ্ঠ শ্রোতাও ছিলেন তিনি। তার সৃষ্টিসম্ভার ব্যাপক। বাংলার লোকজ সাহিত্য থেকে বাঙালির উৎসব, রাজনীতি থেকে সংস্কৃতি, রাষ্ট্রচিন্তা থেকে ঢাকাইয়া রসিকতা, লোকগল্প, শামসুর রাহমান- শহীদ কাদরী- সৈয়দ শামসুল হক স্মারক গ্রন্থ,  রবীন্দ্র সঙ্গীত থেকে বাংলার গণসংগীত, ধর্মচর্চা থেকে ফুটবল বিশ্বকাপ, গল্প, কবিতা, রূপকথা কোথায় নেই শামসুজ্জামান খান। কেবল তাই নয়, লিখেছেন বাঙালি মনীষীদের নিয়ে। যেমন আগেই বলেছি স্মারক গ্রন্থগুলো। এছাড়া মীর মশাররফ হোসেন, পল্লীকবি জসীম উদ্দীন, ভাষাবিদ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, শেরে বাংলা একে ফজলুল হক, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে তিনি যে জ্ঞানগর্ভ আলোচনা ও তাদের চিন্তার দূরদর্শিতা নিয়ে তিনি যেভাবে তুলে ধরেছেন তা অতুলনীয়।

তার সৃষ্টি ছিল সমস্ত ধারায়। এক কথায় নিঃসঙ্কোচে তাকে বলা যায় সব্যসাচী লেখক। এমন হেন কোন বিষয় নেই যে ধারায় তার জ্ঞানের পরিসীমা ছিল না।

এতোকিছুর বাইরে শামসুজ্জামান খানের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কাজ ছিল ৬৪ খণ্ডে বাংলাদেশের ৬৪ জেলার লোকজ সংস্কৃতি সম্পাদনা। যার শিরোনাম ছিল  ‘বাংলাদেশের লোকজ সংস্কৃতি গ্রন্থমালা’। তার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন ১১৪ খণ্ডে বাংলাদেশের ফোকলোর সংগ্রহমালা সম্পাদনা। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী ও কারাগারের রোজনামচা, আমার দেখা নয়াচীন সম্পাদনা ও প্রকাশের পেছনে তার ভূমিকা ছিল অসামান্য। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা গ্রন্থ দুটির ভূমিকায় কৃতজ্ঞচিত্তে সে কথা বারবার উল্লেখ করেছিলেন।

লোকজ সাহিত্য, পল্লী সাহিত্য, বাংলা ও বাঙালির পরিচয়কে পাঠকমহলের সামনে তুলে ধরে শামসুজ্জামান খান যেন নতুন করে আবিষ্কার করালেন আমাদের বিস্তৃত লোকজ সংস্কৃতি, সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ইতিহাসের সঙ্গে। লোকজ আর সাংস্কৃতিক ইতিহাসের সমৃদ্ধশালী ভাণ্ডারকে তিনি পরিচয় করালেন নতুন রূপে। যিনি আদি হতে অন্ত সম্পূর্ণ ধারায় ছিলেন শিকড়মুখী। তাইতো শামসুজ্জামান খান অনন্য, অসাধারণ। হয়তো দৈহিক প্রস্থান হয়েছে শামসুজ্জামান খানের কিন্তু আত্মিকভাবে নিজস্ব সৃষ্টির মাঝে শামসুজ্জামান খান চিরঞ্জীব থাকবেন অনন্তকাল।

আহমাদ ইশতিয়াক [email protected]

আরও পড়ুন-

সাহিত্যে আবুল মনসুর আহমেদ আজও প্রাসঙ্গিক

যুগের পর যুগ ধরে অবহেলার এক চূড়ান্ত নিদর্শন ভাষা শহীদ আবদুস সালাম

মেঘ ছাপিয়ে যাওয়া এক স্বপ্নবান স্থপতি ফজলুর রহমান খান

যার ওভারকোটের পকেট থেকে বেরিয়েছিল আধুনিক রুশ সাহিত্য আর সাহিত্যিকেরা

Comments