জীবিকা হারানোর শঙ্কায় পানপুঞ্জির ১৮ পরিবার
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের সাহেবটিলা পানপুঞ্জির পানগাছ কাটার অভিযোগ করেছেন স্থানীয় পুঞ্জিবাসীরা। এতে জীবিকা হারানোর শঙ্কায় পড়েছেন পানপুঞ্জির ১৮টি পরিবার।
তাদের অভিযোগ, গত মঙ্গলবার সামাজিক বনায়ন করতে বন বিভাগের লোকজন এসব গাছ কেটে ফেলেছেন। যদি বন বিভাগের কথা না মানা হয় তাহলে তাদেরর উচ্ছেদ হতে হবে।
পুঞ্জি প্রধান গ্রিনাল রংদি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সাহেবটিলা পুঞ্জিতে দীর্ঘদিন ধরে আমরা ১৮টি পরিবার থাকি। পান বিক্রি করে আমাদের সংসার চলে। গত মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে বন বিভাগের নলডরি বিটের ফরেস্টার জহিরুল ইসলাম লোকজন নিয়ে পান বাগানে ঢোকেন। এ সময় তারা ১৫০টি পানগাছ এবং ২০-২৫টি বনজ গাছ কেটে ফেলেন। বন বিভাগের কর্মকর্তারা পুঞ্জিতে গিয়ে সামাজিক বনায়নে উপকারভোগী হওয়ার কথা বলেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘এর আগে ১০ এপ্রিল বন বিভাগের কর্মকর্তারা একই কথা বলেন। তারা এটাও বলেন, যদি আমরা না মানি তাহলে উচ্ছেদ করা হবে।’
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে কুলাউড়ার নলডরি বিটের বিট অফিসার জহিরুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘পুঞ্জিতে কোনো গাছ কাটা হয়নি। ওই পুঞ্জির জমি বন বিভাগের। পুঞ্জিবাসী অবৈধভাবে দখল করে রেখেছেন।’
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)-এর ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক ফাদার যোসেফ গমেজ ওএমআই ও কুবরাজ আন্তপুঞ্জি উন্নয়ন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ফ্লোরা বাবলী তালাং বলেন, ‘পানজুম পরিদর্শন করে পান গাছ ও বনজ গাছ কাটা পেয়েছি।’
এ বিষয়ে কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিনয় ভূষণ রায় বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং বলেন, ‘পুঞ্জিবাসীসহ সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা, ভূমির অধিকার, মানবাধিকার সবকিছু দেখার দায়িত্ব সরকারের। এটা তাদের ঐতিহ্যগত ও প্রথাগত অধিকার। আর সাহেবটিলায় যা করা হয়েছে তা সম্পূর্ণভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন।’
Comments